জসীমউদ্দীনের আসমানী কবিতার মতই ‘মানষিক ভারসাম্যহীন ছানোয়ারার জীবন, পাশে দাড়াঁলেন- এমপি শিবলী সাদিক

প্রকাশিত: ৬:০৭ অপরাহ্ণ, জুন ৮, ২০২০

জসীমউদ্দীনের আসমানী কবিতার মতই ‘মানষিক ভারসাম্যহীন ছানোয়ারার জীবন, পাশে দাড়াঁলেন- এমপি শিবলী সাদিক

মোঃ আরিফুজ্জামান জনি নবাবগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি:

প্রতিবন্ধী ছানোয়ারা বেগম। প্রায় ১০ বছর আগেই স্বামী খোকা মিয়া চলে গেছেন না ফেরার দেশে। স্বামী থাকা অবস্থায় ছানোয়ারা বেগম দুই মেয়েকে পাশের গ্রামে বিয়েও দিয়েছেন। মেয়ের জামাইদেরও কোন মতে সংসার চলে। স্বামী মারা যাবার পর সে অনেকটায় মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।

ছানোয়ারা বেগমের বাড়িটি ঠিক পল্লীকবি জসীমউদ্দীন আসমানী কবিতার মতই ‘বাড়িতো নয় পাখির বাসাভেন্না পাতার ছানি, একটুখানি বৃষ্টি হলে গড়িয়ে পড়ে পানি।’ সমস্ত কবিতায় কবি সেই সময়ের মানুষের দুঃখ-দুর্দশার প্রতিচ্ছবি বিধৃত করেছেন। কিন্তু বর্তমান সময়ের সেই আসমানী কবিতার এক প্রতিচ্ছবি ছানোয়ারা বেগম।
ছানোয়ারা বেগমের বাড়ি দিনাজপুর নবাবগঞ্জ উপজেলার ৬ নং ভাদুরিয়া ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামে। সেই গ্রামের ছমেদ আলীর বাড়ির দেয়ালের সঙ্গে থাকা দেড়শতক জায়গার উপর টিনের চালা দিয়ে বসবাস করেন তিনি।

রবিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখতে যান দিনাজপুর-৬ আসনের সাংসদ ও সমাজ কল্যাণন্ত্রনালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য এমপি শিবলী সাদিক। ছানোয়ারা বেগমের বাড়ির অবস্থা দেখে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে তাকে নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এবং তাকে নিজ তহবিল থেকে তিন শতক জায়গা ক্রয়করে দিয়ে সরকারি বাড়ি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

জানতে চাইলে ছানোয়ারা বেগম বলেন,‘ ওমার বাড়ির সঙ্গে টিন দিয়ে কোনমতে থাকি।পানি অ্যালে(এলে) মাথাত পানি পড়ে। মোর ঘরত এটা চকি আর কয়েকনা থালা’।গাওয়ের মানুষ যা দেয় তাই খাও।

ছানোয়ারার টিনের চালার নিচে গিয়ে দেখাযায়, একটি চকি আর কয়েকটি ঘটিবাটিই তার সম্বল। গ্রাম বাসি যে খাবার দেন সেই দিয়েই চলে ছানোয়ারা বেগমের সংসার। সেই কুঠিরেই তিনি একায় থাকেন । এর মাঝের তিনি নামাজ এবং কোরআন তেলাওয়াত করেন।

পাশের বাড়ি ছামেদ আলী বলেন,‘ ছানোয়ারা বেগমের স্বামী অনেক আগেই মারা গিয়েছে। স্বামী মারা যাবার পর তিনি মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। সেই থেকে এখানেই কষ্ঠ করে সে এখনো বেঁচে রয়েছেন’।

জানতে চাইলে ভাদুরিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো.জামাল বাদশা বলেন,‘ করোনা প্রাদুর্ভারে মাঝে ওই নারীর বাড়িতে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার সময় বিষয়টি নজরে আসলে স্থানীয় জাতীয় সংসদ সমস্য ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য এমপি শিবলী সাদিককে বিষয়টি আবগত করা হয়। পরে এমপি মহোদয় নিজে উপস্থিত হয়ে ওই মহিলাকে নিজ তহবিল থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা এবং ৩শতক জায়গা ক্রয়করে দিয়ে সরকারি বাড়ি করে দেবার আশ্বাস দেন।

জানতে চাইলে দিনাজপুর-৬ আসনের সাংসদ ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য এমপি শিবলী সাদিক বলেন, ‘ছানোয়ারার বিষয়টি আমার কানে আশা মাত্র তার বাড়িতে উপস্থিত হয়েছি। তাকে নিজ তহবিল থেকে ২০ হাজার টাকা এবং তিন শতক জায়গা ক্রয় করে দিয়ে সেখানে সরকারি বাড়ি করে দেবার ওয়াদা করেছি’।
এমপি বলেন,‘ করোনা প্রাদুর্ভারে মধ্যে বিরামপুর,নবাবগঞ্জ,ঘোড়াঘাট,হাকিমপুর উপজেলায় ৫০ হাজার অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছি।আমার নির্বাচনী এলাকায় সকল মসজিদে ইমাম ও মুয়াজ্জিন দের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছি। চার উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের জন্য পিপিইসহ ১০ লক্ষ টাকার চিকিৎসা সামগ্রী প্রদান করেছি’।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest