ঢাকা ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:২৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩১, ২০২০
হাসান আরেফিন,ঝালকাঠি:: সংরক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছিল ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চায়না মাঠ। স্থানীয়দের কাছে এটি উপজেলার একমাত্র খেলার মাঠ হিসেবে পরিচিত। ভূমি দস্যুদের থাবায় বেদখল হয়ে যাচ্ছিল মাঠের কিছু অংশ। এনিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় ক্রীড়া প্রেমীদের মধ্যে ছিলো ক্ষোভ। কয়েকদফায় ঐতিহ্যবাহী এ মাঠটি সংরক্ষণে উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এরই মধ্যে মাঠের অবৈধ দখলদারকে সরিয়ে দখলমুক্ত করা হয়েছে। আর এতে প্রান ফিরে পেয়েছে এই অ লের ঐতিহাসিক পটভূমি অন্যতম একটি নিদর্শন চায়না মাঠ। সাম্প্রতি দখলমুক্ত ঐতিহ্যবাহী এ খেলারমাঠটি সংরক্ষণে এগিয়ে আসেন স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। এম খান লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাহফুজ খান চায়না মাঠের সংরক্ষণ ও রক্ষনাবেক্ষণে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার উদ্যোগ নেন। শুক্রবার থেকে মাঠে স্থায়ী সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে রক্ষণাবেক্ষন কাজ শুরু হয়েছে। সকালে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদার এ কাজের উদ্ধোধন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাখাওয়াত হোসেন, এম খান লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাহফুজ খান, নলছিটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন আলো প্রমুখ।
এসময় নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদার জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে উপজেলা ভিত্তিক মিনি স্টেডিয়ামের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য চায়না মাঠকে তালিকা ভুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দ্বিতীয় বারেরমত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ দখলদারদের সময় বেঁধে দিয়ে চুরান্ত নির্দেশ দেয়ার পর তারা নিজ উদ্যোগে জায়গা ছেড়ে দিয়েছে। তাই স্থানীয় ব্যবসায়ী মাহফুজ খানের ব্যক্তিউদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী চায়না মাঠকে সংরক্ষণ করতে চারদিকে বাউন্ডারি ওয়াল করার কাজ শুরু করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চায়না মাঠের দক্ষিণ পাশে রয়েছে জনৈক এক চায়না ব্যবসায়ীর কবর। সে কবরের পাশে বিশাল এ মাঠ যুগে যুগে ‘চায়না মাঠ’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে । চায়না মাঠ এই অ লের ইতিহাস আর ঐতিহ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান। এই অ লের যে ঐতিহাসিক পটভূমি তার অন্যতম একটি নিদর্শন চায়না মাঠ।
জানা গেছে, ঝালকাঠি ছিলো একসময় বৃহত্তর বরিশালের অন্তর্গত। ১৮৬৫ সালে দেশের ২য় পৌরসভা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় নলছিটি পৌরসভা। নদী বন্দর থাকায় এই অ লটি বিদেশী বণিকদের নিকট জনপ্রিয় ছিলো । যার ফলে ইউরোপীয় ও চীনা ব্যবসায়ীরা এখানে বানিজ্য করতে আসতনে। ফলে বিভিন্ন সময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ডাচ ও ফরাসিরা এখানে ব্যবসা কেন্দ্র খুলেছিল। বাণিজ্যিক গুরুত্বের জন্য তৎকালীন সময়ে নদী বেশিষ্ট নলছিটিকে দ্বিতীয় কোলকতা বলা হত। সে সময়ে বন্দরকে ঘিরে এই অ লে ছিলো চায়না ব্যবসায়ীদের আধিক্য। ব্যবসা কাজে এসেই চায়না ব্যবসায়ী হুয়াং মৃত্যুবরণ করলে তাকে মাঠের পাশেই শায়িত করা হয়। আর সেই থেকেই ওই মাঠটি চায়না মাঠ হিসেবে পরিচিতি পায়।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST