ঢাকা ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:৩৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
রবিউল ইসলাম রংপুর প্রতিনিধি । রংপুরে উত্তরবঙ্গের প্রথম সরকারি ১০০ শয্যাবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ শিশু হাসপাতাল স্থাপনের জন্য ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। ভবন নির্মাণের জন্য ২ বছরের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হলেও নির্ধারিত সময়ের আড়াই মাস আগে কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলতি মাসে শিশু হাসপাতাল ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা সিভিল সার্জনকে হস্তান্তরের কথা রয়েছে। রংপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, নগরীর সদর হাসপাতালের প্রায় ২ একর জমির ওপর শিশু হাসপাতালের অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে। ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর শিশু হাসপাতাল নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ দেয়া হলেও উল্লেখিত জমিতে বিভিন্ন স্থাপনা থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের কয়েক মাস পর কার্যত কাজ শুরু করে ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মল্লিক এন্টারপ্রাইজ এবং মেসার্স অনিক ট্রেডিং করপোরেশন। ৬ তলা ভিত্তির মূল হাসপাতাল ভবনটি প্রথম পর্যায়ে ৩ তলাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩১ কোটি ৪৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকা।সরেজমিনে দেখা গেছে, সদ্য নির্মিত শিশু হাসপাতালের রঙ্গিন বহুতল ভবনগুলো অপেক্ষাকৃত ঘিঞ্জি এলাকা বলে পরিচিত সাবেক সদর হাসপাতাল চত্বরে সৌন্দর্যের নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এ সময় কথা হয় নির্মাণ কাজের সার্বিক দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র প্রকৌশলী মোকদম আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করেছি। এখন আমরা নবনির্মিত শিশু হাসপাতাল ভবন হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাস্তাবায়নকারী প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরকে অবগত করেছি। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য নির্ধারিত সময় ছিল দুই বছর। কিন্তু উল্লেখিত জমিতে পুরাতন ভবন থাকায় তা অপসারণ করে কাজ শুরু করতে কার্যাদেশ পাওয়ার পরও তাদের দুই মাসেরও বেশি সময় দেরি করতে হয়েছে। তাই ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি লে-আউটের মাধ্যমে শিশু হাসপাতালের বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়। তারপরও তারা নির্দিষ্ট সময়ের আগে কাজ শেষ করতে পেরেছেন বলে তিনি দাবি করেন।রংপুরের সিভিল সার্জন হিরম্ব কুমার রায় বলেন, ভবন বুঝে পাওয়ার পরেই স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরবর্তী কার্যক্রম শুরুর জন্য লিখিতভাবে অবগত করা হবে। শিশু হাসপাতালে কী কী সুবিধা থাকতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূল হাতপাতাল ভবনের ১ম তলায় থাকবে ইমার্জেন্সি, আউটডোর, চিকিৎসকদের চেম্বার এবং ল্যাব। ২য় তলায় অপারেশন থিয়েটার, ব্রোন ইউনিট এবং ৩য় তলায় ওয়ার্ড এবং কেবিন থাকবে।শিশু ও নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং রংপুর মা ও শিশু হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. অধ্যাপক এম এ ওয়াহেদ বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে একটি মাত্র শিশু বিভাগ দিয়ে এ অঞ্চলের চিকিৎসা প্রত্যাশী শিশুদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই পূর্ণাঙ্গ শিশু হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হলে শিশুদের জটিল সার্জারি ও সাধারণ রোগের চিকিৎসা স্বল্প মূল্যে প্রদান করা সম্ভব হবে। ফলে শিশুদের চিকিৎসা বাবদ অভিভাবকদের আর্থিক অপচয় যেমন দূর হবে তেমনি ভোগান্তি অনেক কমে আসবে। পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য ঢাকা অথবা পার্শ্ববর্তী দেশে যাওয়ার প্রবণতাও অনেক কমে আসবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST