শফিউর রহমান কামাল বরিশাল ব্যুরো:- বরিশাল নগরীর ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সারস্বত গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমেছে। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও বহাল তবিয়তে আছেন তিনি। এই বিতর্কিত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শত শত ছাত্র-ছাত্রী, অভিবাবক ও সহকারী শিক্ষকরা শিক্ষা বিভাগে অভিযোগ দিলেও সেই অভিযোগের কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় কোন কিছুর তোয়াক্কা করছেন না তিনি। তাই ভুক্তভোগীরা জানতে চায় দুর্নীতিবাজ বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক শাহ আলম আর কত অপরাধ করলে টনক নড়বে শিক্ষা প্রশাসনের। অভিবাবক ও শিক্ষার্থীরা জানান, ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন শাহ্ আলম। এরপর থেকেই শুরু হয় স্কুলের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি। অনেকেই জানায়, অনিয়ম ও দূর্নীতির মহানায়ক প্রধান শিক্ষক শাহ আলমের ইচ্ছেমতো চলছে বিদ্যালয় । তিনি কারও সঙ্গে আলোচনা না করে উচ্চহারে ভর্তি ফি আদায়, কোনো ক্লাসে না যাওয়া, বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অনুপস্থিতির টাকা আত্মসাৎ, শিক্ষকদের সঙ্গে অশালীন কথাবার্তা এমনকি স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিসহ একের পর এক নানা অপকর্ম করে আসছেন প্রধান শিক্ষক। সচেতন মহলের দাবি এত অপরাধ করার পরেও বিতর্কিত একজন প্রধান শিক্ষক কিভাবে বহাল তবিয়তে থাকেন তাহলে কি শিক্ষা প্রশাসনের চেয়ে শাহ আলমের ক্ষমতা বেশি ? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায় চতুরবাজ শাহ আলম এর আগে যেখানেই চাকরি করেছেন সেখানেই গড়ে তুলেছেন অনিয়ম ও দুর্নীতির মহা আখড়া। জানাগেছে তার চাকরি জীবনে প্রথমে তার নিজ এলাকার ফুলকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয় চাকরি করা অবস্থায় বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাৎ এবং দুর্নীতি ও অনিয়মের অতিষ্ঠ হয়ে তৎকালীন ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি বেধড়ক মারপিট করে তাকে বিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করেন। বিতর্কিত শাহ আলম তার সকল অপকর্ম আড়াল করে ২০০৬ সালে মোহনগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। যোগদান করার কিছুদিন পরেই শুরু হয় তার অনিয়ম ও দুর্নীতি। এমনকি প্রধান শিক্ষক শাহ আলম মোহনগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিকাশ না দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন। তার এই অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন অনেক সহকারি শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। এক পর্যায়ে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে শাহ আলমের অপসারণ চেয়ে ওই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শিক্ষা প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করে সেখান থেকে তাকে বিতারিত করেন। বর্তমানে শাহ আলম সারস্বত গার্লস স্কুল এন্ড কলেজে যোগদান করার পর থেকেই পূর্বের ন্যায় এখানেও অনিয়ম ও দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। সারস্বত গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন। বিতর্কিত শাহ আলম বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোন যোগাযোগ না করে দুর্নীতি পরায়ণ ও বিতর্কিত লোকদের পরামর্শ নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন ম্যানেজিং কমিটির কাজ। প্রধান শিক্ষক শাহ আলমের অনিয়ম আর দুর্নীতির করাল গ্রাস থেকে মুক্তি পেতে সারস্বত স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকের দ্রুত অপসারণ দাবি করেন। বিতর্কিত এই প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন নামতে বাধ্য হবেন বলে জানান তারা।