সৌদি আরবকে দুই ভাগ, ইরাককে তিন ভাগ করা হবে!

প্রকাশিত: ১০:৪০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১০, ২০২০

সৌদি আরবকে দুই ভাগ, ইরাককে তিন ভাগ করা হবে!

মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান,আলোকিত সময় আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সৌদি আরবকে দুই ভাগ, ইরাককে তিন ভাগ করা হবে! সৌদি আরবকে দুই ভাগ, ইরাককে তিন ভাগ করা হবে! বিশ্বমোড়ল যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে ভেঙে টুকরো টুকোর করার উদ্দেশ্যে ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্য’ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু করেছে পশ্চিমারা। এমনটাই দাবি করছে খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল রিসার্চ। গ্লোবাল রিসার্চ এর দাবি, পরিকল্পনা অনুযায়ী, অন্যতম বড় দেশ সৌদি আরব ভেঙে দুই ভাগ করা হবে। পবিত্র দুই শহর মক্কা ও মদিনা নিয়ে হবে একটি দেশ। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘ইসলামিক স্যাকরেড স্টেট’ তথা ইসলামী পবিত্র রাষ্ট্র। আর এর প্রতিবেশী দেশ ইরাককে করা হবে তিন খণ্ড। কুর্দি সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল নিয়ে হবে ‘ফ্রি কুর্দিস্তান’, বর্তমান রাজধানী বাগদাদ ও অন্যতম বড় শহর বসরা নিয়ে দ্বিতীয় খণ্ডের নাম হবে ‘আরব শিয়া স্টেট’। আর আরব সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল নিয়ে তৃতীয় খণ্ড ‘ইরাক সুন্নি স্টেট’। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কাগজে কলমে একটি মানচিত্র তৈরি করেছেন মার্কিন সেনাবাহিনীর সিনিয়র কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট কর্নেল র‌্যালফ পিটার্স। মানচিত্রটি ২০০৬ সালে আর্মড ফোর্সেস জার্নালে প্রকাশ করা হয়। র‌্যালফ পিটার্স পরে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় যুদ্ধ একাডেমি থেকে কর্নেল হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক গবেষণা ম্যাগাজিন গ্লোবাল রিসার্চের রবিবারের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে ১৮ নভেম্বর। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে এ নকশা বহুদিনের। ২০০৬ সালে ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিবে এক গোপন বৈঠকে প্রথম ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্য’র কথা তোলেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রভাবশালী কূটনীতিক কনডোলিজা রাইস। এরপর এক সংবাদ সম্মেলনে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্য’র জন্ম এখন ক্রমেই বাস্তব হয়ে উঠছে। আমাদেরকে (যুক্তরাষ্ট্রকে) এ ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে যে, আমরা নতুন মধ্যপ্রাচ্য তৈরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি এবং নিশ্চিতভাবেই পুরনো মানচিত্রে আমরা ফিরছি না।’ মার্কিনিদের নতুন এ ধারণার ক্ষেত্রে আগেরগুলোর সঙ্গে এর সবচেয়ে বড় পার্থক্যটি হচ্ছে, তারা এটি বাস্তবায়নে শুধু কূটনীতিক বা রাজনীতিকদের ওপর নির্ভর করছে না। বরং সামরিক বাহিনীর জেনারেলদের ওপর আস্থা রাখছে বেশি। ২০০৬ সালের জুনে কনডোলিজা রাইস ও ইসরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট ঘোষণা করেন, নতুন এই মধ্যপ্রাচ্য প্রকল্প লেবানন দখলের মধ্য দিয়ে শুরু হবে। তাদের এ ঘোষণার এক মাস পরই দখলের লক্ষ্যে লেবাননে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। দ্বিতীয়বারের মতো এ লেবানন আগ্রাসনে ইসরায়েলকে সম্পূর্ণ মদদ ও সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। শুধু মুখেই নয়, ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্য’ ধারণাটি কাগজে-কলমে তথা মানচিত্র আকারেও প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে সর্বপ্রথম একটি মানচিত্র প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল একাডেমির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল র‌্যালফ পিটার্স। ২০০৬ সালের জুন মাসেই মার্কিন সেনাবাহিনীর সাময়িকী আর্মড ফোর্সেস জার্নালে প্রকাশিত হয়। ওই মানচিত্রেই মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য-এশিয়া ও এশিয়ার দেশগুলো নিয়ে নতুন নকশা দেখানো হয়। সৌদি আরব ও ইরাক খণ্ড-খণ্ড করার পাশাপাশি সিরিয়া ও পাকিস্তানকেও ভেঙে নতুন নতুন দেশ দেখানো হয়েছে। ইসরায়েলকে আরো বড় করতে এবং আরও শক্তিশালী করতে ভেঙে ছোট করে ফেলা হয়েছে পার্শ্ববর্তী লেবানন-সিরিয়াকে। লেবাননের পুরোটা ও সিরিয়ার অধিকাংশ অঞ্চল নিয়ে গ্রেটার ইসরায়েল নামে নতুন রাষ্ট্র সৃষ্টি করা হয়েছে ওই মানচিত্রে। এছাড়া মানচিত্রে এশিয়ার দেশ পাকিস্তানকে ভেঙে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। বর্তমান রাজধানী ইসলামাবাদ ও করাচি নিয়ে মূল পাকিস্তান ও গোয়াদর বন্দরবিশিষ্ট বেলুচিস্তান নিয়ে ‘ফ্রি বেলুচিস্তান’ দেশ দেখানো হয়েছে। তবে মানচিত্রে মধ্যপ্রাচ্যের ইরান, মিসর, সুদান ও ইথিওপিয়াকে অক্ষত রাখা হয়েছে। অবিকৃত রাখা হয়েছে মধ্যএশিয়ার তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তানকে।


alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest