ঢাকা ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:০১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১
এস ইসলাম, নাটোর জেলা প্রতিনিধি।
অভাবের সংসারে সকল কাজ কর্মের মাঝেও চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের পড়াশোনা। অষ্টম শ্রেণির জেএসসি পরিক্ষায় ৪ দশমিক ৫০ পয়েন্টে এবং ৪ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে এসএসসি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এইচএসসি পরীক্ষাতেও ভালো ফলাফল হবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের করণিকের ভুলের কারণে শিক্ষাজীবন থেকে আরো একটা বছর নষ্ট হয়ে গেলো নাটোরের বাগাতিপাড়ার জামনগর ইউনিয়নের কালী কাপড় সরদার পাড়া গ্রামের দিন মজুর নজরুল ইসলামের মেয়ে এবং উপজেলার বাশঁবাড়ীয়া ডিগ্রী কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী বিথি খাতুনের। তার বোর্ড রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ১৫১২৬৭৮৯৫৫ ও শ্রেণী রোল ৩২১।
২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের মানবিক বিভাগের নিয়মিত মেধাবী শিক্ষার্থী বিথি খাতুন ২০২০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য স্থানীয় এক শিক্ষকের মাধ্যমে গত ০৪-০১-২০২০ তারিখে উক্ত কলেজে ফরম পূরণ বাবদ দুই হাজার পাঁচশত (২৫০০) টাকা প্রদান করেন ঐ কলেজের করণিক আব্দুর রাজ্জাকের নিকট। ফরম পূরণের জন্য ২৫০০টাকা জমার বিপরীতে বিথির শ্রেণি রোল নম্বর ৩২১ উল্লেখিত জমা রশিদ বহির ২৪১ নম্বর রশিদ প্রদান (বিথিকে) করেন করণিক রাজ্জাক। এরই মধ্যে সারা বিশ্বের মতো এদেশেও করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এর পাদুর্ভাব দেখা দিলে ১৭ মার্চ ২০২০ তারিখ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্থগিত করা হয় সকল পরিক্ষা। এক বছর অতিবাহিত হওয়ায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নেয় মেধাবী যাচাই করে অটো পাসের।
এবিষয়ে বাঁশবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের করণিক আব্দুর রাজ্জাকের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি বলেন, এই পরিক্ষার জন্য বিথি ফরম পূরণ করেনি তাই তার রেজাল্ট আসেনি। ফরম পূরণ বাবদ ২৫০০ টাকা নিয়ে টাকা জমার রশিদ দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে রাজ্জাক বলেন, না এই নজরুলের মেয়ে বিথি কলেজে আসেনি ফরম পূরণ করেনি তাকে কোনো টাকা জমার রশিদও দেওয়া হয়নি। তার বিরুদ্ধে টাকা আত্নসাৎ এর অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। পরে আবার বলেন, বিথি নামে দুইজন পরীক্ষার্থী থাকায় এই সমস্যা হয়েছে। তবে তার সাথে আরো কথা বলে কোনো সঠিক উত্তর পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে ঐ কলেজের অধ্যক্ষ ছাবিহা সুলতানার কাছে প্রথমে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনিও ঠিক ওই করণিক রাজ্জাকের মত একই কথা বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এই প্রতিবেদকের কথার সঠিক উত্তর না দিয়ে মুঠোফোনে তিনি বলেন আমি এবিষয়ে কিছু জানিনা এবং কোন কিছু বলতে পারবো না। মেধাবী শিক্ষার্থী নজরুলের মেয়ে বিথির রেজাল্ট আসেনি কেন পরেরদিন কলেজে গিয়ে একই প্রশ্ন করা হলে অধ্যক্ষ ছাবিহা ওই একই কথা বলে দায় এড়িয়ে যান। তবে তিনি আরো বলেন, আমি সহ আমার সকল শিক্ষক ওই মেয়েকে বলেছি যা হওয়ার হয়েছে সামনে বছর ফরম পূরণের জন্য তোমার কোনো টাকা দিতে হবেনা, আমরাই তোমার ফরম পূরণের ব্যাবস্থা করবো এনিয়ে আর কিছু করার দরকার নেই।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আহাদ আলী সরকার বলেন, এধরণের কোনো কাগজপত্র তিনি পাননি।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST