বরগুনার কালীরতবকে ‘অপচিকিৎসায়’ মারা যায় ১৩ বছর বয়সী শিশু বায়জিদ মুসল্লী।

প্রকাশিত: ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১, ২০২৫

বরগুনার কালীরতবকে ‘অপচিকিৎসায়’ মারা যায় ১৩ বছর বয়সী শিশু বায়জিদ মুসল্লী।

এ,কে,এম, শাহাদাৎ হোসেন, বরগুনা  #

মোর পোলাডারে টেস্ট না দিয়ে ওষুধ দিছে, ওষুধ খাওয়ার পর পোলাডা মোর মারা গেল, কতবার বললাম- স্যার টেস্ট দেন। কয়, জ্বর নাই- টেস্ট লাগবে না, সুস্থ হয়ে যাবে। তারপর বাড়ি আনার পর রাতে ছেলেটা মোর মারা গেল। মোর পরিবারটা অন্ধকার নেমে এলো।”

 

কথাগুলো বলছিলেন ‘অপচিকিৎসায়’ মারা যাওয়া শিশু বায়জিদের বাবা মো. মামুন মুসল্লী।

 

বরগুনা জেলার কালীরতবক এলাকায় ‘অপচিকিৎসায়’ মারা যায় ১৩ বছর বয়সী শিশু বায়জিদ মুসল্লী।

 

টানা চার দিন জ্বর চলার পর চিকিৎসা সেবা নিতে বিধান রঞ্জন সরকার (ভি.ডি.আর.এম.পি) নামে একজন চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি কোনো রকম টেস্ট ছাড়াই এন্টিবায়োটিক লিখে দেন। সেই ওষুধ সেবন করার পর রবিবার রাত আড়াইটার দিকে মারা যায় শিশু বায়জিদ।

 

এদিকে শনিবার সন্ধ্যার পর পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালান সিনিয়র জুটিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এস এম শরিয়ত উল্লাহ।

 

এ সময় বিএমডিসির অনুমোদন ছাড়া ডাক্তার পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া চারজনকে আটক করা হয়।

 

তাদের নাম জাহাঙ্গীর হোসেন, ইদ্রিস মিয়া, বিধান রঞ্জন রায় এবং জহিরুল ইসলাম সৌরভ। এ সময় অপরাধ স্বীকার করায় তিনজন ভুয়া চিকিৎসককে তিন লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অপর একজন জহিরুল ইসলাম সৌরভ অপরাধ স্বীকার না করায় তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়।

 

সেই বিধান রঞ্জন সরকার মুচলেকা ভঙ্গ করে বরিবার আবার চেম্বার শুরু করেন এবং তার ‘অপচিকিৎসায়’ বায়জিদের মৃত্যু হয়।

 

বরিশাল শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজের মেডিকেল অফিসার এসএম শামসুল আরিফিন বলেন, বরগুনা এখন ডেঙ্গু রোগের রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত। এই সময় একজন পল্লী বা ভুয়া ডাক্তার কীভাবে এন্টিবায়োটিক লিখেন। বাংলাদেশে সাধারণত রেজিস্টার্ড ডাক্তাররাই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ লিখতে পারেন। তাদের অবশ্যই এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ থাকতে হবে এবং অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের নিয়মাবলী সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে।”

 

বরগুনা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকরাম হোসেন বলেন, “বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন ছাড়া ডাক্তার পরিচয় দেওয়ার অভিযোগে শনিবার তিনজন ভুয়া চিকিৎসকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। একজন অপরাধ শিকার না করায় তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।”


alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest