ঝালকাঠিতে আবহাওয়ার হঠাৎ রূপ বদল, শীতের আমেজ

প্রকাশিত: ৪:০৮ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০২০

ঝালকাঠিতে আবহাওয়ার হঠাৎ রূপ বদল, শীতের আমেজ

রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, ঝালকাঠি:
ঝালকাঠিতে আবহাওয়ার হঠাৎ রূপ বদল, শীতের আমেজ।
হঠাৎ এই আবহাওয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দেয়। কদিন আগেও যেখানে বেশ গরমের অনুভূতি ছিল, সেই আবহাওয়ায় এখন শুরু হয়েছে শীতে শীত ভাব। খোদ রাজধানীতেও শীতের প্রভাব ফেলেছে। তবে উত্তর বঙ্গে শীত নেমে এসেছে ব্যাপকভাবে।গ্রাম বাংলায় শীতের অনুভূতি ভালভাবেই বোঝা যাচ্ছে। দিনের রোদের প্রচ-তা কেটে গেছে। আগের মতো আর গরমের ভাব নেই। আবহাওয়া অফিসের হিসেবে দেখা গেছে দেশের কোথাও কোথাও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে এসেছে


তারা জানায়, আগামী কয়দিনেই রাতের তাপমাত্রা আরও কমবে। ফলে এই সময়ের মধ্যে রাতে শীতের অনুভূতি ভালই বোঝা যাবে। যদিও ঋতুর হিসেবে শীত আসতে এখনও বাকি দেড়মাস। তবে বৈচিত্র্যের কারণে গ্রাম বাংলায় অনেক আগেই শীত নেমে যায়। তবে এবার বর্ষার (মৌসুমি বায়ু) বিদায়ে বিলম্ব হওয়ার কারণে দেরিতে শীতের অনুভূতি শুরু হয়েছে। এছাড়া গোটা অক্টোবরজুড়ে নিম্নচাপ এবং লঘুচাপের প্রভাব থাকার কারণে বাতাসে জলীয় কণার উপস্থিতি বেশি ছিল। এ কারণে দিন ও রাতে এতদিন শীতের অনুভূতি ছিল না বললেও চলে। শেষ পর্যন্ত নবেম্বরের ৩ তারিখ থেকেই সব জটিলতার অবসান হয়েছে। বাতাসে শীতল অনুভূতি শুরু হয়েছে।

ঢাকাসহ সারাদেশেই ভোর রাতে বেশ শিশির জমছে ঘাসের ওপর। সারাদেশের তাপমাত্রা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে কয়েকদিনেই তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমে এসেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ঢাকায় ৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এদিন সন্ধ্যায় তা নেমে ৩০.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে দাঁড়ায়। এছাড়া ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে ১৯.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসে চলে এসেছে।

অন্যান্য বিভাগের তাপমাত্রা কমে গেছে অনেক। আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ১৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। রাজশাহীতে ১৬, খুলনায় ১৯, বরিশালে ২০.৪, সিলেটে ২৩, ময়মনসিংহে ১৭, চট্টগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে চলে এসেছে। এছাড়া সব বিভাগেই তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রী থেকে এর নিচে অবস্থান করছে। আবহাওয়া অফিস জানায় গড় তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে নামলেই তাকে শীত হিসেবে ধরা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদ রংপুর বিভাগের রাজারহাটের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছিল ১৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। তাপমাত্রা নেমে আসার কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলে রাতের বেলায় শীত ভালই অনুভব হচ্ছে। এছাড়া দিনের বেলায় রোদের তীব্রতা অনেক কমেছে। বাতাসের গরমের তীব্রতা নেই বললেই চলে।

তারা জানায়, বাতাসে শীতের আবহ শুরু হলেও এখনি জমিয়ে শীত আসছে না। এরজন্য ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে আগামী কয়েকদিনে দেশে তাপমাত্রা আরও কমবে। বিশেষ করে রাতের তাপমাত্রা বেশ নেমে আসতে পারে। এ কারণে শেষ রাতে শীতের অনুভূতি বেশি হতে পারে বলেও তারা জানায়।

প্রকৃতিতে এখন চলছে মধ্য কার্তিক। এর পরই আসবে অগ্রহায়ণ মাস। এই মাসে সারাদেশে ধানকাটা শুরু হয়। দীর্ঘ বন্যা পেরিয়ে কৃষকের মুখে এখন ফসলের হাসি। তারা অপেক্ষা করছে ধানকাটার। আর কয়দিন পরই ধানকাটা শুরু হবে। ধান কাটতে কাটতে গ্রাম বাংলায় শুরু হবে শীতের গান। শিশির ভেজা সকাল আর খেজুরের মিষ্টি রসের মিতালি শুরু হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে রাজধানীতে গরম কাপড়ের ব্যবহার শুরু না হলে গ্রাম বাংলায় রাতে গরম কাপড়ের ব্যবহার শুরু হয়েছে। দিন যত যাবে শীতের মাত্রা আরও বাড়বে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে হেমন্তকাল হচ্ছে শরৎ ও শীতকালের মধ্যবর্তী একটি পরিবর্তনশীল পর্যায়। দিনের শেষে তাপমাত্রার ব্যাপক পতনের ফলে নবেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই বিকেলে হিম পড়তে শুরু করে। আর ঘাসের ওপর জমে শিশির। কুয়াশাও দেখা যায়। সাধারণভাবে সর্দি, কাশি, জ্বর প্রভৃতি রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয় এই ঋতুতে বেশি। মাঠে মাঠে থাকে সোনালি ধান। চাষীরা ধান কেটে ঘরে তোলে এবং ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব শুরু হয়। এখন কৃষকের জন্য প্রকৃতিতে অপেক্ষা করছে নবান্নের। নবান্ন শেষ হলেই জেঁকে নামবে শীত। আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, এবারও মধ্য ডিসেম্বর থেকে জেঁকে শীত নামতে পারে।

দেশে যতগুলো ঋতু আছে এর মধ্যে শীতকাল সবচেয়ে সুন্দর ও আরামদায়ক ঋতু। শীতঋতুর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নিম্ন তাপমাত্রা, পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিমদিক থেকে আগত শৈত্যপ্রবাহ, মুক্ত আকাশ আর বৃষ্টিহীনতা কিংবা যৎসামান্য বৃষ্টিপাত। দেশের একেবারে উত্তর-পশ্চিমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকে ডিসেম্বর মাসের শেষদিকে এবং জানুয়ারি মাসের প্রথমভাগে, তাপমাত্রা ৩ থেকে ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে যায়। এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চল বাদে দেশের আবহাওয়া শুষ্ক রয়েছে। রাতে কোন কোন অঞ্চলে তাপপাত্রা ২০ ডিগ্রীর নিচেও নামছে। আগামী তিনদিনে রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। আবহাওয়ার এ পরিবর্তনে স্বাস্থেরও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রায় মানুষই জ্বর,ঠান্ডা, কাশির শিকার হচ্ছে।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest