পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা জাহাজমারা সমূদ্র সৈকত

প্রকাশিত: ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১১, ২০২০

পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা জাহাজমারা সমূদ্র সৈকত
আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা কলাপাড়া প্রতিনিধি:-  বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে সমুদ্রের বুকে জেগে থাকা দ্বীপ জাহাজমারা। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য নিয়ে জেগে আছে নয়নাভিরাম এ দ্বীপ। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের মৌডুবীতে এ দ্বীপের অবস্থান। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে এটির দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। দ্বীপের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা খাল। আছে পাখি, বন্য প্রাণী। আর চারপাশে নিরিবিলি পরিবেশ। এখানকার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য সবার চোখ জুড়িয়ে দেবে। উপজেলা সদর থেকে পনেরো কিলোমিটার দূরে মৌডুবী বাজারের কাছে বেড়িবাঁধের বাইরে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে জেগে আছে দেশের সম্ভাবনাময় পর্যটন কেদ্র জাহাজমারা সমূদ্র সৌকত। সমুদ্রতীরে দীর্ঘ সৈকতের পাশে রয়েছে বন বিভাগের ঘন বনাঞ্চল। সমুদ্রের ঢেউ আর সবুজ প্রকৃতি এ এলাকার পরিবেশকে করে তুলেছে মোহনীয়। পর্যটন মৌসুম এলেই কিছু ট্রলার পর্যটকদের নিয়ে জাহাজমারায় যাতায়াত করে। কুয়াকাটা থেকে কিংবা রাঙ্গাবালী থেকে এসব স্থানে ট্রলার ও মটর সাইকেল যাতায়াতের সুযোগ রয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর্ষণে নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে পর্যটকেরা এসব স্থানে আসেন কিছুটা প্রশান্তির খোঁজে। জাহাজমারা সমূদ্র সৈকত ছবির মতো সুন্দর। এখানে যেমন রয়েছে নৈসর্গিক রূপ, তেমনি রয়েছে নদী, পুকুর ও বিলে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির সামূদ্রিক সুস্বাদু মাছের ছড়াছড়ি। এছাড়া দেশি হাঁস-মুরগি পাওয়া যায়। গরু-মহিষের দুধ, দই, খেজুর রস পাওয়া যায়। রয়েছে নানা রকম শাক-সবজি ও ফসলের ক্ষেত। মাঝ দরিয়ায় অপূর্ব সবুজের বেষ্টনি দর্শনার্থীর মন কেড়ে নেয়। নদীর বুকে অথৈ জলের মাঝে ছোট ছোট দ্বীপ-বন । এসব বনে পাখির মেলা। বক, চিল, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, বালিহাঁস, ময়না, টিয়া, ঘুঘুসহ আরও কত রকমের পাখি রয়েছে! এখানে শীতকালে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে। জেলেদের সাথে পাল্লা দিয়ে পাখিরাও মাছ শিকার করে। দলবেঁধে পাখিদের ওড়াউড়ি মন কেড়ে নেয়। সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে আকাশের রংধনু নদীর বুকজুড়ে মিতালী গড়ে তোলে। মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখে প্রাণ জুড়ায়। এখানে আসতে হলে ঢাকা সদরঘাট থেকে লঞ্চে অথবা ছায়দাবাদ এবং গাবতলী থেকে বাসে চরে পটুয়াখালী ও কলাপাড়া আসতে হবে। কলাপাড়া থেকে স্পীডবোড, লঞ্চে, করে মৌডুবী দেখা মিলবে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য। স্থানীয়দের দাবি, জাহাজমারাকে যদি পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা হয় তাহলে বদলে যাবে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য। পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটলে তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থান। অর্থনৈতিক উন্নয়নেও এগিয়ে যাবে এ অঞ্চল, এমনটাই মনে করেন সচেতন মহল। সরকার যদি জাহাজমারাকে পর্যটন স্পট করার উদ্যোগ নেয় তাহলে এ এলাকায় প্রচুর মানুষের সমাগম হবে এবং দেশের অর্থনীতিও লাভবান হবে। জাহাজমারা ট্যুরিজমের ব্যবস্থপনা পরিচালক আজিজুর রহমান সুজন বলেন, এখন থেকে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা কুয়াকাটা থেকে ট্রলার বা স্পিডবোট করে জাহাজমারা এ পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে যাওয়া যাবে দূষন কোলাহল মূক্ত এলাকা এখানে আসলে মনাট প্রশান্তিতে ভরে যায়। ঢাকা থেকে আসা পর্যটক আনোয়ার হোসেন জানান, বাংলাদেশের শেষ প্রান্তে এত সুন্দর জায়গা না আসলে বিশ্বাস করা সম্ভব না, জাহাজমারা সমূদ্র সৈকত একটি আদর্শ পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। তবে এ জন্য যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন দরকার। তাহলে পর্যটকদের যাতায়াত বাড়বে । রাঙ্গাবালী উপজেলা চেয়ারম্যান ডাঃ জহির উদ্দিন আহম্মেদ বলেন , রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী জাহাজমারা দৈনিক তিন থেকে চারশত এবং ছুটির দিনে দুই তিন হাজার পর্যটক আসেন, আমাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাহাজমারাকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে।

মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest