বিশ্বের ১ নম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের ১৬ শিক্ষার্থী

প্রকাশিত: ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৬, ২০১৯

বিশ্বের ১ নম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের ১৬ শিক্ষার্থী

উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য সব শিক্ষার্থীরই স্বপ্ন থাকে নামকরা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার, আর সেটা যদি হয় বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি তাহলেতো কোন কথাই নেই। হ্যাঁ, আজ আমরা এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় সর্ম্পকে জানব যা গত ৭ বছর ধরে সফলতার শীর্ষে অবস্থান করছে।

যুক্তরাজ্য ভিওিক উচ্চশিক্ষা বিশ্লেষণ বিষয়ক সংস্থা Quacquarelli Symonds (QS) এর সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী টানা ৭ম বারের মত বিশ্বের ১ নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি(এমআইটি)। QS প্রতিবছর ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন প্রনালীর উপর ভিওি করে তাদের এই র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করে।

১৮৬১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ক্যামব্রিজ শহরে ১৬৮ একর জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি।

এমআইটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:

এমআইটির লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও অন্যান্য শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা যাতে তারা ২১ শতকের মধ্যে দেশ ও বিশ্বের সর্বোত্তম সেবা প্রদান করতে পারে। এমআইটি তাদের প্রতিটি সদস্যকে বুদ্ধিমত্তা, সৃজনশীল এবং কার্যকরভাবে মানবজাতির কল্যাণে কাজ করার জন্য গড়ে তুলতে চায়। শিক্ষা, গবেষণা এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে উন্নততর বিশ্ব প্রতিষ্ঠা করাই এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য।

এমআইটির শিক্ষার্থী ও তাদের সাফল্য:

বর্তমানে এমআইটিতে ১৩,২৩৭ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে। ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২১,৭০৬ জন ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে যার মধ্য থেকে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে মাত্র ১,৪৬৪ জন শিক্ষার্থী। এমআইটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে এ পর্যন্ত ৮৯ জন নোবেল, ৫৮ জন ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স, ৪৮ জন ম্যাকআর্থার ফেলো, ১৫ জন এ এম টারিং এওয়ার্ড,২৯ জন ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলোজি এন্ড ইনোভেশনসহ নানা খ্যাতিনামা পুরস্কার পেয়েছেন।

এমআইটির কৃতি শিক্ষার্থী:

এমআইটি থেকে পড়ে গেছে এমন কৃতি শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবেনা। তারপরেও আমরা এমন কয়েকজন কৃতি শিক্ষার্থী সম্পর্কে জানবো যাদের কথা না বললেই নয়।

১. কফি আনান জাতিসংঘের সাবেক (৭ম)মহাসচিব এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র। যিনি ২০০১ সালে শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন।

২. বার্টন রিখটার ১৯৭৬ সালে একটি নতুন মৌলিক কণা আবিষ্কারের জন্য পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

৩. রিচার্ড ফাইনম্যান যাকে কোয়ান্টাম গণনা এবং ন্যানোপ্রযুক্তির ধারণার জনক বলা হয়। তিনি ১৯৬৫ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছেন।

৪. পল ক্রুগম্যান তিনি ২০০৮ সালে অর্থনিতীতে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন। এছাড়াও জন রবার্ট শ্রিফার, রবার্ট স্যামুয়েল ল্যাঙ্গার, ডেভিড আলবার্ট হাফম্যান, চার্লস জন পেডারসেনের মত বিখ্যাত ব্যক্তিরা ছিলেন এমআইটির সাবেক ছাত্র।

এমআইটিতে ভর্তি প্রক্রিয়া:

ভর্তির আবেদনের জন্য প্রথমে এমআইটির ওয়েবসাইটে (www.mit.edu) গিয়ে একটি একাউন্ট খুলতে হবে এবং সেখানে সকল ব্যক্তিগত তথ্য সাবমিট করতে হবে। এছাড়াও একাডেমিক মার্কশিট ও একজন শিক্ষকের সুপারিশপএ প্রেরন করতে হবে।

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে দু ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থী তার পছন্দমত যেকোন পদ্ধতি বাছাই করে নিতে পারে।

অপশন-১:

১. SAT বা ACT

২. পাশাপাশি দুটি SAT বিষয় পরীক্ষা:

গণিতের একটি (স্তর ১ বা ২) এবং বিজ্ঞানের মধ্যে একটি (পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বা জীববিজ্ঞান)

অপশন-২:

TOEFL পাশাপাশি দুটি SAT বিষয় পরীক্ষা:

গণিতের একটি (স্তর ১ বা ২) এবং বিজ্ঞানের মধ্যে একটি (পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, বা জীববিজ্ঞান)।

যাদের বাসায় বা স্কুলে ইংরেজীতে কথা বলতে হয় না বা পাঁচ বছরেরও কম সময়ের জন্য ইংরেজি বলছে তাদের অপশন ২ নেবার পরামর্শ দেয়া হয়।

SAT এবং TOEFL সম্পন্নের পর যে বিষয়ে পড়েত আগ্রহী সে বিষয়ের ওপর একটি রচনা লিখে ভর্তির আবেদন পাঠাতে হয়।

ভর্তি সংক্রান্ত তথ্যের জন্য: www.mitadmissions.org

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী:

বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে আসা সকল প্রতিভাধর মানুষকে স্বাগত জানায় এই প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে প্রায় ১৩৪ দেশের ৪,০১৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছে চীনের শিক্ষার্থী ১০২১ জন। ২০১৮ সালে বিভিন্ন দেশের প্রায় ৪,৭১৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে যার মধ্য থেকে মাত্র ১১৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এমআইটিতে বাংলাদেশের ১৬ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে। এর মধ্যে ৪ জন স্নাতকোত্তর এবং ১২ জন স্নাতক।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest