স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান-২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে চালু হবে

প্রকাশিত: ১০:০৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০২০

স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান-২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে চালু হবে

জিয়াউর রহমান:

২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে চালু হবে পদ্মা সেতু। স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান শেষ স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে প্রমত্তা পদ্মা জুড়ে এ কথা জানানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ আয়োজিত কোভিড-১৯ মোকাবিলা এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া প্রণোদনা প্যাকেজ বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘দ্য পদ্মা ব্রিজ ইউ নাউ ট্রু। নাও ইট ইজ ফিজিক্যালি কমপ্লিট। আই থিঙ্ক বাই জুন ২০২২ উই ইউল ওপেন দ্য পদ্মা ব্রিজ। আমি আট বছর সেতু বিভাগের সচিব ছিলাম। ফলে আমি এখনও এটিকে দেখাশোনা করি।’ কিনোট পেপার উপস্থাপন করেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার।

প্যানেল আলোচকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সিনিয়র গবেষক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফিরদৌসি নাহার, ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ড. সাজ্জাদ জহির, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, ইউরোপ ইউনিয়নের হেড অব ডেলকেশন এবং রাষ্ট্রদূত রেনজে তেরিঙ্ক।

এর আগে সকালে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয় ৪১তম, অর্থাৎ সর্বশেষ স্প্যানটি। ৪০তম স্প্যান বসানোর ছয় দিনের মাথায় বসানো হলো এ স্প্যান। ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি স্প্যান বসানোয় ৬ হাজার ১৫০ মিটার সেতুর অবকাঠামো দৃশ্যমান হলো। এ সেতুতে গত দুই মাসে আটটি স্প্যান বসিয়ে রেকর্ড গড়েছেন দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা।

এ মাসেও দুটি স্প্যান বসানোর মাধ্যমে বিজয়ের মাসে স্প্যান বসানোর কাজটি সম্পন্ন হলো। সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর ৪১তম স্প্যান ‘টু-এফ’ সফলভাবে স্থাপন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।নির্মাণ কাজ শুরুর পর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ঝড়-ঝঞ্ঝার প্রতিকূলতার মধ্যেও থেমে থাকেনি সেতুর কাজ। নির্মাণ শুরুর তিন বছরের মাথায় ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর ৩৭ ও ৩৮নং পিয়ারে বসানো হয় প্রথম সুপারস্ট্রাকচার (স্প্যান)।মূল সেতুর ৪২টি পিয়ারে বসানো হবে ৪১টি স্প্যান এমন পরিকল্পনায় সময়ের সঙ্গে এরপর কর্মযজ্ঞ এগিয়ে চলা। আজ ৪১তম স্প্যানটি বসানোর মধ্যে দিয়ে গত ৩ বছরে সেতুতে সবগুলো স্প্যান বসানো হলো। এসব স্প্যানের মধ্যদিয়ে চলবে রেল আর উপর দিয়ে অন্যান্য যানবাহন।

পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত সূত্র বলছে, আগামী বছরের ডিসেম্বরে সেতু চালু করতে হলে চলতি মাসের মধ্যে সব স্প্যান বসাতেই হতো। অর্থাৎ শেষ স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে পরিকল্পনামতোই কাজ এগোয়।জানা গেছে, পদ্মা সেতুর সার্বিক অগ্রগতি সাড়ে ৮২ শতাংশের বেশি। মূল সেতুর কাজের বাস্তবায়ন কাজের অগ্রগতি ৯১ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি ৮৮.৩৮ শতাংশ। মূল সেতুর কাজের চুক্তি মূল্য ১২ হাজার ১৩৩.৩৯ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৭২৩ দশমিক ৬৩ কোট টাকা। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি ৭৫.৫০ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৬৫.১৭ শতাংশ। নদীশাসন কাজের চুক্তি মূল্য ৮ হাজার ৭০৭.৮১ কোটি টাকা এবং এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৬৭৪.৪৮ কোটি টাকা।#


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest