রাজশাহীর শাহমখদুম মেডিকেল কলেজ ছাত্রছাত্রীর উপর হামলা, এমডির স্ত্রী ও ভাই আটক

প্রকাশিত: ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৮, ২০২০

রাজশাহীর শাহমখদুম মেডিকেল কলেজ ছাত্রছাত্রীর উপর হামলা, এমডির স্ত্রী ও ভাই আটক

রাজশাহী ব্যুরো : নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে সম্প্রতি বন্ধ হয়ে যাওয়া রাজশাহীর বেসরকারী শাহমখদুম মেডিকেল কলেজ ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলার ঘটনায় নারীসহ ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক দুইজনের মধ্যে একজন শাহমখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীনের স্ত্রী বিউটি ও ভাই মিঠু। শুক্রবার রাতে চন্দ্রিমা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আশিক নামের এক ছাত্র বাদী হয়ে নগরীর চন্দ্রিমা থানায় ৯ জনকে এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আসামীদের মধ্যে স্বাধীনের স্ত্রী ও তিন ভাই রয়েছে। এছাড়াও তার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বহিরাগত রয়েছে।

এ তথ্য নিশ্চিত করে নগরীর চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি সিরাজুম মনির বলেন, শাহমখদুম মেডিকেল কলেজে ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলার ঘটনায় থানায় ৯ জনকে এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বাধীনের স্ত্রী ও ভাইকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ছাত্রছাত্রীরা মেডিকেলের হোস্টেলে প্রবেশ করতে গেলে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ এমডির উপস্থিতিতে বহিরাগত লোকজন বাঁশ ও রড দিয়ে শিক্ষার্থীদের মারধর করে। এতে প্রায় ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়। পরে তাদের মধ্যে ৭ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। আহতদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যাই বেশি। ৭ জনের মধ্যে ৫ জনই ছাত্রী। আহতরা হলেন, মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান, তাহসিন, ফাউজিয়া, সুস্মিতা, জেবা, বিতিসা, নিশাত, মেধা ও শাব্বির। এদের সবাইকে হাসপাতালের ১ নং সহ অন্য ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা বগুড়া ও দিনাজপুরসহ আশেপাশের জেলার বাসিন্দা।

বন্ধ হয়ে যাওয়া শাহমখদুম মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের ৩য় ব্যাচের ছাত্র মেহেদী হাসান জানিয়েছিলেন, নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে কিছুদিন আগে শাহমখদুম মেডিকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে দেয়া হয়। আহতরা সবাই মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে থাকতেন। মাইগ্রেশন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা কলেজের আশেপাশে বন্ধুদের

বাড়িতে থাকতেন। শনিবার সকালে কলেজে পুনরায় ভিজিটিং হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ভিজিটিং এর ব্যবস্থা করেন। এ উপলক্ষে বাড়িতে থাকা ও আশেপাশে থাকা সহপাঠিরা আসছে। এ ছাড়াও শীত শুরু হওয়ায় তারা হোস্টেলে শীতের পোশাক নিতে যাওয়ার জন্য প্রবেশ করে। এ সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লোকজন দিয়ে অতর্কিতভাবে বাঁশ দিয়ে মারধর শুরু করে। ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই রক্তাক্ত হয়ে জখম হয়। স্থানীয় মানুষজন পুলিশকে খবর দিলে খবর পেয়ে চন্দ্রিমা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এছাড়াও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় রামেক হাসপাতালে আহতদের ভর্তি করা হয়।

তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, মেডিকেল কর্তৃপক্ষ আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তেলেসমাতি করে আবার উল্টো আমাদেরকেই মারধর করেছে। আমাদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।
উল্লেখ্য, গত মাসে বিধি লঙ্গনের দায়ে রাজশাহীর শাহমখদুম মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest