ঢাকা ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:২৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১
সাইফুর রহমান শামীম ,কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতে ছিলনা বৃষ্টি। আমন চাষাবাদের জন্য বৃষ্টির জন্য আষাঢ়-শ্রাবণ মাসেও তীর্থের কাকের মত আকাশ পানে চেয়েছিল এ অঞ্চলের কৃষকেরা। একদিকে অনাবৃষ্টি আর অন্যদিকে বীজতলার চারার রোপণের সময় পার হয়ে যাওয়ার উপক্রম। তাই তো সঠিক বয়সের চারা রোপণের তাগিদে সেচদিয়ে চারা রোপণ করতে হয়েছে এখানকার অধিকাংশ কৃষকদের। চারা রোপণের পর কয়েক দফায় সেচ দেয়ার পর সবুজ সতেজতায় বেড়ে ওঠছিল আমন ক্ষেতের চারাগাছ গুলো। মাঠে মাঠে ধানক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত ছিল কৃষাণ কৃষাণীরা। ক্ষেতে সবুজের ঢেউয়ের আড়ালে ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখেন কৃষকেরা। কিন্তু এবারও বিধিবাম। আষাঢ় শ্রাবণের অধিকাংশ সময় অনাবৃষ্টিতে কাটলেও ভাদ্রের শেষে এসে ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে প্লাবিত হয় নিম্নাঞ্চল। সৃষ্ট বন্যায় তলিয়ে যায় নদী অববাহিকার বহু রোপা আমনের ক্ষেত। বন্যার করাল গ্রাসে এবারও কৃষকের স্বপ্নের সলিল সমাধি হয়। ফলে ফসল নস্ট হয়ে কৃষকদের কোটি টাকার উপরে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চলতি আমন মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে এসে বন্যার পানিতে তলিয়ে অনেকের ক্ষেতের ফসল পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। বিঘা প্রতি কৃষকদের প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে ফসল হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকেই। তবুও হাল ছাড়তে রাজি নন কৃষকেরা। পঁচে নষ্ট হয়ে যাওয়া ক্ষেতে আবার একরাশ স্বপ্ন নিয়ে নতুন উদ্যমে আবার আমন চারা রোপণ করছেন।
দ্বিতীয়বার আমন চারা রোপণে ব্যস্ত ধানচাষীরা বলেন, এবারে খুব বড় বন্যা হয়নি। তবে ছোট আকারে যে বন্যা হয়েছে এর পানি বেশ কিছুদিন ছিল।যার ফলে তলিয়ে থাকা ক্ষেতের ধানগাছ পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা আবার নতুন করে জমি চাষ দিয়ে চারা রোপণ করছি। ধান আবাদ না করলে খাব কি? তাছাড়া জমি তো আর ফেলে রাখা যাবেনা।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রশিদ জানিয়েছেন, এবছর বন্যায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ৯৭০ হেক্টর ধানক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছিল। পানি নেমে যাওয়ার পর ১২০ হেক্টর জমির আমন ধানক্ষেত পুরোপুরি নস্ট হয়ে গেছে। এরফলে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নস্ট হয়ে যাওয়া ক্ষেতে অনেক কৃষক আবার নতুন করে চারা রোপণ করছেন। কৃষক পর্যায়ে এখনো পর্যাপ্ত চারার মজুত আছে। পাশাপাশি কৃষকের কোন জমিই যাতে পতিত না থাকে সেজন্য প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের বিনামূল্যে মাসকলাই, সরিষা বীজ প্রদানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST