বখাটে মাদকসেবীদের নেশা বদল নীলফামারীতে ফার্মেসীতে মিলছে নেশা ট্যাবলেট, অভিভাবকরা আতংকিত

প্রকাশিত: ১২:৩৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০২০

বখাটে মাদকসেবীদের নেশা বদল নীলফামারীতে ফার্মেসীতে মিলছে নেশা ট্যাবলেট, অভিভাবকরা আতংকিত

খাদেমুল মোরসালিন শাকীর,রংপুর ব্যুরো প্রধান :  এবার নেশা বদল করেছেন মাদক সেবীরা। হিরোইন, ফেন্সিডিল, ইয়াবা, গাজা নয় এবার ঝুকি-ঝামেলা এড়াতে ব্যবহার করেছেন নেশার ট্যাবলেট। এসব ট্যাবলেট বিভিন্ন ফার্মেসীতে বিক্রি হচ্ছে। ফলে অভিভাবকরা তাদের সন্তান নিয়ে চরম আতংকিত হয়ে পড়েছেন। উত্তরের বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরে,নীলফামারী সদর, ডোমার,ডিমলা,জলঢাকা ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার সাথে সব ধরণের যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় মাদকের ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এক সময় গাজা, ফেন্সিডিল, হিরোইন ও সর্বশেষ ইয়াবা সেবনের প্রবণতা বেড়ে যায়। ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম পর্যন্ত। পুলিশ প্রশাসন এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করায় ব্যবহারের প্রবণতা কমে যায়। পরে মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীরা শহরের স্থান বদল করে গ্রামে ছুটতে থাকে। সেখানেও পুলিশের কঠোর নজরদারীতে তারা গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়। এদিকে শিশু-কিশোররা আসক্ত হয়ে পড়েছে ড্যান্ডি গাম ও সাম্পাক নামের সর্বনাশা নেশায়। শিশু কিশোরদের অনেককে সকাল থেকে রাত অবধি শহরের বিভিন্ন জায়গায় দাড়িয়ে বা হাটা অবস্থায় এই নেশা করতে দেখা যায়। টোকাই কিংবা ভিক্ষাবৃত্তির বেশি ভাগ শিশু এ নেশায় আসক্ত হচ্ছেন।পাশাপাশি সাম্পাক নামক মাদক দ্রব্য তৈরী করতে শহরের নামি দামী ওষুধের দোকান থেকে কাশির শিরাপের সাথে মেশানো হয় গ্যাসের ট্যাবলেট,ঘুমের ট্যাবলেট,ব্যাথা নাশক ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন ধরণের ওষুধ। এ সহজ লভ্য নেশার সাথে জড়িয়ে পড়েছে এ জেলার বিভিন্ন বয়সী মানুষ। হতদরিদ্র হওয়ায় সচেতন মানুষ এদের দিকে তাকাচ্ছে না। ফলে নেশা আসক্তি থেকে শুরু করে এরা আবার জড়িয়ে পড়েছে চুরি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনায়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ড্যান্ডি এক ধরনের নেশা। তীব্র গন্ধ না থাকায় শিশু কিশোররা এ নেশা যে করছে তা কেউ ধরতে পারেন না। অল্প খরচে এই নেশা করা যায় বলে পথ শিশু-কিশোররা ঝুঁকে পড়ছে এতে। এ জনের কাছ থেকে ছড়িয়ে যাচ্ছে অন্য জনের কাছে। বিভিন্ন বস্তি ও কলোনীর নি¤œ আয়ের পরিবারের শিশুদের মধ্যে সাধারণ এ আসক্তি দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসকরা জানান, এ গাম ব্যবহার কালে শরীরের অনেকগুলো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, ব্রেন, কিডনী, লিভার ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া সৈয়দপুরসহ জেলার বিভিন্ন ফার্মেসীতে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে নেশা জাতীয় ট্যাবলেট। এর মধ্যে ইনসেপটার সেনট্রিডল, হেলথ কেয়ারের সিনটা, এসিআইয়ের লোপেন্ডা, স্কয়ারের পেনটাডল, অপসোনিনের টাপেনডল, এসকেএফ এর টাপেন্ড বেক্সিমকোর ট্রাপডাসহ বিভিন্ন নামের এসব ঔষধ প্রেসক্রিপসন ছাড়াই বিক্রি করা হচেছ। এ ঔষধ ফার্মেসীর মালিকরা রাজা, রানী, লাড্ডু প্যাকেজ করে ১০০, ৫০ ও ২০ টাকায় বিক্রি করছেন। এসব খেলে নাকি অন্য নেশা ধরে না। এসব ঔষধ বিক্রির সময় ফার্মেসীর রশিদ রাখার নিয়ম থাকলেও মানছে না কোন ফার্মেসী। এরই মধ্যে কয়েকটি ফার্মেসীর জরিমানাও হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, এসব ঔষধ মাত্রাতিরিক্ত সেবন করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তবুও এসব খেয়ে নেশা করছেন বখাটে মাদকসেবীরা। এতে করে অভিভাবকরা আতংকিত হয়ে পড়েছেন। এসব বন্ধে এখনি আইনি ব্যবস্থা জরুরি হয়ে পড়েছে।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest