প্রথম স্বামীর সঙ্গে এখনো তালাক হয়নি পরীমণির!

প্রকাশিত: ৭:৩৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৫, ২০২১

প্রথম স্বামীর সঙ্গে এখনো তালাক হয়নি পরীমণির!

ঢাকাই সিনেমায় আলোচিত নায়িকা পরীমণির গ্রেপ্তার নিয়ে মুখ খুলেছেন তার তার ‘প্রথম স্বামী’ কেশবপুরের ফেরদৌস কবীর সৌরভ। বুধবার (৪ আগস্ট) র‌্যাবের হাতে আটক হওয়ার পর গণমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেন সৌরভ।

তিনি দাবি করেন তার ধারণা ছিল, উশৃঙ্খল জীবনযাপন পরীমণির জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে এবং একদিন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হবেন। তাকে ছেড়ে পরে পরীমণি একাধিক বিয়ে করলেও এখনো তাদের মধ্যে এখনো তালাক হয়নি বলেও জানান তিনি।সৌরভ জানান, ২০১২ সালের ২৮ এপ্রিল শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমণির সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

জানা গেছে, সৌরভ তখন তুখোড় ফুটবল খেলোয়াড়। ওই বছর এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হলে ঢাকার একটি ক্লাবে ফুটবল খেলার ডাক পান। তখন স্ত্রী শামসুন্নাহার স্মৃতিকে নিয়ে রাজধানীতে পাড়ি জমান। ঢাকার বনশ্রীতে বাসা ভাড়া নিয়ে স্ত্রীকে মিরপুরের একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করেন। সেখানে থাকার এক পর্যায়ে মিডিয়ায় জড়িত এক ব্যক্তির নজরে পড়েন স্মৃতি। তাদের মধ্যে পরিচয়ের এক পর্যায়ে তার বিভিন্ন স্টাইলের ছবি তুলে পত্রিকায় ছেপে তাকে মডেল ও নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন দেখান সেই ব্যক্তি। এরপর শামসুন্নাহার স্মৃতির নাম পাল্টে পরীমণি করেন তিনি।

পত্রিকায় ছবি ছাপা হওয়ার কিছুদিনের মধ্যে উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন শুরু করেন পরীমণি। যে কারণে তার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে সৌরভের। একদিন মিডিয়ার সঙ্গে জড়িত সেই ব্যক্তিকে পরীমণি বিয়ে করেছেন বলে জানতে পারেন সৌরভ। এরপর ঢাকা ছেড়ে কেশবপুরে ফিরে আসেন তিনি। কেশবপুরে এসে ফুটবল ছেড়ে হাতে তুলে নেন গিটার। একসময় তিনি পরিচিতি পান শিল্পী সৌরভ কবীর হিসেবে। তার বন্ধুরা তাকে টেনে নেন আওয়ামী রাজনীতিতে। বর্তমান পৌরসভার ছাত্রলীগ নেতা হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তার।

সৌরভ জানান, তার বাবা জাহাঙ্গীর কবির পুলিশে চাকরি করতেন। বর্তমান তারা কেশবপুরে স্থায়ী হলেও বাবার পৈতৃক বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ভগিরাথপুর গ্রামে। ওই গ্রামেই নানা শামসুদ্দিন গাজীর বাড়িতে থাকতেন স্মৃতি ওরফে পরীমণি। ২০১০ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর সৌরভ ওই গ্রামে দাদা হাফিজ উদ্দিনের বাড়িতে বেড়াতে গেলে সেখানেই পরিচয় হয় স্মৃতির সঙ্গে। বেশ কিছুদিন সেখানে থাকার একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

সৌরভ আরও জানান, শামসুন্নাহার স্মৃতি তখন স্থানীয় একটি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ত। পরে সৌরভ খুলনার দৌলতপুর একটি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হয়ে ফুটবল প্রাকটিস নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মাঝে মাঝে খুলনা থেকে পিরোজপুর দাদা বাড়িতে গিয়ে স্মৃতির সঙ্গে দেখা করে আসতেন। ২০১১ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর স্মৃতি তার নানি পরীবানুকে নিয়ে একদিন দৌলতপুরে সৌরভের সঙ্গে দেখা করতে আসে। ২ বছর সম্পর্কের পর ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে স্মৃতি ওরফে পরীমণি কেশবপুরে সৌরভের বাড়িতে চলে আসে।

কেশবপুর শহরের অফিস পাড়ায় ফতেমা মঞ্জিলে ওই বছরের ২৮ এপ্রিল পৌরসভার এমএমআরও কাজী এম ইমরান হোসেন এক লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করেন। বিয়ের কাবিনে (নিকাহনামা) পরীমণি সই করেন শামসুন্নাহার স্মৃতি নামে। ৬ নম্বর ক্রমিকে জন্ম তারিখ ১৫/১২/১৯৯২ লেখা হয়। তবে ৪ নম্বর ক্রমিকে তার স্থায়ী ঠিকানায় পিতা মৃত মনিরুল ইসলাম, মাতার নাম মৃত সালমা সুলতানা, গ্রাম বাকা, পোস্ট ও উপজেলা কালিয়া, জেলা নড়াইল উল্লেখ রয়েছে।

সৌরভ আরও জানান, মূলত ঢাকায় একটি ফ্ল্যাট কেনা নিয়ে স্মৃতির সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হতে থাকে। এরই মধ্যে স্মৃতি তার নানির নাম পরীবানুর ‘বানু’ কেটে ‘মণি’ যোগ করে পরীমণি হয়ে মিডিয়ায় পরিচিতি পেয়ে যান। ফলে ২০১৫ সালে সৌরভ কেশবপুরে ফিরে আসেন। সর্বশেষ ২০১৬ সালে পরীমণির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় তার। তবে তারা কেউ কাউকে এখনও তালাক দেননি।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest