নবাবগঞ্জে ত্রাণ নিয়ে কিছু সম্পদশালী’র তামাশা

প্রকাশিত: ৮:২৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৯, ২০২০

নবাবগঞ্জে ত্রাণ নিয়ে কিছু সম্পদশালী’র তামাশা

মোঃ হাসিম উদ্দিন আঞ্চলিক , প্রতিনিধি: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনে মানুষ নিজের ঘরে অবস্থান করছেন। এরই মাঝে অনেক সম্পদশালী নিজেকে প্রশাসনের কাছে অসহায় বলে যাহির করছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যখন ফোনকল পেয়ে ওই ব্যক্তিগুলোর বাড়িতে গিয়ে তাঁদের সম্পদ, বাড়ির অবস্থান দেখছেন তখন হচ্ছেন কিংকর্তব্য বিমূঢ়। গত মঙ্গলবার রাতে নবাবগঞ্জ উপজেলার এমন দুটো ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. নাজমুন নাহার তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা দিয়ে (ঁহড় ঘধধিনমধহল উরহধলঢ়ঁৎ) নামের একটি ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেন।যা হুবুহু তুলো ধরা হলো। “দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে বিভিন্ন হাটবাজারে অভিযান পরিচালনা ও ত্রান সহায়তা প্রদান করতে গিয়ে যেটা উপলব্ধি তা উপজেলা নির্বাহি অফিসার হিসেবে মেনে নিতে আজ বড্ড খারাপ লাগছে কারণ যে জনগণকে ভালো রাখার জন্য নিজের ছোট শিশু পরিবারকে বঞ্চিত করে দিনরাত এককরে মানুষকে সচেতন করতে তাদের করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতে আমরা সকলে মিলে ছুটে চলেছি, সম্ভাব্য জায়গায় প্রয়োজনমত ত্রান-সহায়তা সরকারের সাধ্য অনুযায়ী প্রদানের ব্যবস্থা নিচ্ছি, ঢাকা বা নারায়ণগঞ্জ ও অন্যান্য এলাকা থেকে আগত ব্যক্তিদের ত্রান সহায়তা দিয়ে নিজেদের বাসাতে অথবা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে আবদ্ধ থাকতে আপ্রাণ চেষ্টা করছি আজ সেইসব মানুষেরা ভাইরাসকে নয়,যেন উপজেলা নির্বাহি অফিসারকে ও তার গাড়িটাকে ভাইরাস মনে করে ছুটছেন, চলে আসলে আবার নিজেদের জায়গায় এসে গল্প করছেন, অকারণে ঘোরাঘুরি করছেন, কোন কোন সময় নিজের মাকে,সন্তানকে রোগী বানিয়ে ২০১৬/২০১৭ সালের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে পথ্য কেনার বাহানা করে অযাচিতভাবে ঘুরছেন,নিজের যথেষ্ট খাবার থাকার পরও খাবারের আবেদন জানাচ্ছেন যাতে করে প্রকৃত যারা সাহায্য পাবার হকদার তারাও গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলছেন। আজ কয়েকটা বাজারে লোকজনকে জিজ্ঞেস করলাম কি কিনতে বাজারে আসছেন উত্তরের কিছুই বলে না উল্টো পালানোর চেষ্টা করে। বাবা ছেলেকে স্যালুন এ নিয়ে আসছে চুল কাটাতে কিন্তু এই যে আদরের ফুটফুটে শিশুটিকে স্যালুন এ নিয়ে আসলেন বাবা, যদি এখান থেকে কোন কিছু সূত্রপাত হয় পারবেন বাবা হিসেবে নিজেকে মাফ করতে… দুইজন মহিলা ফোন করে বললেন মা দুইদিন হলো না খেয়ে আছি চেয়ারম্যান সাহেবরা তো আমাদের কোন খোঁজও নেয় না, কোন সহযোগিতাও করে না। তখন ঠিকানা নিয়ে খাবার দিতে গিয়ে চোখ কপালে উঠে গেল। তার বাসায় ড্রামভর্তি চাল,আলু পেঁয়াজ কোন কিছুর অভাব নাই, ছাদ পিটানো বাসা বানানো হচ্ছে আরও অনেক কিছু………………….. আপনার এহেন আচরণ এর কারনে আপনার পাশের বাড়ির প্রকৃত গরীব লোকটি বঞ্চিত হচ্ছে। গরীব লোকটি আবার গালি দিবে কাকে……………সরকারকে।

আপনাকে যদি আপনার এহেন আচরনের কারনে আইনের আওতায় আনা হয় কাকে দোষারোপ করবেন…………. সরকারি সিস্টেমকে।
অধিকাংশ মানুষ মাস্ক ছাড়া ঘুরছেন, আপনি কি নিশ্চিত আপনার আশেপাশে কোন করোনা রোগী নেই। আপনার অসাবধানতার জন্য যদি আপনার কিছু হয় তাহলে কাকে দোষারোপ করবেন……………………. তারপরও, আপনাদের ভালো রাখতে আমরা সবসময় মাঠে থাকব, যেকোন প্রয়োজনে আপনাদের পাশে থাকব, সাহায্য সহযোগিতা করবার আপ্রাণ চেষ্টা করব। এই ভাইরাস’র বিরুদ্ধে যাতে আমাদের এই সুন্দর বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে আবার আগের মত মুখরিত করতে পারি আপনাদের সাথে নিয়ে ইনশাআল্লাহ। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে একটাই প্রতিকার ঘরে থাকা। ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন, সুস্থ থাকুন। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা.নাজমুন নাহার বলেন, চলমান করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতে কিছু সম্পদশালী মানুষগুলো প্রশাসনের সঙ্গে তামাশা করছে। তাদের কারনে অন্যরাও বঞ্চিত হবে। দিনাজপুর -৬ আসনে সংসদ ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য এমপি শিবলী সাদিক বলেন,সমাজের সবার ভালোর জন্য আমাদের ত্রাণ নিয়ে তামাশা করা ঠিক হবে না। সমাজকে ভালো রাখতে হলে আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। ইতোমধ্যে বিরামপুর ,নবাবগঞ্জ,ঘোড়াঘাট,হাকিমপুর উপজেলায় ৫০ হাজার পরিবারের মধ্যে খাবার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।


alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest