ঢাকা ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৫২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৭, ২০২০
মো. ওমর ফারুক, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাসের কারনে দেশ লকডাউনে থাকায় আজ দশ-বারো দিন যাবৎ কামাই করতে পারিনা। ঘড়ে যা আছিল তা শেষ অইছে আরো দুই-তিন দিন আগে। মানষের বাড়ি হতে ধার করে কয়দিন চলুম জানিনা। হেইয়ার মধ্যে (তার মধ্যে) হঠাৎ বৈশাখী ঝড়ে ঘড়ের চাল উড়াইয়া লইয়া গেছে। এহন খাওন যোগার করমু না ঘড় ঠিক করমু আর ক্যামনেই বা ঠিক করমু তা জানিনা। আবার যদি বৃষ্টি আয় তয় ক্যামন করমু আল্লাহই জানে। বলতে বলতে চোখ মুছতে শুরু করলো পঁঞ্চাশ বছর বয়সী দুলাল মাতব্বর। তিনি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সলিমপুর গ্রামের মৃত্যু নুরু মাতব্বরের পুত্র। শনিবার শেষ বিকালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে ঘড় বাড়ি উড়িয়ে নেয়া মানুষগুলো এখন মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। একদিকে করোনা ভাইরাসের আতংকে পুরো দেশ লকডাউনে থাকায় দিনমজুর ও শ্রমিকরা রয়েছে বিপাকে। তদুপরি বৈশাখীর ছোবলে ঘড়-বাড়ি তছনছ হয়ে গিয়েছে। এযেনো মরার উপর খড়ার ঘাঁয়ের মত অবস্থা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সলিমপুর গ্রামে বেশ কিছু মানুষ তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অসহায় জীবন-যাপন করছে। দিনমজুর দুলাল মাতব্বরের মত আজিজ খাঁনের পুত্র হোসেন খাঁন, ঈমান গাজীর পুত্র আ: রব গাজী, কাঞ্চন গাজীর পুত্র আব্বাস গাজীসহ আলী আহম্মেদ খাঁন, হাবিব হাওলাদার, রফিক হাওলাদার, ফোরকান, শানু মিয়া, জব্বার প্যাদা ও আলম হাওলাদার তাদের পরিবার নিয়ে অসহায় দিন যাপন করছে। এদের মধ্যে অনেকেই দরিদ্র ভূমিহীন হিসাবে সলিমপুর বেড়ীবাধের পাশে সরকারী জায়গায় ঘড় তুলে বসবাস করছে। ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বার মোসা: রুমা বেগম জানান, এদের মধ্যে মাত্র ১ টি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া সম্ভব হয়েছে। অন্যরাও খুবই শোচনীয় অবস্থায় রয়েছে কিন্তু আমার যতদূর করার চেষ্টা করছি। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। নীলগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যানকে একটি লিষ্ট দিতে বলেছি। আমরা পুরো উপজেলা হতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের লিষ্ট করে সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করছি। ক্ষতিগ্রস্থ সবাইকেই পর্যায়ক্রমে সহায়তা প্রদান করা হবে। তিনি সমাজের সকল বিত্তবান ব্যক্তিদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান করেন।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST