সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বরিশাল নগরী ডাক্তার শূন্য

প্রকাশিত: ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০২০

সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বরিশাল নগরী ডাক্তার শূন্য
শফিউর রহমান কামাল বরিশাল ব্যুরোঃসরোজমিনে বরিশাল ঘুরে দেখা গেছে বরিশাল শহরের বিবির পুকুরের পাড় বাটার গলির ভিতরে অজস্র ডাক্তারের স্পেশাল চেম্বার এমনকি সেখানে দেখা যেত কিছু ডাক্তারের দালালদের আনাগোনা তারাও নেই ডাক্তার নেই। প্রতিটি চেম্বার বন্ধ অবস্থায় আছে মনে হয় যেন ভূতের বাড়ি।পাশের বেলভিউ গলি সেখানে গিয়ে দেখা গেছে একই অবস্থা বিরাজ করছে শুধু দুইজন সিকিউরিটি গার্ড, এরপর ল্যাব এইড,অ্যাপোলো প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানই ফাঁকা এককথায় বরিশাল ডাক্তার শূন্য।অথচ এই ডাক্তারাই প্রতিদিন রাত ৩/৪ টা পর্যন্ত রোগী দেখে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অন্যদিকে রোগীর ডাক্তারের সিরিয়াল পেতে হলে ৬/৭ দিন লেগে যেত কোথায় আমাদের সেই ডাক্তার ? দুনিয়ার কোথাও পর্যাপ্ত পিপিই নাই। এমনকি উন্নত বিশ্বেও মাথায় পলিথিনের গার্বেজ ব্যাগ লাগিয়ে পিপিই বানিয়ে চিকিসাকর্মীরা চিকিৎসা দিচ্ছেন।তাঁরা কেউ পালিয়ে ঘরে খিল এটে বসে থাকেনি। ব্রিটেন সরকারের স্বাস্থ‌্য বিভাগ আড়াই লক্ষ স্বেচ্ছাসেবক চেয়েছিল, ৩ দিনের মাথায় সাড়ে ৭ লক্ষ মানুষ স্বেচ্ছায় করোনা মোকাবেলায় নাম তালিকাভুক্ত করেছে! এরা মরার ভয় পায়নি, এটাই মনুষত্বের স্পিরিট। দেশে দেশে রিটায়ার্ড বুড়োবুড়ি ডাক্তার নার্স স্বেচ্ছায় নিজ পেশায় ফিরে এসেছে দায়িত্ব পালন করতে। কিউবার ডাক্তাররা সীমান্ত পেরিয়ে ইতালি গেছে সেবা করতে। আইরিশ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত তাঁর ডাক্তারি লাইসেন্স নবায়ন করে হাসপাতালে সহায়তা করতে ফিরে গেছেন। এগুলো মনুষত্ব ভাই। অথচ আপনারা বেসরকারি হাসপাতালগুলো বন্ধ করে দিয়ে, প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ করে দরজায় খিল এটে বসে আছেন। হাসপাতালে রোগী সামলাতে সারাবছরই হিমশিম খেতে হয়, এখন যদি আপনাদের সাধারন রোগীদেরকেও ওখানে দেখতে হয়, তাহলে কী অবস্থা দাঁড়ায় ভেবে দেখেছেন! ভাগ্যিস আপনাদের মতো মানুষ আমাদের বেশি নাই। থাকলে দেশ স্বাধীন হতো না। গ্রামের যে কৃষক জীবনে কোনদিন অস্ত্র দেখে নাই, সেও লুঙিতে কাছা মেরে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছে। বিদ্যানন্দের বাচ্চাগুলোকে দেখেন, বিডিক্লিনের কিশোর কিশোরীদের দেখেন, রোটারেক্ট’র ছেলেগুলোকে দেখেন-কেউ এদের বাধ্য করেনি। অথচ দিনরাত রাস্তাঘাট, বস্তি বাদাড় দাপিয়ে ত্রান দিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যাংকার, পুলিশ, সাংবাদিক, পানি সরবরাহ বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, টেলি যোগাযোগ বিভাগ, পরিচ্ছনতাকর্মী- কারা এই সংকটে কাজ ফেলে পালিয়েছে ? কিছু মানুষ জাতির ক্রান্তিলগ্নে সাড়া দিতে পারে, সবাই পারে না। আপনারা পারছেন না। সেটা নিয়ে দুঃখ নেই। কিন্তু দরজায় খিল এটে ফেসবুকের জানালা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করা আপনাদের মানায় না ভাই।চরম ক্রান্তির এই সময়ে স্রেফ নিজের কথা ভেবে লুকিয়ে থেকে আপনাদের প্রতি থাকা মানুষের যে শ্রদ্ধাবোধ হারালেন তা কি আর ফিরে পাবেন কোনদিন ? জনগনের ট্যাক্সের টাকায় যে ডাক্তারী বিদ্যাটা পেয়েছেন মানুষের চরম বিপদে সেটা কাজে না লাগিয়ে লুকিয়ে থেকে চরম ঘৃনার জায়গায় নিয়ে গেলেন নিজেদের। জাতির ক্রান্তিলগ্নে আপনাদের মতো ভীতু কাপুরুষদের মুখ থেকে কোন ফালতু যুক্তি শুনতে ভালো লাগে না।সবশেষে তাদের দেখে আমার তো সেই নচিকেতার গানের কথা মনে পড়ে যায়, তুমি কত শত পাশ করে এসেছ বিলেত ঘুরে মানুষের যন্ত্রণা ভোলাতে ……………………………. কশাই জবাই করে প্রকাশ্য দিবালোকে তোমার আছে ক্লিনিক আর চেম্বার…..ও ডাক্তার।

মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest