পারভেজ,বরিশাল প্রতিনিধিঃ যেখানে করোনার ভয়ে আত্নীয়স্বজন কিংবা পাড়া প্রতিবেশীদের ছিলো উৎকন্ঠার ছোয়া সেখানে প্রধান ভূমিকা পালন করলো সমাজের পুলিশ। বরিশাল শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা যায় ১৮ মাস বয়সী এক শিশু। শনিবার সকাল ১০টার দিকে নিজঘরে শিশুটির মৃত্যুর খবরে পাড়া-প্রতিবেশী কেউ যায়নি। বাবা শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি লাশটি নিয়ে পড়েন অত্যন্ত বিপদে। আশপাশের বাসিন্দাদের কাছে আকুতি মিনতি জানালেও কেউ ভয়ে এগিয়ে আসেনি। উপায়ন্ত না পেয়ে প্রতিবন্ধী পিতা বাসার বাইরে অবস্থান নিয়ে কাঁদতেছিলেন। এমন সময় কোতয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত হাসানের নেতৃত্বে সেখানে হাজির একদল পুলিশ। ৬ ঘণ্টার মাথায় বিকেল ৫টার দিকে পুলিশ ওই ওয়ার্ডের আমবাগান এলাকা থেকে শিশুর লাশটি উদ্ধার করে। পরে গোসল করিয়ে দাফনের ব্যবস্থাও করে।
প্রতিবন্ধী সবুজ হাওলাদার বলেন, তার ছোট ছেলে দেড় বছর বয়সী শাহাদাতের কয়েকদিন জ্বর হয়েছিল। গত দুদিন ধরে তার শ্বাসকষ্টও দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু হাসপাতালে না নিয়ে স্থানীয় এক চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ঘরে রেখে নিয়মিত ওষুধ সেবন করানো হচ্ছিল। শনিবার সকাল ১০টার দিকে ছেলে আর সাড়াশব্দ না দেয়নি।

পুলিশ জানায়- ছেলের সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবন্ধী ডাক-চিৎকার শুরু করলে পাড়া-প্রতিবেশীরা শুনে ছুটে আসলে কেউ বাসার ধারে কাছে যায়নি। বরং দুর থেকে দেখে যে যার মতো করে চলে যাওয়ায় প্রতিবন্ধী চেয়ারের ওপর বসে কাঁদতেছিলেন। অমানবিক এই ঘটনাটি স্থানীয় এক ব্যক্তি প্রত্যক্ষ করে থানা পুলিশে খবর দেয়। পরে বিকেলে কোতয়ালি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত হাসানের নেতৃতে একটি টিম গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। এবং শিশুর নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি দাফনের প্রস্তুতি নেয়।
এসআই আরাফাত হাসান বলেন, লাশটি ঘর থেকে বাইরে এনে গোসল করিয়ে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ৫ থেকে ৬জনে জানাজা নামাজ পড়েছি। পরে লাশটি আঞ্জুমান মফিদুলের মাধ্যমে শহরের রুপাতলী এলাকায় দাফন করা হয়। এর আগে শিশুটি করোনা আক্রান্তে মারা গেছে কী না এ তথ্য নিশ্চিত হতে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এসে নমুনা নিয়ে যায়।’