ঢাকা ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৩০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০২০
রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহী মহানগরীতে বিনা অপরাধে প্রতিপক্ষের রামদার এলোপাড়ি কোপে পঙ্গু হওয়ার পথে বোয়ালিয়া থানাধীন শিরোইল মঠপুকুর এলাকার জাহিদুল ইসলামের ছেলে ফাহিম শাহরিয়ার (১৭)। সে রাজশাহীর মদিনাতুল উলুম কামিল মাদ্রার ৯ম শ্রেণীর ছাত্র। এ ঘটনায় বোয়ালিয়া থানায় মামলা করতে গেলে আসামীদের বাধা ও তার চিকিৎসা খরচ এবং কর্মসংস্থানের প্রস্তাবে এজাহার দায়ের হয়নি। কিন্ত চুক্তি অনুযায়ী ভুক্তভোগীকে এখনো কোন অর্থ দেয়া হয়নি। সমঝোতা ও চুক্তি নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার এসআই মাসুদ রানার মাধ্যমে হলেও তিনি তা
অস্বীকার করছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকীর সাথে দেখা করে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ ও ন্যায্য বিচার পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন। বর্তমানে মাদ্রাসা ছাত্র ফাহিম ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এখনো তার অস্ত্রপাচার হয়নি। শারীরিক অবস্থান দিন দিন আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
চিকিৎসাধীন ফাহিমের চাচা মাসুম বিল্লাহ অভিযোগ করে জানান, চলতি বছরের গত ১৭ অক্টোবর রাত পৌনে ৯টার দিকে ফাহিম খাবার পানি নিয়ে আসার জন্য বাড়ি থেকে মসজিদের টিউবওয়েলে যাচ্ছিলো। পথে মসজিদের পূর্বদিকের রাস্তায় পৌঁছালে নগরীর মোন্নাফের মোড় এলাকার সেন্টুর ছেলে পল্টু (২৬), শিরোইল মঠপুকুর এলাকার স্বাধীন সরকারের ছেলে বিশ্বজিৎ সরকার (৪১), শেখেরচক এলাকার সোমনাত (২৫), সাগরপাড়া এলাকার মানিকের ছেলে শুভ (১৯), শিরোইল মঠপুকুরের মৃত গোপালের ছেলে অজয় সরকার (৪৩) পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে
মারধর শুরু করে। কেন তাকে মারা হচ্ছে তা সে বুঝতেও পারেনি। এ সময় অজয় ও বিশ্বজিতের নের্তৃত্বে তাকে রামদা দিয়ে মাথা লক্ষ্য করে কোপ দেয়া হয়। কিন্ত ফাহিম তার কাছে থাকা কলস দিয়ে প্রতিহত করে। পরে আবার কোপ দিলে সেটি তার বাম হাঁটুর সামনের অংশে লেগে গুরুতর জখম হয়। স্থানীয় অনেক মানুষজন বিষয়টি দেখলেও প্রথমে ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি কিন্ত পরে সবাই জোটবদ্ধ হয়ে তাদের বাধা দিয়ে তাদের হাত থেকে ফাহিমকে উদ্ধার করে অটোরিক্সাযোগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসা চললেও সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিলো। পরে রামেক হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানে সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে তার শারীরিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরো অভিযোগ করে জানান, ঘটনার পর নগরীর বোয়ালিয়া থানায় মামলা দায়েরের জন্য গেলেও আসামী পক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় তারা চিকিৎসার যাবতীয় খরচ দেয়া ও পঙ্গু হয়ে গেলেও কর্মসংস্থান করে দিবে বলে বোয়ালিয়া থানার এসআই
মাসুদ রানার মাধ্যমে প্রস্তাব দেয়। পরে থানার এসআই মাসুদ রানার উপস্থিতে দুই পক্ষের মধ্যে লিখিত চুক্তি করে। সেই চুক্তি এসআই তার নিজের কাছে রেখে দেয়। ঘটনার পর ১ মাস হতে চললেও এখনো আসামী পক্ষ ভুক্তভোগীদের কোন অর্থ দেয়নি। আর এসআইও সেই চুক্তিপত্রের কথা অস্বীকার করছে। আবার থানায় এতদিনেও মামলা রেকর্ড হয়নি। আসামী পক্ষ উল্টো বাদীপক্ষকেই হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। চিকিৎসাধীন ফাহিম মুঠোফোনে অভিযোগ করে বলেন, আমি ভালো সুস্থভাবে বাঁচতে চাই। এখনো আমার অস্ত্রপাচার হয়নি। আমার অবস্থা খারাপ।
আমি ন্যায্য বিচার দাবি করছি। আর আমাকে যারা পঙ্গুত্বের দিকে ঠেলে দিয়েছে তাদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি। বোয়ালিয়া মডেল থানার এসআই মাসুদ রানার সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি চুক্তিপত্রের কথা অস্বীকার করে বলেন, সে সময় দুই পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছিল। কিন্ত আমার মাধ্যমে কোন লিখিত চুক্তি হয়নি। কাগজ কোথায় সেটাও আমার জানা নেই। ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে মামলা দিলে তা গ্রহণ করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে কথা বলতে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST