কবর দখল করে বসতঘর নির্মাণ সহ নানা অপকর্মে ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সহ এলাকাবাসী অতিষ্ঠ।

প্রকাশিত: ৫:৪৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৫, ২০২০

কবর দখল করে বসতঘর নির্মাণ সহ নানা অপকর্মে ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সহ এলাকাবাসী অতিষ্ঠ।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : ০২.১২.২০২০

কুড়িগ্রামের উলিপুরে বরেণ্য শিক্ষক আছাব্বর আলী ওরফে খোকা মাস্টার এর কবর দখল করে কবরের ওপর বসত ঘর নির্মাণ, সন্তানদের ভিটে ছাড়া, বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল আজিজ সরকারকে লাঞ্চিত ও অশালীন ভিডিও প্রকাশ, বীরমুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন ও তার ভাই মন্জু মিয়ার বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট, মোঃ সালাম মিয়ার বাড়িঘর উচ্ছেদ করে জায়গা দখল, অসহায় নারীর গরু চুরি করে উল্টো গরুর মালিকের সম্মানহানীসহ উচ্ছেদের হুমকি ও একাধিকবার মারপিটের ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই রঘুরায় ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের খাদিজা কামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, মাহাবুবার রহমানের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় তার গঠিত বাহিনীরা একই গ্রামের প্রতিবেশী সাবেক সেনাসদস্য আলতাফ হোসেনের স্ত্রী মোছাঃ হাসিনা বেগমের দিনে-দুপুরে দুইটি গরু চুরি করে। এ ঘটনায় মোছাঃ হাসিনা বেগম বাদী হয়ে উলিপুর থানায় একটি জিআর মামলা করেন। মামলা নং-১৯০/২০।

মামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোঃ মাহাবুবার রহমান গংরা, মোছাঃ হাসিনা বেগমের স্বামী আলতাফ হোসেনকে অপহরণ করে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে মারপিঠ ও যখম করে পুলিশের মোড় নামক স্থানের পার্শ্বে গর্তে ফেলে যায়। এলাকাবাসী উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি এখনো মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন।

হাসিনা বেগম জানান, কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক জানিয়েছেন মারডাং এর ফলে তার শরীরের ভিতরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে রক্ত জমাটসহ বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এখন তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। উন্নত চিকিৎসার বিষয়ে অসহায় পরিবারটি খেয়ে না খেয়ে জীবন-যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে উলিপুর থানায় একটি জিআর মামলা করেন। মামলা নং-২১৯/২৯ ।

মামলার বিষয়ে পরিবারের এক সদস্যের স্বাক্ষী দেয়াকে কেন্দ্রকরে একই গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা সাবেক সেনাসদস্য, মুক্তিযোদ্ধা জাদুঘর কমপ্লেক্স ও ধানমন্ডি ৩২ নং বঙ্গবন্ধু মিউচুয়াল ট্রাস্টের দাতা সদস্য মোঃ আব্দুল আজিজ সরকারকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে প্রাত:ভ্রমণের সময় মাহাবুবার রহমান গংরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্চিত করেন। এবিষয়ে একটি জিডি দায়ের হয়, জিডি নং-১২১০/২০ ।

এতে মাহাবুবার রহমান গংরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ফেসবুকে বীরমুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর পরিবারকে নিয়ে একের পর এক সম্মানহানিকর পোস্ট দিয়ে যাচ্ছেন। বীরমুক্তিযোদ্ধার নাম উল্লেখপূর্বক “জয়যাত্রা টিভি”তে তাঁকে নিয়ে মাহাবুবার রহমান অশালীন বিকৃত ও জঘন্য বক্তব্য রাখেন এবং তা প্রকাশিত হয় যাহা অনলাইনেও ছড়িয়ে দেয়া হয়।

বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল আজিজ জানান-
“কবর দখলকরে বসতঘর নির্মাণ” শিরোনামের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবরের ফলে মোঃ মাহাবুবার রহমান গংদের নামে সকল কু-কর্মের অন্যতম সহোযোগি মোঃ হারুন অর রশিদ, পাঁচপীর দুর্গাপুর বাজারের আলোচিত তৎকালীন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসককে মাথা ফাটিয়ে দেয়ার মামলায় ২নং সাজাপ্রাপ্ত আসামি, বর্তমানে হাইকোর্টের জানিনে থেকে মাদকসহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে।

এই সন্ত্রাসি চক্রটি বসতঘরের ভিতরে কবর রেখেই শুধু এক পাশের বেড়া সরিয়ে রেখে আমাকে এবং আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের লোকসমাজে হেয়প্রতিপন্ন করাসহ সম্মানহানি করার এক পর্যাযে মোঃ মাহাবুবার রহমানের প্রত্যক্ষ নির্দেশে তার আপন ছোট ভাই মিজানুর রহমান মিঠু একাধিক মাদক মামলাসহ অন্যান্য মামলায় অভিযুক্ত, বোন ও পরিবারের অন্যান্যদের নিজ নিজ নামীয় আইডি থেকে বিকৃত তথ্য অশালীন ভাষা লিখে আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের ছবি ব্যবহারকরে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়।

তিনি আরও বলেন, একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মাহাবুবার রহমান কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া একজন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে কি করে টেলিভিশন চ্যানেলে বক্তব্য দিয়েছেন, এ বিষয়ে আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি এবং বিচার দাবী করছি। তিনি ০৩ অক্টোবর ২০২০ ইং তারিখে “জয়যাত্রা টিভি”র বিকেল ৫ টার “জয়যাত্রা জেলা বার্তা” সংবাদ অনুষ্ঠানে আমার নাম বিকৃতরূপে উল্লেখকরে অশালীন মানহানিকর জঘন্যতম এক ভিডিও তথ্য প্রকাশ করেন। অপরদিকে জাতীর সূর্য্য সন্তান বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানহানি কর কার্য্যকলাপের সুবিচার দাবী করছি। একজন সরকারি শিক্ষক হয়ে তার ফেসবুক আইডি কিভাবে জামাত, বিএনপির প্লাটফর্ম হিসাবে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে ব্যবহৃত হয় ? আইসিটি -৫৭ ধারায় এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আমরা উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় সকল মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন গুলোকে এক করে দ্রুততম সময়ে বৃহত্তম আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শহীদুল ইসলাম জানান, অভিযোগেরে ভিত্তিতে মাহাবুবার রহমানের অভিযোগগুলো তদন্ত করে অতিসত্বর প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উলিপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest