ঢাকা ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:২০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৪, ২০২১
পারভেজ,বরিশাল প্রতিনিধিঃ
ঢাকার মিরপুর থেকে হারিয়ে যাওয়ার আড়াই বছর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী আরিফুর রহমান আরিফ এর ভাইরাল করা পোস্টের কল্যাণে মা’কে ফিরে পেলেন ছেলে দুলাল মিয়া, হানিফ মিয়া ও নাজমা ।
বুধবার সকাল ৮.০০ টায় পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ থানা বলদিয়া ইউনিয়নের বিন্না গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল বাহাদুর এর আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে থাকা অবস্থায় মা সন্তানদের এই দেখা হয়। সন্তানদের ফিরে পেয়ে ৬৫ বছর বয়সী মানসিক ভারসাম্যহীন মা আবেগে আপ্লুত হয়ে ছেলেকে ও মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছেলে ও মেয়ে মাকে ফিরে পেয়ে মাকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকেন। এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত শতাধিক নারী-পুরুষের চোখের পানি চলে আসে।
জানা যায়, আড়াই বছর পূর্বে গত ২৮/০৮/২০১৯ তারিখে ঢাকার মিরপুরে ছেলেদের নিকট থাকাবস্থায় হারিয়ে যান মানসিক ভারসাম্যহীন মা অজুফা বেগম। ছেলেরা অনেক খোঁজাখুজি করে, মাইকিং করে, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে, ফেইসবুকে প্রচার করেও আর মায়ের খোঁজে পায়নি দুলাল মিয়া। এদিকে মা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় এতদিন কোথায় ছিলেন তা কেহ বলতে পারেন না। তবে এক মাস পূর্বে পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ থানার বিন্না বাজারে তাকে ঘুরতে দেখে লোকজন স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল মেম্বারকে জানান। তিনি ১নং বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করে ইউনিয়ন পরিষদের ত্রাণ তহবিল থেকে চাল দিয়ে একটি বাড়িতে তার আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন এবং অন্যান্য খরচ পরিচালনা করতে থাকেন।
গত ২১ নভেম্বর উক্ত গ্রামে কর্মরত আলী হায়দার মল্লিক আব্দুল্লাহ নামক এক এনজিও কর্মী সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী আরিফুর রহমান আরিফ এর সাথে উক্ত ব্যাপারে যোগাযোগ করলে তিনি উদ্ধারকৃত বৃদ্ধার একটি ছবি ও ভিডিও নিয়ে তার নিজের ফেসবুক আইডিতে, নিজের পেইজে, শতাধিক পাবলিক ও প্রাইভেট গ্রুপগুলোতে ছড়িয়ে দিয়ে ভাইরাল করেন এবং অজুফা বেগমের একটি ভিডিও আপলোড করেন। দেশে বিদেশে ভাইরাল হয় ভিডিওটি। এই ভিডিওর সূত্র ধরে অজুফা বেগমের নিজ জেলা কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি উপজেলার চর বেতাল গ্রামের কয়েকজন যোগাযোগ করেন এডভোকেট আরিফুুর রহমানের সঙ্গে। তারপরে তারা ছেলে দুলালকে জানান গত ২২ নভেম্বর। তারপরে ছেলে মেয়ে লঞ্চ যোগে ২৩ নভেম্বর নেছারাবাদের বিন্না গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন মায়ের সাথে দেখা করার জন্য ও মাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
এডভোকেট আরিফুুর রহমান জানান, “আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসের কারণে আড়াই বছর পর ছেলে ও মেয়ে তার মাকে ফিরে পেয়েছে, তাতে আমার অনেক আনন্দ লাগছে। মা সন্তান জীবিত থেকেও দেখা করতে না পারার এই বিচ্ছেদ যেন যুগ যুগ অতিক্রম না করে তাই আমি আত্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যাপক পরিসরে প্রাপ্তি স্বীকার নিউজটি প্রচার করি। অবশেষে আল্লাহ আমার মনের ইচ্ছা পূরণ করেছেন।”
দুলাল মিয়া জানান, কোনোদিন ভাবিনি আমার মা’কে দেখতে পাবো। আল্লাহ আমাদের সহায় হয়েছে, আল্লার কাছে শুকরিয়া।
দুলাল মিয়ার বোন নাজমা বেগম জানান, আমি সব সময় বলতাম একদিন আমার মা ফিরে আসবে। আল্লাহ আমার ডাক কবুল করেছেন। আমরা আমার মাকে এডভোকেট আরিফ স্যারের কল্যাণে ফিরে পেয়েছি।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST