ভারত থেকে সন্তানকে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের দ্বারস্থ ভোগডাঙ্গার এক অভাগী মা

প্রকাশিত: ৮:১৭ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০২০

ভারত থেকে সন্তানকে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের  দ্বারস্থ  ভোগডাঙ্গার এক অভাগী মা

সাইফুর রহমান শামীম,,
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : ২৬.১১.২০২০
প্রায় বছর তিনেক আগে অভাবের তাড়নায় দিনমজুর পিতার সাথে ঢাকা যাওয়ার পথে রাস্তায় হারিয়ে যায় ছেলেটি। ছেলেকে হারিয়ে সন্তানের পিতা এখন প্রায় আধা পাগল হয়ে পড়েছে। মাস তিনেক আগে ভারতে ছেলের খোজ মেলায় সন্তানকে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের দ্বাঁড়ে দ্বাঁড়ে ঘুড়ছেন এক অভাগী মা। সরকারর কাছে সন্তানকে ফিরিয়ে আনার দাবী দরিদ্র বাবা-মায়ের।

ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের মাস্টার পাড়া মাধবরাম কাচিচর গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর সারাব আলীর(৭০) ও মরিয়ম বেগম(৪২) দম্পতির। এক ছেলে ও এক মেয়ে সহ চার জনের সংসার। নিজেের ভিটে মাটি না থাকায় আত্নীয়-স্বজনদের দেয়া ৩/৪শতক জমিতে কোন রকমেই ছাপড়া ঘর তুলে দিন কাটিয়ে দেয় তারা। এরমধ্যই ২০১৭সালের ভয়াবহ বন্যার পর অভাবী এলাকায় কর্মহীন হয়ে পড়ে দিনমজুর সারাব আলী। তাই কাজের সন্ধানেএকমাত্র ছেলে মোফাছল হক(১৬) কে নিয়ে ঢাকা রওনা দেয়। পথিমধ্যে বাসের যাত্রাবিরতীর সময় সন্তানকে হারিয়ে ফেলেন সারাব আলী। অনেক খোজ-খবর করেও সন্তা
নের সন্ধান পায়নি পরিবারটি। ফলে সন্তান হারানো শোকে সারাব আলী আধা পাগল হয়ে পড়ে। দীর্ঘ তিন বছর পর সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন সূত্রে জানতে পারে তাদর সন্তান বর্তমান ভারতর আলীপুরদুয়ার বলস্নাক কালচিনি জেলার জায়গাও থানার বস্নস ফাউন্ডশন রিহ্যাভিলিটিটশন সটার ফর (ড্রাগ এ্যালকাহাল) ডিপন্ডট পারসন,রামগাঁও ফায়ার নিউ রোড জায়গাও-৭৩৬১৮২ স্থানে রয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে সন্তানের বিষয়টি নিশ্চিত হয় পরিবারটি। এরপর থেকে সন্তানকে ফিরিয়ে আনতে লিখিতভাবে জানিয়ে প্রশাসনের দ্বাঁরে দ্বাঁরে ঘুড়ছেন মরিয়ম বেগম।

মরিয়ম বেগম বলেন, কাজের সন্ধানে গিয়ে ছেলেকে হারিয়ে ফেলায় তার বাবা প্রায় পাগল হয়ে গেছে। তখন থেকেই পাগল হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা । কোন কাজ কর্ম করতে পারেনা সে। অভাবের তাড়নায় মেয়েটাকে বিয়ে দিয়েছি অনেক আগেই। এখন অন্যর বাড়িতে কাজ করে স্বামী-স্ত্রীর দু’জনের খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। ছেলেকে অনেক খুঁজেও কোন লোভ হয়নি। কোথাও ছেলের হদিস পাওয়া যায়নি। প্রায় তিন মাস আগে স্থানীয় এক বাসিন্দার আত্নীয় ভারতে থাকে তার মাধ্যমেই আমার মোফাছলের সন্ধান আসে। সেই লোক আমার ছেলের সাথে কথা বলে নাম ঠিকানা পাওয়ায় ফেসবুকে ছবি দিলে আমরা তার সাথে ফোনে কথা বলে নিশ্চিত হই। এখন আমি সরকারের কাছে জোড় দাবী করছি আমার বুকের ধনকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে দেক।
বস্নস ফাউন্ডেশন রিহ্যাভিলিটিটশন সেটার ফর (ড্রাগ এ্যালকাহাল) ডিপন্ডেট পারসন সংস্থার জমির মালিক দাদিরাম বসুনিয়া বলেন,আমরা প্রায় ৩বছর আগে পথে পাগলের মতো করে এখানে ঘুরছিল। এরপর তাকে নিয়ে এসে আমরা লালন-পালন করছি। এখনও আমাদের কাছেই রয়েছে। ছেলেটির কাছ থেকেই ওর বাবা-মায়র পরিচয় পাই। বাংলাদশে আমার পরিচিত অনেকের সাথে যোগাযোগ করে ওর বাবা-মায়ের খোজ পাওয়া যায়। এই বিষয়ে অনেকের সাথে কথা হলেও কেউ ছেলেটিকে ওর পরিবারের নিকট ফেরত দেবার বিষয় উদ্যাগ নেয়নি। দু’রাষ্ট্রর এ্যাম্বাসির মাধ্যমে ফেরত পাঠানা সম্ভব বলে তিনি জানান।

এই বিষয়ে ভোগডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান জানান, ভুক্তভোগি পরিবারটি আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা। ছেলেটি হারিয়ে যাবার প্রায় তিন বছর হলো । পর আমিও জানতে পারি মোফাছল হক ভারত আটকা আছে। আমি দরিদ্র বাবা-মায়ের হয়ে সরকারের কাছে অনুরোধ করছি তাদের সন্তানকে যেন ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন,এই বিষয় একটি লিখিত আবদেন পেয়েছি। আমি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয় ব্যবস্থা নেবেন।


মুজিব বর্ষ

Pin It on Pinterest