ঘূর্ণিঝড় আমফানের তান্ডবে মির্জাগঞ্জে বেড়িবাঁধ ও বসতঘর বিধ্বস্ত, ১২ গ্রাম প্লাবিত

প্রকাশিত: ৭:৪৬ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২০

ঘূর্ণিঝড় আমফানের তান্ডবে মির্জাগঞ্জে বেড়িবাঁধ ও বসতঘর বিধ্বস্ত, ১২ গ্রাম প্লাবিত
কামরুজ্জামান বাঁধন,বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ এর তান্ডবে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়াসহ বসতঘর,গাছ- পালা,কাচাঁ-পাকা সড়ক বিধ্বস্ত হয়েছে। পানির নীচে তলিয়ে গেছে রবি ফসলের ক্ষেত ও বীজতলা। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সহস্রাধিক মানুষ । তীব্র স্রোতের তোড়ে বিভিন্ন এলাকার ভেঙ্গে গেছে ৪ কিঃমিঃ বেড়িবাঁধ এবং বিধ্বস্ত হয় কাঁচা-পাকা ৫কিঃমিঃ সড়ক। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গোলখালী, ঘটকের আন্দুয়া, শৌলজালিয়া,রামপুর,চরকান্দা, পায়রাকুঞ্জ,পিপঁড়াখালী, ভিকাখালী,সুন্দ্রা কালিকাপুর এলাকার বেড়িবাঁধ ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে । গত বুধবার রাত সাড়ে দশটার পরে বাতাসের গতি বাড়তে থাকে এবং সেই সাথে পায়রা ও শ্রীমন্ত নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৮-৯ ফুট বৃদ্ধি পায়। তীব্র স্রোতের কারনে বেড়িবাধেঁর বিভিন্ন বাঁধ স্থানে ভেঙ্গে প্রায় ১২টি গ্রামসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানির নিচে তলিয়ে আছে রবি ফসলের ক্ষেত ও বীজতলা। উপজেলার পায়রাকুঞ্জ ফেরীঘাট সংলগ্ন মনোহরখালী লঞ্চঘাটের নব নির্মিত মাটির রাস্তাটি পানির তোড়ে ভেঙ্গে যাওয়ায় পল্টুনের সাথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। আয়লা কানকি রামপুর পায়রা নদীর বেড়িঁবাধের রামপুর সিদ্দিকীয়া মাদ্রাসা থেকে প্রায় ৩০০ ফুট,চর ছৈলাবুনিয়ায় ১০০ফুট, গোলখালী স্লুইসগেট সংলগ্ন বেড়িবাঁধের ১ হাজার ফুট,পূর্ব সুবিদখালী দো-আনী খালের বাধঁ ভেঙ্গে প্রায় দুইশত ফুট,চরখালী গ্রামের আকু দফাদার বাড়ি সংলগ্ন ১০০ ফুট ও মির্জাগঞ্জ মাজার সংলগ্ন ১০০ ফুট বাঁধসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানের বেড়িঁবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। পায়রা নদী তীরবর্তী মনোহরখালী, কাকড়াবুনিয়া, ভয়াং,ভিকাখালী,পিপড়াখালী এলাকার প্রায় অর্ধশত দোকানপাট পানির তীব্র স্রোতে ভেঙ্গে গেছে। পায়রা নদী তীরবর্তী গোলখালী, ভিকাখালী ও শৌলজালিয়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বুধবার রাত সাড়ে দশটার দিকে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮/৯ ফুট পানি বৃদ্ধি পায় এবং তীব্র স্রোতের তোড়ে বিভিন্ন এলাকার ৪ কিঃমিঃ বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকে বসতবাড়ি ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।বিধ্বস্ত হয় কাঁচা-পাকা ৫কিঃমিঃসড়ক। বুধবার সন্ধ্যার পরে তীব্র ঝড়ো হাওয়ায় বিভিন্ন প্রজাতির অর্ধশত গাছ উপড়ে পড়ে সড়কে। গাছ চাপায় ৩০টি বসতঘর সম্পূর্ণ ও ৩ শতাধিক ঘর আংশিক ভেঙ্গে যায়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে উপজেলায় প্রায় ৪ কিঃমিঃ বেড়িবাঁধ ও ৫ কিঃমিঃ পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়াও ৩০টি বসতঘর সম্পূর্ণ ও ৩০০ টি বসতঘর আংশিকভাবে ভেঙে গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সরোয়ার হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে বেড়িবাঁধ,ঘর বাড়ি ও কাচাঁ-পাকা সড়কের কিছু ক্ষতি হলেও প্রাণহানীর কোন ঘটনা ঘটেনি। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির একটি তালিকা তৈরি করে ঢেউটিনের চাহিদাসহ জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।যেসব পরিবার বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদেরকে উপজেলা প্রশাসন থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী দেয়া হচ্ছে। পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবাহী প্রকৌশলী মোঃ হাসানুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় আমফানের কারনে মির্জাগঞ্জে যে সকল বাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে তা পরিদর্শন শেষে তালিকা তৈরী করে ঢাকায় প্রেরন করা হয়েছে। আশা করছি অতি দ্রুত বাধঁগুলো মেরামত করা হবে। #

মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest