চিকিসককে মারধর করলেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা,পরিচালকের নিকট বিচার দাবি

প্রকাশিত: ৯:৫৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০২০

চিকিসককে মারধর করলেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা,পরিচালকের নিকট বিচার দাবি

বরিশাল অফিস ॥ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট-৪ এর সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মাসুদ খানকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ঘটনার পরদিন বুধবার দুপুরে ডা. মাসুদ খান এই লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ও একাডেমিক পদেক্ষপ নেয়ার আবেদন জানান। অভিযোগপত্রে তিনি ইন্টার্ন চিকিৎসক সজল পান্ডে ও তরিকুল ইসলামসহ ৮ থেকে ১০ জনের কথা উল্লেখ করেছেন। গত মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় তারা তাকে মেডিসিন বিভাগের ইউনিট-৪ এর অফিস কক্ষে আটকে লাঞ্ছিত করেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। আবেদনের অনুলিপি শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এবং সংশ্লিস্ট বিভাগীয় প্রধান বরাবর দেয়া হয়। তবে কি কারনে এ হামলা হয়েছে তা লিখিত অভিযোগে স্পষ্ট করেননি ডা. মাসুদ।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে মেডিসিন ইউনিট-৩ ও ৪ এর দায়িত্বরত একাধিক নার্স জানান, মেডিকেলে নিয়ম নেই কোন চিকিৎসক রোগীদের তার নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠাতে পারে। কিন্তু ডা. মাসুদ নার্স থেকে শুরু করে আয়া-বুয়াদের নির্দেশ দিয়েছেন তাদের নির্ধারিত তিন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করানোর জন্য। না করালে তাদের পরীক্ষার রিপোর্ট দেখা হবে না বলে রোগীদের সাফ জানিয়ে দিতে বলেন। আর তাদের নির্দেশ না মানলে ওই দুই চিকিৎসক নার্স ও আয়া-বুয়াদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকি নির্ধারিত ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে পরীক্ষা না করার কারণে একাধিকবার পরীক্ষাপত্র রোগীর সামনে ছিড়ে ফেলেছেন। এ কারণে আমরাও তাদের নির্দেশ মানতে বাধ্য হই। ইন্টার্ন চিকিৎসক সজল পান্ডে জানান, ডা. মাসুদ খান তার পূর্ব নির্ধারিত ৩টি ডায়াগনস্টিকে রোগী পাঠান। এর বাইরে কোন ডাগায়নস্টিক থেকে রোগীরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করালে সেই রিপোর্ট ছুড়ে ফেলেন। ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং ছাত্রলীগকে দেয়ার কথা বলে তিনি (মাসুদ খান) বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করেন। ওই টাকা নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর পেছনে খরচ করেন এক সময়ের ছাত্রশিবির নেতা মাসুদ খান। ছাত্রলীগের নামে টাকা আদায় করে জামায়াতের পেছনে ব্যয় করার কারন জানতে চাইলে উল্টো তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন।

এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য তিনি মারধরের অভিযোগ তুলছেন বলে দাবী করেন। বিষয়টি দুঃখজনক উল্লেখ করে অভিযুক্তদের বিচার হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন বরিশাল জেলা বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন। হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এবং চিকিৎসক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের আলোচনা হয়েছে। মূল ঘটনা খুঁজে বের করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই দুই চিকিৎসক তাদের নির্ধারিত ৩টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীদের পরীক্ষা করতে বাধ্য করছেন। বিষয়টি ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টরা জানতে পারেন। মঙ্গলবার দুপুরে ডা. মাসুদ খানের কক্ষে গিয়ে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এর এক পর্যায়ে ওই দুই চিকিৎসক ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সাথে খারাপ আচরন করেন। এমনকি তাদেরকে গালাগালও করা হয়। একপর্যায়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ডা. মাসুদকে লাঞ্ছিত করেন।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest