ভিসির দুঃখ প্রকাশে শাবিপ্রবির আন্দোলন প্রত্যাহার

প্রকাশিত: ৯:৩৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২

ভিসির দুঃখ প্রকাশে শাবিপ্রবির আন্দোলন প্রত্যাহার

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি ও লাঠিচার্জের ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।তার দুঃখ প্রকাশের পর ২৭ দিন ধরে চলমান আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন তারা।

সংবাদ সম্মেলন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, ‘দাবি পূরণে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা আপাতত আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। আমরা চাই কালকে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হোক। বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিকভাবে চলুক। যাতে শিক্ষার্থীদের সেশন জটে পড়তে না হয়।’

রাজ বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শুক্রবার অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। মন্ত্রী আমাদের প্রায় সব দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। একই সঙ্গে আমাদের মূল দাবি উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি আচর্যকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন।

‘আশা করি বিষয়টি জেনে মহামান্য আচার্য এই অযোগ্য উপাচার্যের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। মন্ত্রী যেহেতু আশ্বাস দিয়েছেন তাই আমরা কিছুদিন দেখতে চাই। এ কারণে আন্দোলন স্থগিত করছি।’

এর আগে শনিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্য বলেন, আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ যারা আহত হয়েছেন, তাদের সবার প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছি।উক্ত ঘটনার ধারাবাহিকতায় সৃষ্ট অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক অবস্থা দ্রুত ফিরিয়ে আনতে শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে শিক্ষা উপমন্ত্রীসহ সরকারের সব স্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ সিলেটের সুশীল সমাজের সবাইকে এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে জানাই আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নিরসনে মিডিয়া কর্মীদের যারা দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছেন, তাদেরও জানাচ্ছি ধন্যবাদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর ও স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের এ প্রিয় প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা সম্ভব হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জানুয়ারি একটি হলের প্রভোস্টকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন এ হলের ছাত্রীরা। পরে ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের কর্মীরা ছাত্রীদের আন্দোলনে হামলা চালালে পরের দিন হামলার প্রতিবাদ ও একই দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।

ওই দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিপেটা, শটগান, গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। ওই দিন রাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস ও হল বন্ধ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর থেকেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।


alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest