ঢাকা ৬ আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:১৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০২৫
এ,কে,এম,শাহাদাৎ হোসেন শাওনব, বরগুনা থেকেঃ
বরগুনার পাথরঘাটায় কলেজ মাঠের পানি নিষ্কাশনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরোধ চরমে উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজ চত্বরের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মাইনুল ইসলাম রেজা ও সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা শামসুল হক মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ মেহেদী হাসান। তিনি জানান, ভুক্তভোগীকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও বিষয়টি পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে পাথরঘাটা কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর আহত রেজাকে পাথরঘাটা থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে মারধরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা গেছে মাইনুল ইসলামের রেজাকে ৮ থেকে ১০ জন শিক্ষক চারপাশ থেকে ঘিরে রেখে দুইজন তাকে মারধর করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাথরঘাটা কলেজ মাঠে বৃষ্টির পানি জমে পড়ার কারণে তা পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা অ্যাডভোকেট নুর ইসলাম ও সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা শামসুল আলমের জমির উপর দিয়ে নির্মিত ড্রেন দিয়ে নিষ্কাশন করা হতো। তবে কলেজ মাঠের জমি উঁচু হওয়ায় ও এর আশপাশের জমি নিচু হওয়ায় আশপাশের এলাকা প্রায়ই জলাবদ্ধতায় পড়ে। এ নিয়ে কলেজের আশপাশের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন।
এলাকার ভুক্তভোগীরা জানান, দীর্ঘ বছর ধরে বিশাল কলেজ মাঠের পানি মাঠের দক্ষিণ দিক নেমে আসছে। এতে তাদের বসতবাড়ি অধিকাংশ সময় জলাবদ্ধতা থাকে। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষক বিষয়টি কোনোভাবেই গুরুত্ব দিচ্ছে না।
বিরোধের সূত্র ধরে মঙ্গলবার রাতে সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা শামসুল হকের সঙ্গে কলেজের শিক্ষক জাহিদ হাসান ও বেলালের কথা কাটাকাটি হয়। অভিযোগ রয়েছে, ওই সময় তারা শামসুল হককে লাঞ্ছিত করেন। প্রতিবাদ করতে গেলে ব্যবসায়ী মাইনুল ইসলাম রেজার উপর চড়াও হয়ে তাকে মারধর করে নাক ফাটিয়ে দেন অভিযুক্ত শিক্ষকরা।
মারধরের শিকার মাইনুল ইসলাম রেজার স্ত্রী জানান, আমি আমার স্বামীকে নিয়ে বরিশালে চিকিৎসায় আছি। আমার স্বামীকে অন্যায় ভাবে কলেজের বেলাল হোসেন ও জাহিদ হাসান স্যার মেরে নাকের হাড় ভেঙে দিয়েছে। তিনি জানান, অনেক দিন আগে বেলাল হোসেন কলেজের ভিতরে প্রাইভেট পড়ানোর সময় এক ছাত্রীকে নিয়ে আপত্তিকর অবস্থায় স্ত্রীর কাছে ধরা পরে। যা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ প্রকাশ হয়। তখন থেকেই আমার স্বামীর বিরুদ্ধে লেগে আছে তারা।
পাথরঘাটা কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধীক শিক্ষক জানান, জাহিদ হাসান ও বেলালের বিরুদ্ধে একাধিক নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তারা স্বৈরাচার সরকারের আমলে তাদের ছত্র ছায়ায় ছিল। এখন নব্য বিএনপির অনুসারী হয়ে সর্বত্র প্রভাব বিস্তার করেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জাহিদুর রহমানের মুঠোফোন কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি, তবে বেলাল হোসেনকে ফোন দিলে তিনি একটি বিবাহ অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন বলে জানিয়ে ফোনের লাইন কেটে দেয়।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা কলেজের অধ্যক্ষ মহসিন কবিরের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, কলেজের ঘটনাটি আমাকে অবগত করা হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST