দুমকিতে ইজারাপক্ষের জোর-জবরদস্তি ফেরী পারাপারে তিনগুণ টোল আদায়!

প্রকাশিত: ৫:২৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৫, ২০২১

দুমকিতে ইজারাপক্ষের জোর-জবরদস্তি ফেরী পারাপারে তিনগুণ টোল আদায়!

সৈয়দ আতিকুল ইসলাম, (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি/ পটুয়াখালীর বগা ফেরী পারাপারে ইজারা কর্তৃপক্ষের জোর-জবরদস্তি, মাত্রাতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইজারা চুক্তি লঙ্ঘণ করে পেশী শক্তির প্রভাব খাটিয়ে অনেকটা জিম্মি করে সকল ধরণের যানবাহন পারাপারে দ্বিগুণ, তিনগুনেরও বেশী টোল আদায়ের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। ইজারা কর্তৃপক্ষ অবশ্য অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বিগত বছরের আদায়কৃত রেটে টোল (ভাড়া) আদায় করার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

স্থানীয় নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র ও নিয়মিত চলাচলকারী যানবাহনের চালক-শ্রমিক সূত্রের অভিযোগ, বগা ফেরীঘাটে টোল আদায়ের কোন সরকারি নিয়ম-রীতি নেই। ইজারা কর্তৃপক্ষের ধার্য্যকৃত ভাড়া দিতে বাধ্য হচ্ছেন যানবাহন চালকরা। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে ইজাদারের লোকজনের হাতে কেউ কেউ লাঞ্চিতও হয়েছেন। পরিবহন শ্রমিকরা ইজারা কর্তৃপক্ষের লোকজনের হাতে জিম্মি হয়ে অতিরিক্ত টোল পরিশোধে তারা বাধ্য হচ্ছেন।

গতরবিবার সন্ধ্যায় সরেজমিন পরিদর্শণে গেলে মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রমান মিলেছে। ভারী পণ্যবাহী যানবাহন-ট্রাক/কাভার্ডভ্যান ১০০শ’টাকার স্থলে ২শ’৫০টাকা এবং অনধিক ১৫ যাত্রীবাহী মটরযানে ২০টাকার স্থলে ৪০টাকা, মোটর সাইকেল পারাপারে ৫টাকার ভাড়া ২০টাকা, অটো-রিস্কা, থ্রিহুইলার-১০টাকার ভাড়া ২০/৩০টাকা আদায় করা হচ্ছে। যাত্রীবাহী বাস-মিনিবাস ৪৫টাকার স্থলে ১২৫ টাকা নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুই এক্সেল বিশিষ্ট রিজিড ট্রাক/বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর/ট্রেইলর ৫০টাকার স্থলে ১০০টাকা রেটে আদায় করা হচ্ছে। কেন অতিরিক্ত ভাড়া দিচ্ছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে বরিশালগামী মালবাহী ট্রাক চালক মোশাররফ খান বলেন, ঘাটের লোকজন খারাপ, টাকা না দিলে ঝামেলা করে। শারীরীক ভাবে লাঞ্ছিতও করতেও ছাড়ে না। বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়। ট্রলিচালক ইব্রাহীম বলেন, ৫০টাকার ভাড়া ১০০টাকা নেয়। তাদের ধার্য্যকৃত ভাড়া না দিলে গাড়ী আটকে ঝামেলা করে। মূলত: এরুটে চলাচলকারী যানবাহন চালকরা এঘাটে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ঘাট শ্রমিকদের (ইজারা কর্তৃপক্ষের লোক) হাতে নাজেহাল হওয়া এড়াতেই তাদের অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে।

ইজাদার কর্তৃপক্ষের স্থানীয় প্রতিনিধি মো: শাহীন মাষ্টার বলেন, এবারে উচ্চদরে (২কোটির ওপরে) ফেরীঘাটের ইজারা পায় পটুয়াখালীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ি শিবু লাল দাস। তার কাছ থেকে এপার ওপার মিলে সাব-কন্ট্রাক্ট নিয়ে তারা ফেরীঘাট পরিচালনা করছেন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিগত বছরের রেটের সামঞ্জস্য রেখে তারা ভাড়া নিচ্ছেন। দ্বিগুন-তিনগুণ আদায় প্রশ্নের উত্তরে বলেন, অত বেশী নয়-তবে ক্ষেত্র বিশেষে কিছু বেশী টাকা আদায় করছেন বলে স্বীকার করেছেন। বগা ফেরীঘাটের ইজারাদার শিবু লাল দাস বলেন, সরকারি নির্ধারিত রেটের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোন সুযোগ নেই। সরকারি রেট চার্ট দেয়া আছে, এর বাইরে আদায় করার খবর আমার জানা নেই।


১০০টাকার ভাড়ার স্থলে ২৫০টাকা আদায় করার প্রশ্নে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি বরং ব্যস্ততা দেখিয়ে পরে সাক্ষাতে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় প্রশ্নে সওজ’র পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী মো: কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। সদ্য ইজারা দেয়া হয়েছে, এমনটি হয়ে থাকলে অবশ্যই তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই সময়ে তিনি ঘাটের দায়িত্বে নিয়োজিত এসিকে অভিযোগটি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest