নাটোর ও সিংড়া পৌর এলাকায় ৭ দিনের বিশেষ লকডাউন ঘোষণা l

প্রকাশিত: ৭:৫৩ অপরাহ্ণ, জুন ৮, ২০২১

নাটোর ও সিংড়া পৌর এলাকায় ৭ দিনের  বিশেষ লকডাউন ঘোষণা l

এস ইসলাম, নাটোর জেলা প্রতিনিধ।

করোনা সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় নাটোার ও সিংড়া পৌরসভা এলাকায় কাল বুধবার থেক ৭দিনের বিশেষ লকডাউন ঘোষনা করেছেন জেলা প্রশাসন।

সেমবার গভীর রাতে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সাথে ভার্চুয়াল সভায় নেয়া সিদ্ধান্তের কথা জানান জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজের সভাপতিত্বে গভীর রাতের ভাচুর্য়াল সভার আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি,সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, সাংসদ ও জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল , সংসদ সদস্য শহীদুল ইসলাম বকুল, পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী মিজানুর রহমান, নাটোর পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি, সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক, সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম সামিরুল ইসলাম, সিংড়া পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস, নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ পরিতোষ কুমার রায় প্রমুখ।

জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় নাটোর ও সিংড়া পৌর এলাকায় কাল থেকে সাতদিনের বিশেষ লকডাউন ঘোষনা করা হয়েছে। শুধুমাত্র পৌরসভা এলাকার ভেতরে কঠোর লকডাউন পালন করা হবে। বন্ধ থাকবে দোকানপাট ও সকল ধরনের যানবহন। তবে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। এছাড়া উপজেলাগুলোর কৃষিপণ্য বিশেষ করে এ মৌসুমের আম আড়তগুলো খোলা থাকবে সেখান থেকে আম পাঠানো হবে জেলার বাহিরে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জরুরী পণ্য সরবরাহ লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে। স্বেচ্ছাসেবকরা জরুরী পণ্য সরবরাহ করবেন।জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাহিরে বের হওয়া যাবেনা। মাস্ক পরিধান বাধ্যতামুলক বলে জানান তিনি। অন্যথায় জেল বা জরিমানা করা হবে। এজন্য একাধিক মোবাইল টিম মাঠে থাকবে।

এদিকে করোনা রোগীর চাপ সামলাতে হিমসীম খাচ্ছে নাটোর হাসপাতাল কতৃপক্ষ।সদর হাসপাতালে ৩১ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছেন ৩৯ জন রোগী। নাটোরে মঙ্গলবার সংক্রমনের হার ৬২ শতাংশ। গতকাল সোমবার সংক্রমনের হার ছিল ৬৭.৩০ শতাংশ। গত ২৪ ঘন্টায় ৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষার পর নতুন করে ৪২ জনের রেজাল্ট পজেটিভ আসে। জেলায় মোট আক্রান্ত ১৯৪০জন। আক্রান্তদের মধ্যে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৯জন এবং হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৩৭২ জন। এছাড়া রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সদর উপজেলার গোকুল নগর গ্রামের নুরুলের ছেলে আক্কেল আলী (৩৮) নামে এক ব্যক্তি সোমবার ভোর রাতে মারা গেছেন। এপর্যন্ত মৃত্যু ২৮ জন।

সোমবার গভীর রাতে নাটোর জেলার ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে জেলা কমিটির ভার্চুয়াল সভায় প্রতিমন্ত্রী পলক বলেছেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মানুষের জীবন ও জীবিকার সমন্বয় করার কর্মপন্থা প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জননেত্রীর নির্দেশিত কর্মপন্থাকে অনুসরণ করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আমাদের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ভাইরাসের ভারতীয় ধরণ সংক্রমণের বিস্তারকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। এখন দ্রুত সংক্রমণ ঘটছে। এমনকি শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। বিশ্বের যেসব দেশ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে উদাসীন থেকেছে, দায়িত্বহীন ভূমিকা পালক করেছে, সেসব দেশই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী পলক আরও বলেন, হাসপাতালে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের জন্যে পর্যাপ্ত অক্সিজেন নিশ্চিত করতে হবে। যারা পজিটিভ হয়ে বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন, তাদের জন্যে চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান, প্রয়োজনে বাড়িতে ওষুধ ও খাবার পৌঁছে দিতে হবে। কর্মহীন অসহায় মানুষের জন্যে সরকার প্রয়োজনীয় ত্রাণ বরাদ্দ দিয়েছে। এসব মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেবে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা। খাদ্য সংকটে থাকা যে কোন ব্যক্তি কল সেন্টার ৩৩৩ এ ফোন করলে বাড়িতে খাদ্য পৌঁছে দেওয়া হবে। জীবিকার জন্যে জীবনকে সংকটে ফেলা যাবে না। জীবিকা হারানো অসহায় সব মানুষের পাশে সরকার সবসময় থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রতিমন্ত্রী সকরকে মাস্ক পরিধান করে চলার আহ্বান জানান। করোনা সংক্রমন রোধের জন্য লকডাউন মেনে চলার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest