ঢাকা ৩১ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৪২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৪, ২০২০
জিএম ফারুক,বিশেষ প্রতিনিধিঃ ছোলেমা খাতুন ওরফে সাদিয়া আক্তার তমা ওরফে তমা রহমান (৩৩)। ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার গ্রামে তার বাড়ি। কারও কাছে লালনার নাম কারও আতংক বা সর্বনাশার নাম। তিনি গার্মেন্টস শ্রমিক থেকে আস্তে আস্তে মিডিয়ার নাম ব্যবহার করেন। আর একের পর এক বিয়ে এবং পতিতা ব্যবসায় নেমে পড়েন। অনেক মানুষকে বিয়ের ফাঁদে ফেলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। মূলত তার পেশাই হলো বিয়ের কাবিনের ব্যবসা। তাছাড়া যাদেরকে বিয়ে পর্যন্ত নিতে পারেন না তাদেরকে নানানভাবে বুঝিয়ে নিজের সাথে শারিরিক সম্পর্ক জড়ান আর এর পরই জোর করে ধর্ষণ মামলার হুমকি দিয়ে টাকায় আদায় করেন তিনি।
নাটক কিংবা মিউজিক ভিডিও যাই করেন সবই নিজের দেহ বিলিয়ে পরিচালক কিংবা প্রযোযককে নানানভাবে বুঝিয়ে শুনিয়ে শারিরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন আর এরপরই শুরু হয় তার আসল কাজ, ব্লাকমেইল! তাদেরকে নানাভাবে ব্লাকমেইলের মাধ্যমে নিজের উদ্দ্যেশ্য হাসিল করেন আদায় করেন মোটা অংকের টাকা।
নাম প্রকাশে এক পরিচালক জানান, “আমি তাকে আমার একটি নাটকে কাজ করাই, সে থেকে তার সাথে আমার পরিচয় এবং শখ্যতা। একদিন আমাকে বাসায় ডেকে তার সাথে শারিরীক সম্পর্ক করতে বলেন। আর তারপর আমাকে ধর্ষণের অভিযোগ তোলে থানায় মামলার ভয় দেখান। আমি ১ লক্ষ টাকা দিয়ে কোনমতে তার থেকে মুক্তি পাই।”
২০১৭ সালের চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের টীম আন্ডারকাভারে তার বিয়ে এবং প্রতারণা নিয়ে দুই পর্বের একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিলো। তখন পর্যন্ত তার কাগজে কলমে বিয়ের সংখ্যা ছিলো ২০ টি। আর ২০২০ সালের জুলাই পর্যন্ত তার বিয়ের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৬টিতে।
সর্বশেষ ইউটিউব চ্যানেল স্বপ্ন মিউজিকের টনক মাসুদ নামের একজন পরিচালকের সাথে প্রেম পরিনয় হয় তার। তার এসব অপকর্মের মুল হোতা কি মাসুদ!!। টনক মাসুদ ছাড়াও সখ্যদের মধ্যে মুরাদ, হারুন মেহেদী, বিপ্লব, মিঠু সহ আরো কয়েকজনের নামের অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি এক অভিনেতাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নিজ বাসায় ঢেকে শারিরীক সম্পর্ক করে পরে তাকে ধর্ষণের অভিযোগে দিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেনেএ নারী। নিজের মানসন্মানের ভয়ে ওই অভিনেতা কোন প্রকার প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।
২০০১ সালে তমা সেলিম মিয়া নামের এক গার্মেন্টসের ছেলেকে বিয়ে করেন। পরে স্বপন শেখ নামের এক ব্যবসায়ীকে ২য় বিয়ে করেন ২০০০ সালে। যদিও নিজেকে তখনো কুমারী বলেই দাবী করেছিলেন তমা।
তমার দ্বিতীয় স্বামী স্বপন শেখ বলেন, “২০০০ সাল থেকে আমাদের পরিচয়। গার্মেন্টস থেকে। তারপর আমরা বিয়ে করি ২০০৯ সালে। ২০১৩ পর্যন্ত আমরা ভালই ছিলাম। ২০১৩ থেকে সে মাঝে- মাঝে উধাও হয়ে যেত। ২০১৬ তেও সে উধাও। ২০১৬ সালে আমি তার নামে একটা মামলা করি। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ খবর নিয়ে দেখেছি সে ২০টা বিয়ে করেছে। তার ১ম স্বামী সেলিম মিয়া। তাকে বিয়ে করছে আমার আগে, ২০০১ সালে। তারপর আমার সাথে বিয়ে হইলো ২০০৯ সালে। তখনতো সে আর কুমারী না। সে কুমারী লেখছে। অনেক বিয়ে সে ৩ দিনের জন্য করছে, আমার বাসার সব কিছু নিয়েই সে উধাও হয়ে গেছে।, সব কিছু নিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা।
সাদিয়া আক্তার তমা’র আরেক স্বামী আব্দুর রহিম মিঠু বলেন, আমাকে এক প্রকার জিম্মি করে এটা করা হয়েছে। আর্থিকভাবে, মানহানিভাবে, মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। দুইটা মামলা করছে। প্রায় দেড় মাস জেলে ছিলাম।
শুধু তাই নয় তার এসব অপকর্মের বিরুদ্বে কথা বললেই মামলার হুমকি দিয়ে নানানভাবে হয়রানী করেন ভুক্তভোগীদের।
বিষয়টি নিয়ে ওই প্রতারক নারীর মুঠোফোনে বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
সবার মনে একই প্রশ্ন এই বহু বিয়ের নায়িকা প্রতারক তমা’র আসল হোতাকে?
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপির এক কর্মকর্তা জানান, নামধারী এই নায়িকার বিরুদ্বে এর আগেও নানানরকম প্রতারণার অভিযোগ আসছিলো। এখন আবার একই অভিযোগ আসছে। এই নারীর অপকর্মের সাথে যারা যারা জড়িত আছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রতারণার স্বীকার ভুক্তভোগীদের দাবী দ্রুত এই প্রতারক তমাকে আইনেরে আওতায় এনে গ্রেফতার করে বিচার করা হোক। তা না হলে এর মাধ্যমে আরও শত শত যুবক নিঃস্ব হয়ে যাবে। বিপথগামী হবে নিরহ সাধারন মানুষ। আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে যাতে এই অপরাধীরা কোন ভাবেই পার পেয়ে না যেতে পারে সেদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি প্রত্যাশা করেন।
সূত্রঃ https://youtu.be/b0xu2eARsR4
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST