সৈয়দপুরে ১০ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

প্রকাশিত: ১২:৩৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০২০

সৈয়দপুরে ১০ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

খাদেমুল মোরসালিন শাকীর,রংপুর ব্যুরো প্রধান: সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হুগলিপাড়া একরামিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীর বিরুদ্ধে পাঠদান ও শ্রম ফাঁকির অভিযোগ সহ মাদ্রাসা ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২০জানুয়ারী সরেজমিনে ওই প্রতিষ্ঠানে গেলে আশপাশের লোকজন এবং মাদ্রাসার সুপার বরিজ উদ্দিন ওই অভিযোগ তোলেন। সুপার বলেন, ১৯৭৩ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর ২০০২ সালে এটির অবকাঠামোগত সংস্কার হয়। গত ২০১৯ সালের ২ জুলাই মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ মাদ্রাসার শিক্ষা বোর্ড। এরপর কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ওই বছরের ১০ জুলাই। পরবর্তীতে ওই বছরের ১৮ ও ২৮ জুলাই সভা ডাকা হয়। কিন্তু দুই সভায় সভাপতি কোন প্রকার কারণ ছাড়াই অনুপস্থিত থাকেন। এরপর আবার ওই বছরের ২৭ আগষ্ট সভা ডাকা হলে ওই সভাতেও তিনি অনুপস্থিত থাকেন। ৩টি সভায় সভাপতি অনুপস্থিত না থাকায় বিধি ২০০৯ এর ১১নং প্রবিধান এর উপ-প্রবিধান ঙ অনুযায়ী তার সভাপতি পদ সংক্রিয়ভাবে বিলুপ্তি হয়ে যায়। কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনা করে গত ৪ সেপ্টেম্বর ও আগষ্ট মাসের শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ভাতা সরকারি অর্থের বিলে সভাপতির প্রতিস্বাক্ষর নেয়ার জন্য অফিস সহকারী মামুন-উর-রশিদ সভাপতির কাছে গেলে তিনি স্বাক্ষর না করে তাকে ফিরিয়ে দেন। ফলে বেতন ভাতা ব্যাংকে আটকে পড়ে যায়। পরবর্তীতে আমি নিজে সভাপতির সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তাতেও কোন সুফল হয়নি। নিরুপায় হয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর জরুরী সভা আহŸান করে প্রবিধান ৩৫ এর উপপ্রবিধান ২ অনুযায়ী সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সভাপতি ফজলুল হক এর বিরুদ্ধে ১৩ দফা অভিযোগসহ তার পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহিত হয়। এ বিষয়টি চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য প্রবিধান ৩৮ এর ১ উপ-প্রবিধান ২ এবং উপ-প্রবিধান ১ অনুযায়ী গত ২১ সেপ্টেম্বর রেজিষ্টার মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বরাবর পাঠানো হয়। যা বর্তমানে বোর্ডে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যার কারণে সভাপতির স্বাক্ষর না হওয়ায় গত আগষ্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসের বেতন-ভাতা ব্যাংকে আটকা পড়ে। এমতাবস্থায় তারপর থেকে নৈশ প্রহরীসহ ৯ শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করে। এসময় উপস্থিত শিক্ষার্থীদেরকেও ক্লাস না নিয়ে উল্টো তাদেরকে প্রতিষ্ঠান থেকে তাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও অনেক শিক্ষক নির্দিষ্ট সময়ে মাদ্রাসায় না গিয়ে ২ থেকে ৩ ঘন্টা দেরিতে গেলে সুপার হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত করেন। কিন্তু তারা জোর করে অনুপস্থিতির স্থানে স্বাক্ষর করেন এবং ক্লাসও নেন না। এমনকি শিক্ষা অফিসার অনুপস্থিত শিক্ষকদের হাজিরা খাতায় অনুস্থিতি নিশ্চিত করলেও ওই শিক্ষকরা সেখানেও জোর পূর্বক স্বাক্ষর করেন। কিন্তু মাদ্রাসা সহকারী শিক্ষক এনামুল হক, মাহমুদুল হাসান, মতিয়ার রহমান, মৌলভী শিক্ষক আসাদুজ্জামান, সাদেকুল ইসলাম, আবুল কালাম, হাফিজুর রহমান, তবারক আলী, অফিস সহকারী মামুন-উর-রশিদ এবং নৈশ্য প্রহরী জোবায়দুল হক আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। এতে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন মৌলভী শিক্ষক আবুল কালাম ও হাফিজুর রহমান। তারা সভাপতিকে দায়ী না করে আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। মাদ্রাসায় পাঠদান ফাঁকি দিয়ে তারা বাইরে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে। ওই শিক্ষকরা আদালতে বেতন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু সে বিষয়টি জেলা শিক্ষা অফিসার ও সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গোপন করে অভিযোগ করেছেন। তারা সভাপতির বিরুদ্ধে যে অনাস্থা আনা হয়েছে সেটিও আদালতসহ জেলা শিক্ষা অফিসার এবং সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গোপন করেছেন। এ ব্যাপারে অভিযোগযুক্ত শিক্ষক আবুল কালামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের বেতন ভাতা জোরপূর্বক আটক করে রেখেছে মাদ্রাসা সুপার। আমরা কোন কিছু বলতে গেলে আমাদেরকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়। এদিকে এলাকাবাসী ও মাদ্রাসার সুপার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest