ব্যস্ততা বেড়েছে ইসিতে

প্রকাশিত: ৮:৫৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১

ব্যস্ততা বেড়েছে ইসিতে

আগামী কয়েক মাসের মাসের মধ্যে দেশের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি), জেলা পরিষদ নির্বাচন ও কয়েকটি সিটি করপোরেশনসহ বেশ কিছু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কারণ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এসব নির্বাচন আয়োজনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এসব নির্বাচনকে ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে নির্বাচন কমিশনের।

এদিকে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি। তাদের মেয়াদকালের মধ্যেই এসব নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। তবে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে। করোনার কারণে দীর্ঘ সময় আটকে ছিল এসব নির্বাচন।

জানা যায়, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন উপযোগী প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদের ভোট শেষ করতে চায় ইসি। চার ধাপে এসব নির্বাচন হতে পারে। চলতি মাসের শেষ দিকে বা অক্টোবরের শুরুতে এসব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। এটি হবে দেশের দশম ইউপি নির্বাচন।

২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নবম ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও আগামী জানুয়ারি মাসে জেলা পরিষদ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর ৬১ জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

অন্যদিকে বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষের আগেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনও শেষ করতে চাচ্ছে ইসি।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অক্টোররের শেষ সপ্তাহ অথবা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নাসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। সে হিসাবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে নাসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর নাসিকের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এতে ওয়ার্ড রয়েছে ২৭টি।

এ ছাড়া সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে বেশ কয়েকটি উপজেলা, পৌরসভা ও সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন এবং জেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে চাচ্ছে বিদায়ী কমিশন। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।

নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষের আগে সাংবাবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে যেসব নির্বাচন করতে হবে, তার সবই কমিশন করে যাবে।

ইতোমধ্যে ইসির কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) এবং কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনসহ সব ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষ করতে চাচ্ছে ইসি। এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে ইসি সচিবালয়।

ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবির খোন্দকার বলেছেন, সাড়ে চার হাজার ইউনিয়নের মধ্যে আমরা মাত্র ২০৪টিতে ভোট নিতে পেরেছি।

ডিসেম্বরের মধ্যে চার হাজার মতো ইউনিয়ন, নারারণগঞ্জ সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, কমিল্লা-৭ শূন্য আসনে উপনির্বাচন, জেলা পরিষদসহ অন্যান্য নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তবে বর্তমান কমিশনের মেয়াদকালীন সময়ে মধ্যে এতগুলো নির্বাচন শেষ করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষের আগে কোন কোন নির্বাচন শেষ করে যাবে তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও এতটুকু বলতে পারি, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রক্ষায় কমিশন সবই করবে।

আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আইনানুযায়ী আগামী বছর ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া শেষ করবেন।

২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সাবেক সচিব কে এম নুরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) করে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করা হয়।

কমিশনের অপর চার কমিশনার হলেন-সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ বেগম কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।

উল্লেখ্য, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয়েছে। তবে সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতিকে এ নিয়োগ দিতে হয়।


মুজিব বর্ষ

Pin It on Pinterest