আমাদের দায়িত্ব শুধু বর্তমানেই না, আগামী দিনের নতুন প্রজন্মের জন্যও | প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৬:১৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২০

আমাদের দায়িত্ব শুধু বর্তমানেই না, আগামী দিনের নতুন প্রজন্মের জন্যও | প্রধানমন্ত্রী

মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান |ঢাকা |

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, শুধু বর্তমানেই না, আগামী দিনের নতুন প্রজন্মের জন্য কিভাবে এই দেশটা এগিয়ে যাবে, কিভাবে চলবে, সেটা এখন থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিয়ে নির্দেশনা দিয়ে রাখব। যারাই ভবিষ্যতে আসুক তারাই এগিয়ে নিতে পারবে। কারণ আমাদের তো বয়স হয়ে গেছে। আমার তো ৭৪ বছর বয়স। কাজেই সেটাও মাথায় রাখতে হবে। আর কতদিন!’

বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে সকাল দশটার দিকে দলের সভাপতিমন্ডলীর সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে দলের সংসদীয় বোর্ডের সভার পর এই প্রথম দলের নীতিনির্ধারণী সর্বোচ্চ ফোরাম সভাপতিমন্ডলীর সভা গণভবনে অনুষ্ঠিত হল। সভায় সভাপতিমন্ডলীর অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অর্থনৈতিকভাবে আমরা একটা মোটামুটি ভাল অবস্থানে আছি। বাজেটের ডেফিসিটি এবার আমরা ৬শতাংশ ধরেছিলাম। এখানে আমার সিদ্ধান্ত ছিল দরকার হলে ১০শতাংশ ধরবো। কিন্তু সেটা আমাদের লাগেনি। কাজেই তার মধ্যে রেখেই আমরা আমাদের অর্থনীতির চাকাটাকে সচল রাখতে পেরেছি। কারণ রাজনৈতিক দল হিসাবে আওয়ামী লীগ একমাত্র রাজনৈতিক দল যার একটা ইকোনমিক পলিসি আছে, সেটাকে মাথায় রেখেই আমরা কিন্তু কাজ করে যাই। যার ফলে আমরা যেকোন পদক্ষেপ নিচ্ছি খুব হিসাব করে। পার্টির যে পলিসি সেটা মেনেই কিন্তু আমরা সব পদক্ষেপ নিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে সরকার গঠন করে ২০১০ সালে আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা নিয়েছিলাম ২০১০ থেকে ২০২০। সেখানে এখন আমরা ২০২১ থেকে ২০৪১ সেই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সেটাও আমরা গ্রহণ করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে একটা ডেল্টা। আমাদের বদ্বীপ; এই বদ্বীপের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা জানেন যে, এই নদী ড্রেজিংয়ের কথা সব সময় বলে আসছি। একটা সময় ছিল, আমি আর বোধহয় মতিয়া আপা ছাড়া আর কেউ ড্রেজিংয়ের কথা বলতই না। অনেক বিশেষজ্ঞরাও এটা নিয়ে তখন প্রশ্ন তুলত। আমরা কিন্তু সেই আগের দিনে যেটা বলে ভাঙ্গা রেকর্ডের মতো এই ড্রেজিং ড্রেজিং বলেই যেতাম। তো এখন আবার প্রত্যেকে আমাদের পথে আসছে। এখন সেই বিশেষজ্ঞরাও এখন বলে যে ড্রেজিংটা একমাত্র উপায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নদীগুলোর ভাঙ্গন হচ্ছে, নদীগুলোর ক্ষতি হচ্ছে। নদীগুলোকে বাঁচানোর জন্য এটা দরকার। আমরা ডেল্টা প্ল্যান যেটা করেছি- ডেল্টা প্ল্যানের এইটাই লক্ষ্য, আমাদের যতগুলি বড় নদী এবং যা আছে, আমরা নদী ড্রেজিং করে নদীর নাব্যতা বজায় রেখে এই বদ্বীপটা রক্ষা করা এবং সুরক্ষিত করা এবং আমাদের দেশের মানুষকে কিভাবে সুন্দরভাবে একটা জীবন দেয়া, অর্থনৈতিক উন্নয়নটা ত্বরান্বিত করা সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করেছি, বাস্তবায়ন করছি। অর্থ্যাৎ আওয়ামী লীগ যেহেতু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই সংগঠনই এদেশের ম্বাধীনতা এনেছে কাজেই আমরা যখন সরকারে আছি, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে যে দেশটা শুধু বর্তমানেই না, আগামী দিনের নতুন প্রজন্মের জন্য কিভাবে এই দেশটা এগিয়ে যাবে কিভাবে চলবে, সেটাই এখন থেকে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখবো বা আমরা নির্দেশনা দিয়ে রাখব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ, এটা ঠিক আমরা যা করছি, সময়ের বিবর্তনে সেটা কিন্তু সংশোধন করতে হবে। পরিবর্তন করতে হবে, পরিশোধন করতে হবে। এটা করতে হবে, এটা নিয়ম। সেটাও আমরা জানি কিন্তু তারপরও একটা ফ্রেমওয়ার্ক একটা ধারণাপত্র অথবা একটা দিকনির্দেশনা; সেটা যদি সামনে থাকে তাহলে যেকোন কাজ খুব সহজে যারাই আসুক ভবিষ্যতে তারাই করতে পারবে। কারণ আমাদের তো বয়স হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যারা আসবে তারা যেন দিকহারা না হয়ে যায়, তাদের যেন একটা দিকনির্দেশনা থাকে, একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে। সেজন্য আমরা প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করলাম। এরপর দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করে দিলাম। ২০৪১ সাল পর্যন্ত কি হবে। আবার জাতিসংঘ ঘোষণা দিয়েছে-এসডিজি-২০৩০। সাসটেইনবেল ডেভলপমেন্ট গোল অর্থ্যাৎ অর্থনৈতিক উন্নয়নটা একটা স্থিতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। সেখানে যে ধারাগুলি আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য সেগুলি আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমরা এমডিজি বাস্তবায়নে সাফল্য অর্জন করেছিলাম। এসডিজি বাস্তবায়নেও আমাদের সাফল্য আসবে, এইজন্য আমরা ঠিক আমাদের দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ধারাগুলি আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest