ঢাকা ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:৪৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২০
শরনখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : বাগেরহাট জেলার শরনখোলা উপজেলায় টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে সব মাছের ঘের।কৃষকেরা জানান, ফরিদ উদ্দিন , উপজেলার খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা । দিন মজুরি কাজের পাশাপাশি ছোট দুইটি ঘেরে চিংড়ি সহ সাদা মাছের চাষ করে দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতেন তিনি ।
তাই প্রতি বছরের মতো চলতি বছরেও কিছু টাকা লোন নিয়ে দুটি ঘের সহ তিনটি পুকুরে কার্প জাতীয় মাছ সহ কিছু চিংড়ি মাছ চাষ করেন । কিন্তু সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্নিঝরের প্রভাবে গত শুক্র ও শনিবারের দু-দিনের টানা বর্ষনের ফলে তার ওই লালিত স্বপ্ন তলিয়ে গিয়ে মুহুর্তে সব মাছ ভেসে যায় । এখন ব্যাংকের ওই লোন পরিশোধ নিয়ে চরম দুচিন্তায় মধ্যে পড়েছেন ফরিদ ।
উপজেলা মৎস্য দপ্তর সুত্রে জানাগেছে , কেবল মাত্র ফরিদের ঘেরই নয় , ভারী বর্ষনের কারনে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাগেরহটের শরনখোলা উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার সহ¯্রাধিক ব্যাবসায়ীদের ৭২৯ হেক্টর আয়তনের ১ হাজার ২শত ৬৫টি মৎস্য ঘের ও ৫ শত ২৫ টির অধিক পুকুরের সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ি মাছ সহ অন্য-অন্য মাছ ভেসে গেছে । যার ক্ষতির পরিমান দেড় কোটি টাকার অধিক। তবে, ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুত করে ইতিমধ্যে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে দাবী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার । তলিয়ে যাওয়া ঘের নিয়ে কথা হলে উপজেলার ধান সাগর এলাকার ঘের ব্যাবসায়ী তাপষ মিত্র জানান , ভারী বৃষ্টির কারনে তার ৪টি ঘেরের সম্পুর্ন মাছ ভেসে গেছে ।
এতে মুলধন সহ তার প্রায় ১০লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে । সুদ মুক্ত লোন ছাড়া ওই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা তার পক্ষে সম্ভব নয় । এছাড়া সরকারী ভালো কোন প্রোদনা না পেলে পুনরায় ঘুরে দাড়াতে হলে ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগবে তার । এবং রায়েন্দা এলাকার ব্যাবসায়ী মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, ৮/১০ বিঘা আয়তনের উপজেলার নলবুনিয়া এলাকায় তার একটি ঘেরের সকল মাছ ভেসে যাওয়ার কারনে প্রায় ১৪ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি ।
বড় কোন সহয়তা কিংম্বা সহজ শর্তেও সরকারী লোন না পেলে ওই ব্যাবসায় আর ফিরে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয় । উপজেলার রাজাপুর এলাকার ঘের ব্যাবসায়ী বাবুল শেখ জানান, সাদা মাছ চাষকৃত প্রায় ৮০ হেক্টর আয়তনের তার একটি ঘের ডুবে গিয়ে এক রাতেই সব মাছ ভেসে গেছে। চলতি বছরে এখন যে সময় আছে তাতে নুতন করে আর মাছ চাষের সময় নাই । এছাড়া ব্যাবসায়ীদের ঘুরে দাড়াতে সরকারী সাহায্য দরকার । তা না হলে মুলধন হারানোর ব্যাথায় , এ ব্যাবসা হতে অনেক মালিক মুখ ফিরিয়ে নিবেন বলে আশংঙ্কা তার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরনখোলা উপজেলা সিয়ির মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় জানান , মাঠ পর্যায়ের খোঁজ-খবর নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের একটি তালিকা তৈরী করা হয়েছে । ওই তালিকা ইতিমধ্যে উর্ধতন কর্তৃপকে পাঠানো হয়েছে । সরকারী কোন সহয়তা পাওয়া গেলে তা সঠিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে বন্ঠন করা হবে । এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাক্তিদের তালিকা ইতিমধ্যে মন্তনালয়ে পাঠানো হয়েছে । এছাড়া , নুতন করে ঘুরে দাড়ানোর জন্য ব্যাবসায়ীদের দাবী গুলো উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরা হবে।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST