খানসামায় এবার সরিষার বাম্পার ফলনের আশা

প্রকাশিত: ১২:৪৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১০, ২০২০

খানসামায় এবার সরিষার বাম্পার ফলনের আশা

মোঃ নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : হলুদের রঙ্গে-রঙ্গে ভাসছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার বিভিন্ন মাঠ এ যেন এক হলুদের মেলা বসেছে । উপজেলার ৬ ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে এখন চোঁখ জুড়ানো হলুদ রঙের সমারোহ। দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে ওই রঙের উৎসব এনে দিয়েছে সরষে ফুল। যা প্রকৃতিতেও ভিন্নমাত্রা এনে দিয়েছে। এ রঙ্গের মেলায় যেন প্রকৃতি তার আপন খেলায় বড়ই ব্যস্ত সময় পার করছেন। সরষে ফুলের আইল দিয়ে হেঁটে চলা কৃষাণী অথবা শিশুর দল অন্যরকম চিত্র সৃষ্টি করছে। উপজেলার আলোকঝাড়ি, ভেড়ভেড়ী, আঙ্গারপাড়া, খামারপাড়া, ভাবকি ও গোয়ালডিহি ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠ সেঁজেছে অপরুপ সাঁজে। দৃস্টিনন্দন হয়ে উঠেছে সরষে ফুলে মোড়া ক্ষেতগুলো। মৌমাছির দল ও প্রজাপিত সরষে ফুলে পাখা মেলে মধু আহরণ করছে। ছবি তোলার লোভ সামলাতে না পেরে শীতের সকালে অথবা পড়ন্ত বিকালে সরষে মাঠে গিয়ে নিখাত হলুদের মাঝে নিজেকে রাঙিয়ে তুলতে ছবিও তুলছেন অনেকে। হলুদ রঙ্গের মাঝে তোলা ছবি গুলো যেন প্রাণে দোলা দেওয়ার মত।

চলতি বছরে উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছে উপজেলা কৃষি সম্পাসারণ অধিদপ্তর। বিভিন্ন গ্রামের সরিষা চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এবার প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬-৭ মণ সরিষা উৎপাদন হবে।

সরিষা চাষের অনুকূল পরিবেশের কারণে এবার সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। চলতি বছরে সরিষার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮৮২ হেক্টর জমিতে। এর স্থলে চাষ হয়েছে ৮৫০ হেক্টর জমিতে। গত বছরেও ৮৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করে লাভবান হয়েছিল চাষীরা।

ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া গ্রামের সরিষাচাষী বঙ্কিম রায় জানান, প্রতিবিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা। প্রতি মণ সরিষা বিক্রি করা যায় দেড় হাজার টাকা করে। প্রতি বিঘাতে ৭ মণ সরিষা উৎপাদন হলে বিঘা প্রতি ৭ হাজার টাকা লাভ করা যায়। এ ছাড়া সরিষা আবাদে তেমন সেচের প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া মাত্র ২ মাস সময়ে সরিষা আবাদ করা যায়। সরিষার বড় শত্রু জাব পোকা। এবার জাব পোকার আক্রমণ না থাকার কারণে সরিষার ফলন ভাল হয়েছে।

খামারপাড়া ইউনিয়নের কায়েমপুর গ্রামের সরিষা চাষী মহসীন আলী, বালাপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ও মকবুল ইসলাম জানান, নিজের প্রয়োজন মেটাতে প্রতি বছর ২/৩ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। তবে এবার ৪/৫ বিঘা করে জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। আশা করছি অন্য বছরের তুলনায় এবার সরিষার ফলন ভালো হবে। নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে ২০-২৫ হাজার টাকার সরিষা বিক্রি করতে পারব। সরিষার তেলের রয়েছে অনেক ওষুধি গুণ। আর সরিষার খৈল জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি করে। এবং সরিষার গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া সরিষার আবাদ করলে ওই জমিতে সরিষার পাতা পড়ে। ফলে জমির উর্বরতা বাড়ে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ. ম. জাহেদুল ইসলাম বলেন, রবিশস্য চাষের এবার অনুকূল পরিবেশ ছিল। এমন প্রাকৃতিক পরিবেশ পেলে মানুষ সরিষা আরও বেশি করে আবাদ করবে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফজাল হোসেন জানান, সরিষা চাষে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে। কৃষকদের অল্প সময়ে এই সরিষা চাষের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে দুই ফসলি জমি তিন ফসলি জমিতে রুপান্তরিত হচ্ছে।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest