খাদেমুল মোরসালিন শাকীর,রংপুর ব্যুরোঃ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ মানবতার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের কারণে যে সমস্ত কর্মঠ মানুষ সরকারী নির্দেশনা মেনে চলার কারণে বাড়ী থেকে বের না হয়ে খাদ্য সঙ্কটে পরেছে তাদের খবর পাওয়া মাত্র খাবার নিয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে হাজির হয়েছে কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জের মোবাইলে একটি ম্যাসেজ আসে। ম্যাসেজটি পড়ে তিনি জানেন যে, বাহাগিলী ইউনিয়নের সুকান ডাঙ্গার হাটে দুইটি পরিবারের মানুষ কর্মহীন হওয়ার ফলে তাদের পরিবারের মানুষ না খেয়ে আছে। কিন্তু লজ্জায় কারো কাছে হাত পেতে খাবার নিতে পারছে না। এমন খবর পাওয়ার পর রাত ১০টার দিকে কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এম হারুন অর রশীদ, ওসি তদন্ত মফিজুল হক ও এস আই আব্দুল আজিজসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য সেই পরিবারের মাঝে ৫কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল, ১ লিটার সয়াবিন তেল, ১টি সাবান, ৪টি ডিম ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মাস্ক তাদের বাড়ীতে নিয়ে যায়। বাহাগিলী ইউনিয়নের ময়নাকুড়ি এলাকার হতদরিদ্র মন্তাজ আলীর ছেলে আব্দুল হামিদের বাড়ীতে খাবার নিয়ে গেলে তিনি চোঁখের পানি ফেলে কাঁদতে থাকেন। তার হাতে খাবার তুলে দিলে তিনি পুলিশের জন্য দোয়া করেন। আব্দুল হামিদ বলেন,হামরা দিনমজুর মানুষ মানুষের বাড়ীতে কাম করি সংসার চলাই। করোনার কারণে মানুষ এখন হামাক কামোতো নেয় না। পুলিশও যকন বাড়ীত থাকি বাইরোত যাবার নিষেদ করছে তখন থাকি হামরা বাড়ীত বসি আছি। মোর থাকার জায়গা নাই হামার কায়ো খবরও নেয়না। পুলিশ হামার খবর নিছে। আল্লাহ সউক পুলিশের উপর রহমত দান করবে। পরে পুলিশের খাদ্য সহায়তাকারী দল চলে যায় একই এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে মোস্তাফিজের বাড়ীতে। জানা যায় মোস্তাফিজার রহমান ঢাকায় একটা গার্মেন্টসে কাজ করতো কিছুদিন আগে। কিন্তু সরকার যখন থেকে করোনা ভাইরাসের কারণে বাহিরে যাইতে নিষেধ করেছে তখন থেকে বাহিরে গিয়েও কোন কাজও করতে পারি না। আর আমরা না খেয়ে মরে গেলেও আমাদের কেউ খবর নিবে না বলে তিনি কাঁদতে থাকেন। পুলিশ সদস্যরা তার হাতে খাদ্য সামগ্রী হাতে তুলে দিলে তিনি খাদ্য সামগ্রী নিয়ে মুচকি হেসে দিয়ে বলেন,আল্লাহ পুলিশের উপর রহমত দান করবে। মোস্তাফিজার রহমান বলেন, সারাজীবন শুনেছি পুলিশ ঘুষ খায়, গরীব মানুষকে দেখতে পায়না আজ আমাদের চোঁখ খুলে দিলেন পুলিশ স্যারেরা। কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, গত বুধবার রাতে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মহোদয় কর্মহীনদের মাঝে খাদ্য বিতরণের উদ্বোধন করার পর উপজেলার ৯ ইউনিয়নের কর্মহীন মানুষদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আরও যদি কর্মহীন মানুষের না খাওয়ার খবর পাই তাহলে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করতে দেরী করবো না। আমার থানা পুলিশ অসহায় ক্ষুদার্তদের মাঝে খাবার পৌছে দিতে বদ্ধ পরিকর। তিনি সমাজের বিত্তবানদেরকে কর্মহীন মানুষের পাশে খাদ্য পৌছে দেয়ার জন্য উদাত্ত আহবান জানান।
শেয়ার : ৪২৭