শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে খোলা চিঠি

প্রকাশিত: ৫:১১ পূর্বাহ্ণ, জুন ৩, ২০২০

শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে খোলা চিঠি

এম সি কিউ পরীক্ষায় পাশ করা সকল শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে খোলা চিঠিঃ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
অতীব বিনয়ের সাথে আপনার সদয় বিবেচনার জন্য আমরা সমগ্র বাংলাদেশের শিক্ষানবীশ আইনজীবীগন সম্মিলিত ভাবে আকুল আবেদন জানাচ্ছি যে, আমরা কেউ বিগত ১০ বছর, কেউ ৭ বছর আবার কেউবা ৫ বছর যাবৎ শিক্ষানবীশ হিসেবে মহান আইন পেশায় বাংলাদেশের বিভিন্ন বার এসোসিয়েশনে আপনার সহচর্যে থেকে অত্যন্ত স্বল্প পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সেবা প্রদান করে আসিতেছি।

কিন্তু অত্যান্ত মর্মাহত ও ব্যথিত চিত্তে আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, আমরা বাংলাদেশের শিক্ষানবীশ আইনজীবীগন এক চরম সংকটময় সময় অতিবাহিত করিতেছি। সারা পৃথিবীতে এই করোনা ভাইরাস নামক মহামারীর কারনে আমরা অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাপন করিতেছি। আমাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধন না থাকায় আমরা বার কাউন্সিল কিংবা বার এসোসিয়েশন থেকে আর্থিক, মানসিক ও আইনগত অধিকার থেকে সম্পূর্ণরুপে বঞ্চিত হয়ে আছি।

এই পরিস্থিতিতে আমরা দূর্ভাগ্যজনক ভাবে বা অদৃষ্টের নির্মম পরিহাসে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তনের কারনে বা অতিরিক্ত কঠোর পরীক্ষা পদ্ধতি চলমান থাকায় বা ৩/৪ বছর পর পর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় জীবনের অনেক মূল্যবান সময় আইন পেশায় তালিকা ভূক্তির পূর্বেই হরিয়ে যাচ্ছি।

প্রিয় মমতাময়ী মা,
মহামারির কারনে বর্তমানে এক সংকটময় সময় আমরা অতিবাহিত করিতেছি এবং এর সময়কাল আমাদের সকলেরই অজানা।
সকল পরীক্ষার্থীরা লিখিত পরীক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্য ঢাকায় জড়ো হলে তাদের থাকার জন্য কোন প্রকার বাসা ভাড়া পাওয়া যাবে না এবং এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে সংশ্লিষ্ট সকলে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

এমতপরিস্থিতিতে আমরা যাহারা কঠোর অধ্যাবসয়ের মাধ্যমে কেউ ২০১৭ সালে আবার কেউ বা ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত এম সি কিউ পরীক্ষায় তীব্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পাশ করেছি তাদের পরবর্তী লিখিত পরীক্ষা মহামারির কারনে মওকুফ করে ভাইভা নিয়ে অথবা গেজেট করে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভূক্তির জন্য বিনীত ভাবে অনুরোধ করিতেছি।

প্রিয় মমতাময়ী নেত্রী
আপনি ২০১৩ সালে ২৬ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কে জাতীয়করণের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছিলেন এবং বর্তমানে ও করোনা মহামারীর কারণে ডাক্তার ও নার্স স্পেশাল ভাবে নিয়োগ দিয়ে অন্যান্য নজীর সৃষ্টি করছেন যা বাংলাদেশে ইতিহাসের পাতায় আপনার নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে।

প্রিয় মমতাময়ী মা
আপনি একমাত্র বাংলাদেশের জনগনের মনের ও কষ্টের ভাষা বুঝেন।আপনিই আমাদের শেষ আশ্রয়স্হল, আপনিই পারেন আমাদের বেকারত্বেরে অভিশাপ ও মা বাবার শেষ স্বপ্ন বাস্তবে রুপান্তরিত করতে।

প্রিয় মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী
২০১৭ ও ২০২০ সালে তুমুল প্রতিযোগীতা করে এমসিকিউ পরীক্ষায় পাশ করা শিক্ষা নবীশ আইনজীবীদের কে বর্তমানে মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে লিখিত পরীক্ষা ছাড়া সনদ দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

প্রিয় কাওমী জননী,
বার কাউন্সিলের ইতিহাসে দেখা যায়, দেশের এক সংকটময় মূহর্তে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বার কাউন্সিল তালিকাভূক্তির ক্ষেত্রে শিথিলতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

প্রিয় দেশরত্ন মা
আপনি বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান বিভিন্ন পরীক্ষার ক্ষেত্রে শিথিলতা ও অব্যাহতি প্রদানের বিষয়টি মানবিক কারনে বিবেচনা করেছেন তাই আমাদের দুর্বিষহ শিক্ষা নবীশ কাল থেকে মুক্তি দিতে আপনার যেন সদয় মর্জি হয়।

বিনীত
এম সি কিউ ২০১৭ ও ২০২০ পরীক্ষায় উত্তীর্ন বাংলাদেশের সকল শিক্ষানবীশ আইনজীবীবৃন্দু।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest