কুড়িগ্রামে হাটে পাইকারও নাই, কেউ দামও বলছে না

প্রকাশিত: ৭:২৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ৫, ২০২২

কুড়িগ্রামে হাটে পাইকারও নাই, কেউ দামও বলছে না

সাইফুর রহমান শামীম ,কুড়িগ্রাম।
আসন্ন ঈদুল আজহাকে ঘিরে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় জমে ওঠতে শুরু করেছে কুরবানির হাট। এ উপলক্ষ্যে জেলায় প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩৪ হাজার গবাদি পশু। কুরবানির ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে পশুর হাটে বিক্রেতার ভীড় ততই বাড়ছে।
কিন্তু বন্যার কারণে হাটে আমদানি বেশি থাকায় তুলনামূলক ভাবে ক্রেতা সংকটে রয়েছে বিক্রেতারা।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই ) সদর উপজেলার একমাত্র ঐতিহ্যবাহী পশুরহাট যাত্রাপুর ঘুরে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্র দুধকুমার ও ধরলা নদীর অববাহিকাসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পশু নিয়ে হাটে এসেছেন পাইকারি বিক্রেতা, খামারি ও গবাদিপশু পালনকারি প্রান্তিক কৃষকগণ। দেশি গরুতে বাজার ভরে গেছে। বিক্রেতারা বড় গরুর দাম হাঁকছেন দেড় লাখ থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়াও ৯০ থেকে ১০০ কেজি ওজনের গরুর দাম ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে। কুরবানির সম্মেলিত ও একক ক্রেতাসহ জেলার বাইরে থেকে বেশ কিছু পাইকার এসেছেন। তবে ক্রেতা-সংকট থাকায় জমে উঠছে না ঐতিহ্যবাহি কুরবানির এ হাটটি।

জানা গেছে, জেলায় ছোট বড়-মিলে ১৬টি নদ-নদী রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও ধরলা। এসব নদীর অববাহিকায় অসংখ্য চর দ্বীপ চর রয়েছে। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ গবাদিপশু পালন করে থাকেন। তারা প্রতি বছর ঈদুল আজহায় তাদের পালিত গবাদিপশু বিক্রি করে সংসারের উন্নয়ন ঘটায়।

একাধিক খামারি ও প্রান্তিক কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোখাদ‍্যরে দাম তুলনামুলক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার পরেও কোরবানির পশুর দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আছে। এবার মাঝারি ও ছোট গরুর চাহিদা বেশি। বিজিবির কড়া নজরদারিতে ভারতীয় গরু কম আসায় বেশ লাভবান হবেন বলে আশা করছিলেন তারা। কিন্তু আগাম বন্যার কারণে হাটে আমদানি অনেক বেশি থাকায় ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে।

কুড়িগ্রাম প্রাণীসম্পদ অফিস সুত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে জেলায় পশুর চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার। আর প্রস্তুত আছে ১লাখ ৩৪ হাজার পশু। এখানকার চাহিদা মিটিয়ে বাকিগুলো যাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

ঝুনকার চর থেকে সদরের যাত্রাপুর হাটে গরু বিক্রি করতে আসা আমিনুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত বন্যা হওয়ার কারণে হাটে গরুর আমদানি এবার অনেক বেশি। দুটি নিয়ে আসছি পাইকারও নাই, কেউ দামও বলছে না। কারণ আমাদের ওখানে এখনো সবমাঠ বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। গরুর খাদ্যের খুব সংকট দেখা দিয়েছে। তাই বিক্রি করতে হাটে নিয়ে আসছি।

সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, বন্যার কারণে আজ হাটে বিভিন্ন গবাদিপশুর আমদানি অনেক বেশি। আমদানি হিসেবে তুলনামূলক ক্রেতা কম। আর দাম গতবারের চেয়ে একটু কম বোঝা যাচ্ছে। এই হাটে বেশিরভাগ গরু বিভিন্ন চর থেকে এসেছে।

যাত্রাপুর হাট ইজারাদার সেলিম মিয়া বলেন, আমাদের হাটে বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক গরু আসছে। কিন্তু ক্রেতা একেবারেই নেই। এবার হাট জমবে কিনা তা নিয়ে দুঃশ্চিতায় আছি। তবে আরও তো সময় আছে দেখা যাক আল্লাহ ভরসা।

কুড়িগ্রাম প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার বলেন, জেলায় ছোট বড় মিলে প্রায় ১হাজার
৭০টি খামার রয়েছে। এতে গরুর সংখ্যা ৯ লাখেরও বেশি। এদিকে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১লাখ ৩৪ হাজার পশু প্রস্তুত আছে। আর এখানকার চাহিদা প্রায় ৯০ হাজার। বাকিপশুগুলো যাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

তিনি আরও বলেন, কুড়িগ্রামে প্রায় চার শতাধিক চরাঞ্চল আছে। সেখানে রয়েছে যথেষ্ট চারণভূমি প্রতিবছর এখানকার কৃষকগন ঈদুল আজহা উপলক্ষ ব্যাপক পরিমান গবাদিপশু পালন করে থাকেন। ইতিমধ্যে কোরবানির হাট শুরু হয়ে গেছে হাট পর্যপেক্ষনে দেখা গেছে ক্রেতার চাইতে গবাদিপশুর যে আতিথ্য সেটাই বেশি। তবে আমরা আসা করছি দেশের দূর দূরান্তে থেকে পাইকাররা ও ক্রেতা সাধারণ আসলে এখানকার কৃষকরা তাদের গবাদিপশু সম্পন্ন বিক্রি করতে পারবেন এবং তারা লাভবান হবেন।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest