কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ভিজিএফ চাল বিতরণের শেষ দিনটিও নানা অনিয়মে ভরা

প্রকাশিত: ১০:০৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১০, ২০১৯

ফলোআপ-১

খাদেমুল মোরসালিন শাকীর, কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী) প্রতিনিধি ॥
কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ভিজিএফ চাল বিতরণের শেষ দিনটিও নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে চাল বিতরণ করা হয়েছে। তবে নিয়ম রক্ষা করে বিতরণ প্রক্রিয়া শনিবারের মধ্যে শেষ করার জন্য প্রশাসন মাঠে জোড় তৎপরতা চালিয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারে পবিত্র ঈদ উল আযহা উপলক্ষে ৮ শ’ ৪৮ দশমিক ২০৫ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এর বিপরীতে ৫৬ হাজার ৫৪৭ খানায় প্রতিজন ১৫ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা। এসব চাল বিতরণের শেষ দিন ৮ আগস্ট নির্ধারণ করা হলেও অনেক ইউপি চেয়ারম্যান বিতরণ শেষ করতে পারেনি। ফলে আরও দুই দিন সময় বৃদ্ধি করে ১০ আগষ্ট পর্যন্ত করা হয়। বিতরণের এই দীর্ঘ সময় মহাভোগান্তিতে পড়েছিল অনেক দুঃস্থ্য পরিবার। বিতরণের শেষ দিন গত শনিবার বেলা ৩টার দিকে পুটিমারী ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, চাল নিতে আসা প্রায় শতাধিক ব্যক্তি পরিষদ মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চালের জন্য অপেক্ষা করছে। চেয়ারম্যান আবু সায়েম লিটন তার অফিস কক্ষে কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে খোশগল্পে মেতে রয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদ সূত্র জানায়, পরিষদ’র গোডাউনে এখনও ১ হাজার ১ শ’ ৮২ বস্তা চাল মজুদ রয়েছে। এখনও দলীয় লোকজনের তালিকা পাইনি। এছাড়া ২টি ওয়ার্ডের সদস্য’র চাল বিতরণ করা হয়নি। প্রশাসন কর্তৃক শনিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিতরণের শেষ সময় বেঁধে দেয়া হলেও এ নিয়ে তার কোন মাথা ব্যথা নেই। পরবর্তীতে প্রশাসনের চাপের মুখে বিতরণ শুরু করলে দেখা যায় অনেকে ভ্যানে ভ্যানে করে চাল নিয়ে যেতে দেখা যায়।

একই দিন মাগুড়া ইউনিয়ন পরিষদ গেলে সবুজপাড়া গ্রামের মহুবন বেওয়া (৭০) বলেন,‘মুই বিহানে আলচুং ব্যাহে, বিয়ান থাকি বেলা গড়ি গেল তাও চাউলের কোন খবর নাই। চেয়ারম্যান বেলে কোনটে গেইচে, চেয়ারম্যান যদি আসি চাইল দেয় তাইলে আইতোত মুই ভাত খাবার পাইম। তখন দুপুর ১:৩০ মিনিট। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে প্রায় শতাধিক দুঃস্থ্য মহিলা ঘিরে ধরেন। এর মধ্যে বয়স্ক নারী দুঃস্থ্যদের সংখ্যা বেশী। এ সময় কথা হয় তেলী পাড়ার শাহেদা বেগম,তমিলা বেওয়া,হামিদা বেওয়ার সাথে। তারা সকলেই বলেন,ভিজিএফ চাল আগে বিত্তবানরাই পেয়েছে। আমাদের খেয়াল কেউই রাখেনা। ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পলি বেগম তাদের চাল নিতে আসতে বলেছেন। কিন্তু তাদের হাতে চাল প্রাপ্তির কোন কার্ড দেয়া হয়নি। মাগুড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহ্মুদুল হোসেন শিহাব বলেন, আমি ৯৫ ভাগ চাল বিতরণ করেছি। অবশিস্ট ৫ ভাগ চাল দ্রুতই শেষ করা হবে।

বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফজলার রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নে ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে যে ওয়ার্ডে উত্তর প্রান্তে ঈদুল ফিতরে ভিজিএফ দিয়েছি ঈদুল আযহায় ওই ওয়ার্ডের দক্ষিণ প্রান্তে দিয়ে শতভাগ ভিজিএফ বিতরণ শেষ করা হবে।

নিতাই, বাহাগিলী, কিশোরগঞ্জ, চাঁদখানা, রণচন্ডি ও গাড়াগ্রাম ইউনিয়নে তালিকা প্রনয়নে হযবরল অবস্থা দেখা গেছে। এদিকে রনচন্ডী ইউনিয়নে তালিকায় ছবিতোন বেওয়ার নাম থাকলেও চাল নিয়েছেন অমিজন নেছা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, শনিবার বিকাল ৬টা পর্যন্ত চেয়ারম্যানদের ভিজিএফ চাল বিতরণ শেষ করতে বলা হয়েছে। যে চেয়ারম্যান চাল বিতরণ শেষ করতে পারবে না তাদের গোডাউনে সিলগালা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে.


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest