নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে ভেজা বালু পরিবহন: সড়কের অবস্থা বেহাল

প্রকাশিত: ৭:১৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৫, ২০২০

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে ভেজা বালু পরিবহন: সড়কের অবস্থা বেহাল

রিফাত আহমেদ রাসেল, নেত্রকোনা প্রতিনিধি: চাদিকে দিকে তিব্র শীতের কারণে যখন জনজীবন বিধ্বস্ত ঠিক সময়ই কাদাঁ কারণে সড়ক দিয়ে চলাচল করাই দায় হয়ে দাড়িয়েছে নেত্রকোনার দূর্গাপুর পৌরবাসীর। বেপরোয়া ট্রাক দিয়ে ভেজা বালু পরিবহন করায় পৌর শহরের প্রায় সব রাস্তা গুলোর অবস্থা করুন। সরকারী ভাবে ভেজা বালু পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও আইন অমান্য করে দিনে রাতে ২৪ ঘন্টাই সোমেশ্বরী নদী থেকে অবাধে চলছে ভেজাবালু পরিবহন মহা উৎসব। শীতের এই শুকনা মৌসুমেও শহরের প্রতিটি সড়কে বষার্ মৌসুমের মতোই জমে আছে পানি আর কাঁদা। ফলে পৌর শহরের প্রায় সবসড়ক গুলোই চাষের ক্ষেতে পরিনত হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা মানুষ পায়ে হেটেঁ চলাছল করা অবস্থা নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে , পৌর শহরের তেরি বাজার ও আত্রাইখালী ঘাট থেকে পৌরশহর রাস্তা দিয়ে অব্যধ লড়ি ও নিষিদ্ধ ১০ চাকার গাড়ি ভেজা বালুবাহী পরিবহনের চিত্র। আর এই সব গাড়ি থেকেই পাহাড়ি ঝণার্র মত অঝড় ধারায় সড়কে ঝড়ে পড়চ্ছে পানি। এই থেকেই সড়ক গুলোতে তৈরী হচ্ছে কাঁদার। এতে চরম হুমকীতে জীবন-যাপন করছে স্থানীয় জনগন। অপর দিকে পৌর শহরের শিক্ষা নগর সাধুপাড়া এলাকার আদর্শবিদ্যাপিঠ দি চাইল্ড লার্নিং হোমস্, সুসঙ্গ আদর্শ বিদ্যানিকেতন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সুসঙ্গ সরকারী মহাবিদ্যালয়, দুগার্পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুগার্পুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ এর শিক্ষাথর্ীরা দিনের বেলায় বেপরোয়া ট্রাক, ট্রাক্টর ও লড়ি চলাচল এবং নদী থেকে ভিজাবালু পরিবহন বন্ধে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার রাস্তায় মিছিল করা সহ উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। এছাড়াও মানুষের চলাচল সহজ করতে পৌর শহরের ভিতর দিয়ে দিনের বেলায় লড়ি সহ সকল যানবাহন বন্ধ ও ভিজা বালু পরিবহন বন্ধে স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদার এমপি জেলা প্রশাসক সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ডিউ লেটারও দিয়েচ্ছেন।

স্থানীয়রা জানান, পৌরশহরের উকিলপাড়া, কলেজ রোড, উপজেলা চত্বর, হাসপাতাল এলাকার রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪ থেকে ৫ শত ট্রাক্টর চলাচলে রাস্তার অবস্থা করুণ দশায় পরিণত হয়েছে। রাস্তা পার হওয়া তো দূরের কথা ঐ রাস্তা দিয়ে পথচারীদের চলাচল করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যাম লেগে থাকে ঐ রাস্তায়। এতে করে নানা ধরণের প্রতিবন্ধকতা তৈরী হচ্ছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের। রাস্তায় প্রতিনিয়ত বিঘ্ন ঘটায় শিশুরা স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। বেলতলী এলাকার অনেক কাপড়ের দোকানী তাদের ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। হাসপাতাল এলাকায় ঐতিহ্যবাহী            দি চাইল্ড প্রিপারেটরী স্কুলের শিক্ষাথর্ীদের উপস্থিতিও কমে গেছে।

মাঝে মধ্যে অবৈধ লড়ি চলাচল বন্ধে উপজেলা প্রশাসন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করলেও তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন সচেতন মহল। প্রানের রাস্তা বাঁচাতে প্রয়োজনে বালু মহলের ইজারা বন্ধ করন সহ এ সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা চান স্থানীয় নাগরিক সমাজ, স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় অভিভাবকবৃন্দ। খেঁাজনিয়ে জানাগেছে, স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট চক্র প্রভাবশালী মহলের যোগসাজসে অবৈধ লাইসেন্স বিহীন লড়িগাড়ী অপ্রাপ্তবয়স্ক চালক দিয়ে বালু পরিবহন করাচ্ছে প্রতিনিয়ত। যারফলে ছোটখাটো দুর্ঘনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। বিগত ২০১৯ সনে শুধুমাত্র লড়িগাড়ী দিয়ে বিভিন্ন এলাকার শিক্ষাথর্ী হত্যা করা হয়েছে ১১জন, ট্রাকে পথচারী হত্যা করেছে ১২ জন। এ নিয়ে পৌর মেয়র আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুস সালাম বলেন, দুর্গাপুর পৌরসভা সহ আশপাশের ইজারাকৃত এলাকা থেকে ভিজাবালু পরিবহন নিষেধ করা হয়েছে। পৌরবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রাস্তায় লড়ি চলাচল বন্ধেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবুও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু গাড়ী চলাচল করছে। এ অবস্থা নিরসনে পৌর প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদার জানায়, সড়কে ভিজা বালু পরিবহন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ বন্ধ। তার পরও কিছ্থ ট্রাক এই আইন অমান করে ভিজা বালূ পরিবহন করছে । এদেরে বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest