মামুনুর রশীদ, পঞ্চগড় প্রতিনিধি।। পঞ্চগড়ে যৌতুকের দাবী পূরণ করতে না পারায় পাষন্ড স্বামীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে গৃহবধু লিপি আকতার (৩০)। নির্যাতিতা গৃহবধুর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চগড় সদর উপজেলার তুলারডাঙ্গা এলাকার মোস্তফার মেয়ে লিপি আকতার এর সাথে ১৭ বছর পুর্বে একই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আফসার আলীর ছেলে বিপ্লব এর বিয়ে হয়। তাদের একটি ১৪ বছরের ছেলে রয়েছে। বিয়েতে বিপ্লবের পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী যৌতুকসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দেয়া হয়। সম্প্রতি লিপি আকতার তার বাবার কাছ থেকে আরোও দুই লক্ষ টাকা এনে তার স্বামীকে দেয়। তাতেও সন্তুষ্ট না হয়ে তার স্বামী আরোও যৌতুক দাবী করেন। যৌতুকের টাকা পিতার কাছ থেকে আনতে না পারায় লিপির উপর প্রতিনিয়ত নির্যাতন শুরু করেন বিপ্লব ও তার পরিবার।
গত ২১ জানুয়ারী স্বামীসহ ওই পরিবারের কয়েকজন মিলে লিপিকে নির্মম নির্যাতন করে ঘরে তালা বন্ধ করে হত্যার পরিকল্পনা নেয়। নিযার্তনের মাত্রা সইতে না পেরে ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় লিপি। প্রত্যক্ষদর্শী মুস্তাকিন ও রানু বেগম জানায়, যৌতুকের দাবী মিটাতে না পারায় ওই পরিবারে প্রায় মারামারির ঘটনা ঘটে। এদিকে বিপ্লব ও তার পরিবারের লোকজন লিপি আকতারকে সব সময় নির্যাতন করতো। মঙ্গলবার(২১ জানুয়ারী) রাত ১১টার সময় বিপ্লব ও তার পরিবারের লোকজন লিপিকে হত্যার উদ্দেশ্যে বটি দিয়ে কুপাতে থাকে । ফলে প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হলেও লিপিকে ঘরে আটকে রাখা হয়। লিপির চিৎকার শুনে তাৎক্ষনিক আমরা কয়েকজন মিলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। লিপির মা আনোয়ারা বেগম জানান, যৌতুকের জন্য বিপ্লব ও তার পরিবারের সদস্যরা আমার মেয়েকে হত্যা করার জন্য তারা তাকে বটি নিয়ে মাথায় কোপায়। বর্তমানে আমার মেয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আমি মেয়ের নির্যাতনকারীদের শাস্তি চাই। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আরএমও ডাঃ সিরাজুদ্দৌলা পলিন, জানান, লিপির শরিরের বিভিন্ন স্থানে যখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আমরা তার চিকিৎসা করছি। বুধবার (২২ জানুয়ারী) বিকেলে লিপি বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে আসামী বিপ্লবকে আটক করে। পঞ্চগড় সদর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসেন জানান, স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে থানায় স্ত্রী লিপি বাদী হয়ে স্বামী বিপ্লবকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। আমরা আসামীকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছি।