ঢাকা ১২ আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০২১
সম্প্রতি টক অব দ্যা কান্ট্রি চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় যে মামলা দায়ের হয়েছে তাতে তার বিরুদ্ধ বেশ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে। পরীমণিসহ ৩ জনকে এই মামলায় আসামি করেছে র্যাব। অপর দুই আসামির মধ্যে আশরাফুল ইসলাম দিপু নামের একজনকে পরীমণির সঙ্গেই তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পলাতক আসামির নাম কবির।
গতকাল বৃহস্পতিবার (০৫ আগস্ট) রাতে বনানী থানায় র্যাব-১ সিপিও (সিম্যান) মজিবর রহমান মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে গত বুধবার (০৪ আগস্ট) বিকেলে বনানীতে পরীমণির বাসায় অভিযান চালায় র্যাবের গোয়েন্দা শাখা। অভিযানে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, আইস, এলএসডির মত ভয়ঙ্কর মাদক জব্দ করা হয়। ১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া অভিযানের ধারাবাহিকতায় বুধবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত বনানী এলাকার দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় র্যাব। প্রথম অভিযানটি হয় পরীমনির ফ্ল্যাটে। দ্বিতীয়টি রাজ মাল্টিমিডিয়ার স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম রাজের ফ্ল্যাটে।
পরীমনির ফ্ল্যাট থেকে মাদকদ্রব্যসহ পরীমণি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দিপুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরীমণির বাসায় অভিযান শেষ করেই বনানীর ৭ নম্বর সড়কের একটি ফ্ল্যাটে অভিযান শুরু হয়। রাজের এই অফিস থেকে ইয়াবা, বিদেশি মদ, বিকৃত যৌনাচারের সরঞ্জাম ও পর্নোগ্রাফি কনটেন্ট জব্দ করা হয়। রাজের ফ্ল্যাট থেকে রাজ ও তার সহযোগী সবুজ আলীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। দুই অভিযান শেষে গ্রেপ্তার ৪ জনকে র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
দিপু ও কবিরের সহায়তায় পরীমনি তার বাসায় আধুনিক পন্থায় মাদকদ্রব্য, বিদেশি মদসহ অন্য মাদক ও মাদক সেবনের উপকরণ কিনে মজুদ করেছেন। যা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে অপরাধ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় র্যাব সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে দুই অভিযানের বিষয়ে বলেন সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। অভিযানে কী কী জব্দ হয়েছে তা বিস্তারিত জানায় র্যাব। পরীমণির বাসা থেকে জব্দ করা হয়েছে ৮ বোতল প্লাটিনাম লেভেল, ৩ টি ব্ল্যাক লেভেল, ২টি চিভাস রিগাল, ২টি ফক্স গ্রোভ, ১টি ব্লু লেভেল, ২টি গ্ল্যানলিভেট, ১ বোতল গ্ল্যানফিডিচ। আরও জব্দ হয়েছে ৪ গ্রাম আইস ও ১টি স্লট এলএসডি। এ ছাড়া জব্দ তালিকায় একটি বং পাইপের কথাও বলা হয়েছে।
চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক রাজের অফিস থেকেও বিপুল পরিমাণে মদ জব্দ করার কথা জানিয়েছে র্যাব। তারা জানায়, রাজের বাসায় মিলেছে ৭ বোতল গ্ল্যানলিভেট, ২টি গ্ল্যানফিডিচ, ৪টি ফক্স গ্রোভ, ১টি প্লাটিনাম লেভেল।
এর বাইরে সিসায় ব্যবহৃত চারকোলের একটি প্যাকেট, ২ সেট সিসার সরঞ্জাম, ২ ধরনের সীমা তামাক, সিসা সেবনের জন্য ব্যবহৃত অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের ১টি রোল, ৯৭০ পিস ইয়াবা। এছাড়া যৌনাচারে ব্যবহৃত ১৪টি বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম, ১টি সাউন্ড বক্স ও ২টি মোবাইল ফোন সেট এবং ১টি মেমোরি কার্ড জব্দ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে পরীমণি, রাজসহ ৪ আসামিকে আলামতসহ বনানী থানায় হস্তান্তর করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ২টি মাদক ও ১টি পর্ণোগ্রাফি আইনে মামলা করে র্যাব-১।
পরীমণির বিরুদ্ধে করা মামলায় বলা হয়, গোপন তথ্যে ভিত্তিতে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। পরীমণি ও তার সঙ্গে আটক দিপু বনানীতে পরীমণির বাসায় অবস্থান করছে। মাদকদ্রব্য জব্দ ও আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযানটি পরিচালিত হয়। অভিযানে উদ্ধার মাদকদ্রব্যের বিষয়ে পরীমণি কোনো বৈধ কাগজ ও সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি বলে এজাহারে দাবি করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, পরীমণি তার সহযোগীদের সাহায্যে বিভিন্ন ব্রান্ডের বিদেশি মদসহ জব্দ হওয়া মাদকদ্রব্য কিনে তার বাসায় রাখতেন।
পরীমণি রাজের কাছ থেকে প্রায়ই বিদেশি মদ সংগ্রহ করতেন, এমন তথ্য পেয়ে রাজের অফিসে পরবর্তী অভিযানটি পরিচালিত হয় বলে এজাহারে বলা হয়েছে।
বনানী থানা পুলিশ মাদক মামলায় পরীমণি ও তার সহযোগী দিপুর ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৪ দিন করে রিমান্ড দেন।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST