রবিউল ইসলাম রংপুর।। আজ শনিবার বিভাগীয় নগরী রংপুরের প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত জেলা প্রশাসকের বাস ভবনের সামনে,একটি শতবর্ষী কৃষ্ণচুড়া হঠাৎ দিনের বেলায় দুমড়ে মুছরে পরে যায়। গ্রীষ্মের অতি পরিচিত ফুল কৃষ্ণচূড়া। সারাবছর চোখে না পড়লেও গ্রীষ্মে এর রূপ দেখে থমকে দাঁড়াতে হয়। ঋতুবৈচিত্রের ধারায় প্রকৃতিতে এখন বিরাজমান । প্রখর রোদ যখন তাপদাহ ছড়ায় তখন কৃষ্ণচূড়া ফুল তার সৌন্দর্যের বার্তা ছড়িয়ে দেয় প্রকৃতির বুকে। কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে/আমি ভুবন ভোলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কৃষ্ণচূড়া গাছ আর ফুল নিয়ে ছিলো মনোমুগ্ধকর একটি গান। গ্রীষ্মের এ রুক্ষ মেজাজ ছাপিয়ে কৃষ্ণচূড়া নিজেকে প্রকৃতিতে মেলে ধরে আপন মহিমায়। লাল রঙে কৃষ্ণচূড়া পসরা সাজিয়ে যেন প্রকৃতিতে তার আপন মহিমা ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয়। যা প্রকৃতিপ্রেমী মানুষদের চোখ মন ভরিয়ে দেয়। তাই বিশ্ব কবি বরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় বলতে হয়, ‘গন্ধে উদাস হাওয়ার মত উড়ে তোমার উত্তরী, কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জুরি’ আজ টিকে আছে নড়বড়ে অস্তিত্ব নিয়ে। নানা স্থানে নানা জায়গায় বৃক্ষ নিধনের মধ্যেও রংপুর জেলা প্রশাসকের বাস ভবনের সামনে পাশে ফোয়ার সামনে শতবর্ষী একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ দাঁড়িয়ে ছিলো স্বমহিমায়।অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ও শতবর্ষী এ কৃষ্ণচূড়াকে হার মানাতে পারে নাই। কিন্তু আজ হঠাত মুহুর্তে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় শতবর্ষী এ গাছটি।ডালপালা ভেঙে চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। এতে করে ঘণ্টাখানেকের মতো যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এসময় রাস্তায় চলাচলরত একটি প্রাইভেট কার,রিক্সা ও একটি মটর সাইকেল এর উপর গাছটি চাপা পরে আহত ৪জন কে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। আজ রংপুর জেলা প্রশাসকের বাস ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শতবর্ষী কৃষ্ণচূড়া গাছ টি হঠাত পরে যায়। বিশাল দেহ নিয়ে সড়কের ওপর আছড়ে পড়ে গাছটি। খবর পেয়ে রংপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। পরে উন্নতপ্রযুক্তি মাধ্যমে ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে গাছটি কেটে সড়ক থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।বিশাল দেহ বিশিষ্ট গাছটি বহুদিন ধরে রোদ তপ্ত পথিককে ছায়া দিয়ে আসছিলো, লাল রঙের পসরা সাজিয়ে প্রকৃতিপ্রেমীদের মন মাতিয়ে দিতো। কিন্তু আজকের পর থেকে ক্লান্ত-শ্রান্ত পথিক আর ছায়া নিতে পারবে না। প্রকৃতিপ্রেমীরা আর দেখতে পাবে না লাল রঙের সেই মন মাতান গাছটি আর নাই।।