ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:৪২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২১, ২০২২
আবু রায়হান, জয়পুরহাটঃ
জয়পুরহাটের অবৈধভাবে কিডনি ক্রয়-বিক্রয় দালাল চক্রের সক্রিয় ৩ জন মূল হোতা, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জাল ডকুমেন্টস তৈরি চক্রের মূল হোতাসহ ৩ জন এবং বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার চুরি চক্রের ৪ জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানিক দল।
বুধবার (২০ জুলাই) জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার পুনট বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে কিডনি চক্রের ৩ জন, জয়পুরহাট পৌর মার্কেট থেকে
জাল ডকুমেন্টস তৈরীর ৩ জন ও পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে ট্রান্সফর্মার চুরি চক্রের ৪ জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভা কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট পুলিশ সুপার মাসুম আহাম্মদ ভূঞা।
গ্রেফতারকৃত কিডনি বিক্রয় চক্রের সদস্যরা হলেন, কালাই উপজেলার সরাইল গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে ফুলমিয়া (৪২), লক্ষিচাপর গ্রামের আঃ কাদেরের ছেলে জুয়েল (২৮) ও ছত্র গ্রামের মোখলেছুরের ছেলে ফিরোজ (৩৯)।
নকল ডকুমেন্টস তৈরির সদস্যরা হলেন, পাঁচবিবি উপজেলার রসুলপুর এলাকার মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে আজিজার মহুরী (৫০), নওগাঁ জেলার সদর উপজেলাধীন চকপিয়ার (মধ্য দুর্গাপুর) গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে আবু নাছের (৪৫) ও জয়পুরহাট পৌর সদরের ধানমন্ডি এলাকার মৃত তসলিমের ছেলে নাজমুল হক (৫৫)।
বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার চুরি চক্রের সদস্যরা হলেন, পাঁচবিবি উপজেলার নিকড়দিঘী নান্দুলা গ্রামের সোলায়মান আলীর ছেলে আল আমিন (৩০), লকনাহার গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদের ছেলে আকাশ (২৪) ও সাব্বির (৩২), গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বুইয়াগাড়ী গ্রামের মৃত ফারুক সোনারের ছেলে মিল্টন মিয়া।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, কালাই উপজেলায় দীর্ঘদিন যাবৎ অসহায় ও গরীব প্রকৃতির লোকজনদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে একটি সংঘবদ্ধচক্র মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মানবদেহের কিডনি বিক্রয়ে প্রলুব্ধ করে আসছিল। তাদের প্রলোভনে পরে কিডনি দাতাদের অনেকে পরবর্তীতে দালালে পরিণত হয় এবং নিরীহ লোক জনদেরকে কিডনি বিক্রয়ের জন্য বিভিন্ন প্রলোভন দেখায় এবং তাদের অভাব অনটনের সুযোগ নিয়ে প্রথমে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার অথবা সুদের উপর দেয়। কিছুদিন পর টাকা ফেরত চায় এবং সেটি দিতে না পারলে কিডনি বিক্রয়ের জন্য বাধ্য করায় চক্রটি। দালাল চক্র কতিপয় অসাধু ডাক্তারের মাধ্যমে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেশের বাহিরে পাঠিয়ে কিডনি অপসারণ করায়। অতঃপর নাম নাম মাত্র চিকিৎসা শেষে তাদের হাতে ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে সারা জীবনের মতো অঙ্গহানী করে দেশে পাঠিয়ে দেয়।
অন্য দিকে দীর্ঘদিন যাবত জয়পুরহাট জেলার সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে জরুরি কাগজ পত্র জাল জালিয়াতীর ডকুমেন্টস তৈরী ও তা ব্যবহার করে অবৈধভাবে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের একটি সক্রিয় চক্র ফায়দা হাসিল করে আসছিল। চক্রটিকে জাল জালিয়াতির বিভিন্ন ভূয়া ওকালতনামা, ভূয়া ব্যাংক চালান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শতাধিক সিল, বিভিন্ন আদালতের মামলার কাগজপত্র, জেল সুপার বরাবর হাজতীর স্বাক্ষর নেওয়ার জাল আবেদনসহ আরো অন্যান্য ডকুমেন্টসসহ গ্রেফতার করা হয়। পরে নিয়মানুযায়ী সেগুলো জব্দ করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম, ফারজানা রহমান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ইশতিয়াক আলমসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম কর্মীরা।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST