ফেনী সমিতির নির্বাচন বর্জন নিয়ে যা বললেন আলহাজ্ব গনি আহমেদ

প্রকাশিত: ১১:৩০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০২১

ফেনী সমিতির নির্বাচন বর্জন নিয়ে যা বললেন আলহাজ্ব গনি আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রাণপ্রিয় ফেনীবাসী, আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। আমি আলহাজ্ব গনি আহমেদ আপনারা আমাকে কমবেশি চেনেন ও জানেন। আমি ১৯৭৮ সাল থেকে ছোট পরিসরে ব্যবসা শুরু করি। ১৯৮৩ সালে আমি সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করি। অতঃপর ধর্মীয় ও সমাজ সেবামূলক কর্মকান্ডে যেমন মসজিদ মাদ্রাসা স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা এবং অসহায় গরীব দুঃখীদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসার চেষ্টা করে আসছি।
ফেনী বাসী কাউকে উপকার করতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭ সালে আমি ফেনী সমিতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর ফেনীবাসীর কল্যাণে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছি।
টানা তিন মেয়াদে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নয় বছর সিনিয়র সহ-সভাপতি ও নয় বছর সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছি। আমার দায়িত্বকালীন সময় সভাপতি পেয়েছি দুই মুস্তাফিজ ভাইকে।এই ১৮ বছরের মধ্যে মন প্রাণ উজাড় করে ফেনীবাসীর কল্যাণে নিজেকে আত্মনিয়োগ করি। দায়িত্ব পালন কালীন সময়ে আমরা পিকনিক মেজবান ইফতার শিক্ষাবৃত্তি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প জাতীয় দুর্যোগে ত্রাণ বিতরণ শীতবস্ত্র বিতরণ সহ ফেনীর অসহায় মানুষের পাশে ছিলাম। ফেনীবাসির প্রাণের সংগঠন কে স্থায়ীভাবে রূপ দেয়ার জন্য আমি এবং জনাব মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল ভাইয়ের উদ্যোগে ঢাকার বুকে পুরানা পল্টনে ট্রপিকানা টাওয়ারে ফ্ল্যাট কিনে ফেনীবাসীর স্থায়ী কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করি। আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রায় ২০০০ হাজার লাইফ মেম্বার করি এবং সমিতির ফান্ডে প্রায় দেড় কোটি টাকা জমা রেখে আসি।
গত দুই মেয়াদে ফেনীর মাননীয় সাংসদ জনাব নিজাম উদ্দিন হাজারী ভাই আমাকে সভাপতি পদে থাকার প্রস্তাব করলেও আমার প্যানেল পছন্দ না হওয়ায় অংশগ্রহণ করিনি।
অবশেষে প্রায় চার মাস পূর্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ ব্যক্তিগত সহকারি জনাব জাহাঙ্গীর ভাইয়ের অফিসে উনার উপস্থিতিতে শেখ আব্দুল্লাহ ভাইয়ের সাথে সাক্ষাত হলে তিনি আমাকে ফেনী সমিতির পরবর্তী মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করতে অনুরোধ করেন, তৎপরবর্তী সময়ে আমার গুলশানস্থ হাই-ফ্যাশন গ্যালারিতে আসলে পুনরায় আমাকে একই প্রস্তাব দেন। এতে আমি ফেনী সমিতির সভাপতি হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করি,পরে ফেনীতে গিয়ে নিজাম উদ্দিন হাজারী সাহেবের সাথে এ বিষয়ে পরামর্শ নিলে, তিনি আমাকে একটি প্যানেল দেওয়ার জন্য বলেন।অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আমাকে নিশ্চয়তা প্রদান করেন। তারপর আমি যোগ্য লোকের সমন্বয়ে এবং এমপি সাহেবের পরামর্শক্রমে একটি প্যানেল ঘোষণা করি, সেই মতে আমি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রস্তুতি নেই। অতঃপর আমি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ফেনীবাসী কে সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে ৩৫৭৪ জনকে সদস্য হওয়ার আবেদন করি ।
উদ্দেশ্যমূলক ভাবে এর মধ্য হইতে আমাদের সনাক্তকৃত ১১০০ সদস্য কে বাতিল করেন। বাতিলকৃত সদস্যগণ অধিকাংশই আমাদের প্যানেল সদস্যদের পারিবারিক সদস্য ও নিকট আত্মীয় স্বজন। অন্যদিকে তাদের আবেদিত প্রায় ৪১০০ সদস্যের মধ্যে একজনও বাদ দেয় নাই। যে সকল ভোটার তারা করেছে তাদের অধিকাংশই ভুয়া। ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়া ও ফুলগাজী উপজেলধীন গ্রামে বসবাসরত লোকদেরকে ঢাকায় ভুয়া ঠিকানা দিয়ে ভোটার বানিয়েছে, বিস্তারিত ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর নেই এবং অধিকাংশ তথ্য ভুল ও মিথ্যা। তাছাড়াও তারা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এর অন্য জেলার গার্মেন্টস শ্রমিকদের কে ভোটার বানিয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, ভুয়া ভোটারদেরকে গ্রাম অঞ্চল থেকে ভোটকেন্দ্রে আনার জন্য ৫০ টি আন্তঃজেলা বাস ভাড়া করেছে ,এটা সমিতির অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছুই না। প্রিয় ফেনী বাসী আপনারা বিষয়টি অনুধাবন করুন।
শুরু থেকে আমরা লক্ষ্য করে আসছি যে, ফেনী সমিতির সদস্য হওয়ার ফরম দেয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা শুরু করেন।
প্রথমে ভোটের তারিখ ঘোষণা করেছিল ২৫শে ডিসেম্বর ২০২১, কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বর্তমান প্যানেল ব্যতীত অন্য কেউ যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে তার জন্য অযোগ্য অথর্ব আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ প্রায় একমাস এগিয়ে ২৭ শে নভেম্বর পুনঃনির্ধারণ করেন। অথচ আপনারা জানেন ২৮ নভেম্বর ছাগলনাইয়া ও পরশুরাম উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। উক্ত নির্বাচনে ভোটারদের কে এলাকায় পাঠিয়ে ভোটারবিহীন ফেনী সমিতির নির্বাচন করার উদ্দেশ্যে তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। শুরুতে ২৫ শে ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ কে সামনে রেখে আমি ব্যক্তিগতভাবে ফেনী সদরের এমপি নিজাম ভাইয়ের সাথে কথা বলে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে দুবাই গেলে হঠাৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নির্বাচনের তারিখ ২৭ শে নভেম্বর ও মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ তারিখ ৩১ শে অক্টোবর নির্ধারণ করেন। এতে আমি তড়িঘড়ি করে চিকিৎসা না নিয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হই। তাদের পরিকল্পনা ছিল আমি বিদেশে থাকার কারণে যেন প্যানেল তৈরি করে জমা দিতে না পারি। প্যানেল জমা দানের পর আমাদের তিন জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেন । এই বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করলে অপদার্থ নির্বাচন কমিশন কর্ণপাত করেনি। অসংখ্য অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন ও ফেনীর শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের কাছে বিচার চেয়েও কোন প্রতিকার না পাওয়ায় মহামান্য আদালতের শরণাপন্ন হই।
কিন্তু বিধিবাম! সকল যুক্তি তর্ক ও প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত নির্বাচন স্থগিতাদেশ দেয়ার পর্যায়ে, অশুভ শক্তির ইঙ্গিতে আমাদের আবেদন খারিজ করে দেন।
একটি কথা না বললেই নয় যে, গঠনতন্ত্র মোতাবেক নির্বাচন চলাকালীন সময়ে সমিতির কার্যালয় ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বর্তমান কার্যকরী কমিটি, সমিতির কার্যালয়ে বসে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
টেলিফোনে ভোট চাওয়ার নামে বাজে প্রকৃতির মেয়েদেরকে নিয়ে ফেনী সমিতির কার্যালয়কে রঙ্গ-তামাশার মেলায় পরিণত করেছে।
হায়রে ফেনী সমিতি!!
গত সাড়ে ছয় বছরের মধ্যে তাদের কি অবদান ছিল?
আমাদের রেখে আসা সমিতি অফিসের ডেকোরেশন করা হইতে যত টেবিল ,চেয়ার, এয়ার


মুজিব বর্ষ

Pin It on Pinterest