রাজশাহীর হোটেলগুলোতে অস্বাস্থ্যকর উপকরণ দিয়ে তৈরি হচ্ছে নান রুটি, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে মানুষ

প্রকাশিত: ১:৩১ অপরাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০২০

রাজশাহীর হোটেলগুলোতে অস্বাস্থ্যকর উপকরণ দিয়ে তৈরি হচ্ছে নান রুটি, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে মানুষ
ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী : বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেই চোখে পড়ে রাজশাহী মহানগরীর রেস্টুরেন্টগুলোতে তরুণ-তরুণীসহ প্রায় সব বয়সী মানুষ বাটার নান রুটি দিয়ে গ্রিল বা শিক কাবাব খাচ্ছেন। মুখরোচক আর কারণে বর্তমানে এই খাবারটি রাজশাহী মহানগরীতে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অনেক মানুষকেই নান রুটি সাথে গ্রিল গরুর ভুনা মাংস শিক খেতে দেখা যায়। মুখরোচক হওয়াই ও দাম তুলনামূলক কম থাকায় এই খাবারটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কিন্তু প্রিয় এ খাবারটি কিভাবে তৈরি হচ্ছে কারা তৈরি করছে কি উপকরণ দিয়ে করছে তার খোঁজ রাখে না কেউ। গ্রাহকের চাহিদাকে পুঁজি করেই একশ্রেণীর অসাধু হোটেল ব্যবসায়ীরা এ খাবার তৈরি করছেন অস্বাস্থ্যকর উপকরণ দিয়ে। নান রুটি তৈরির প্রক্রিয়া ও ঘি মেশানোর প্রক্রিয়া দেখলে আর হয়তো খেতে চাইবে না কেউ। অনেকেই ছেড়ে দেবেন এই খাবারটি খাওয়া। সম্প্রতি খবর ২৪ ঘন্টার কাছে কিছু ক্রেতার অভিযোগের পর নগরীর বিভিন্ন হোটেল ঘুরে নান রুটিতে ঘি মিশানোর যে প্রক্রিয়া দেখা গেছে তা সত্যি ভোক্তাদের স্বাস্থ্যহানিকর। জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীর অধিকাংশ হোটেলগুলোতে বাটার নান তৈরি করা হয়। নগরবাসীর কাছে জনপ্রিয়তা পাওয়ায় এই খাবারটি তৈরিতে পিছিয়ে নেই কোন রেস্টুরেন্ট। সাধারণ থেকে শুরু করে নগরীর নামিদামি হোটেলগুলোতেও বাটার নান তৈরি হয়। বাটার নান তৈরি এক প্রকার শেষে ঘি মিশানো হয়। যদিও অভিযোগ রয়েছে, বাটার নান তৈরিতে নিম্নমানের ঘি মিশানো হয়। অনেক ক্রেতাই অভিযোগ করেন মেশালেও সেটি নিম্নমানের। তারা এটিতে নিম্নমানের ঘি কি আসল দেয় সেটি নিয়ে বিতর্কে না গেলেও যে বিষয়টি চোখে পড়ার মতো সেটি হচ্ছে কী প্রক্রিয়ায় তারা ঘি মেশায়। সরোজমিনে নগরীর অন্যতম প্রধান এলাকা সাহেব বাজারে অবস্থিত নিউ বিদুৎ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট গিয়ে দেখা যায়, দুজন কর্মচারী রং করা ব্রাশ দিয়ে নান রুটিতে ঘি মেশাচ্ছেন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। একের পর এক কর্মচারীরা প্রত্যেকটি নান রুটিতে মেশাচ্ছেন রং করা ব্রাশ দিয়ে ঘি। রং করা ব্রাশ দিয়ে ঘি মিশানো হলে সেটি কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত ? অস্বাস্থ্যকর উপকরণ দিয়ে অস্বাস্থ্যকর ঘি মিশানোর প্রক্রিয়া যেকোনো ক্রেতাই দেখলে আর খেতে চাইবেন না। এমন প্রক্রিয়া দেখে নিউ বিদ্যুৎ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট মালিকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এভাবে মেশালে কি সমস্যা এভাবে সহজ হয় তাই মেশানো হয়।  তবে তিনি বলেন এখানে কোন সমস্যা নেই। শুধু এই রেস্টুরেন্টে নয় নগরীর রেলগেট এলাকা লক্ষ্মীপুর সহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকার হোটেল গুলোতে একই প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়। রহিম নামের এক ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, এ প্রক্রিয়া দেখার পর খাবার আর রুচি নাই আমার।। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া। রুহি নামের এক নারী বলেন, জানিনা এভাবে কতদিন খেয়েছি। দোকানদারের সহজ হওয়ার জন্য যা খুশি করবে তা হয় না। প্রয়োজনে অন্য যেকোনো প্রক্রিয়া নেওয়া যেতে পারে। রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডাক্তার এনামুল হক এর সাথে যোগাযোগ করা হলে ও এ প্রক্রিয়ার কথা তাকে শোনালে তিনি বলেন, এভাবে কোন খাদ্য দ্রব্য অস্বাস্থ্যকর উপকরণ দিয়ে তৈরি করলে সেটি তে স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। রং করা ব্রাশ দিয়ে এমন করার কোন সুযোগ নেই। রাজশাহী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হাসান মারুফ বলেন, কথাটা যেন শুন্তেই কেমন লাগছে রং করা ব্রাশ দিয়ে নান রুটি তৈরি করার কোন সুযোগ নেই। খোঁজ নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest