ঢাকা ১১ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৩৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২০
নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের দুঃ¯দের জন্য বরাদ্ধকৃত ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান’র বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে ওই ইউনিয়নের ৯জন ইউপিসদস্যসহ ভূক্তভোগীরা।
চাল না দিয়ে টোকেন ছেড়ার অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
*কিছু ব্যক্তির কাগজে স্বাক্ষর নিয়েও চাল পাননী।
* ৯জন ইউপি সদস্য তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন।ক্রবার বিকেলে উপজেলার ৬নং ভাদুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসমান জামিল এর বিরুদ্ধে ভাদুরিয়া বাজার চার মাথা মোড়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। এসময় ওই ইউনিয়নের ছয়টি ওয়ার্ডের ইউপিসদস্য(পুরুষ) তিনজন মহিলা সদস্য এবং স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জানাযায়, আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে নবাবগঞ্জ উপজেলার ভাদুরিয়া ইউপিতে ১৫৩৫ জন অসহায় দুঃ¯দের জন্য ১৫.৩৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধদেয় উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কার্যালয়।চালগুলো গত বৃহস্পতিবার ( ২৩ শে জুলাই) চাউল বিতরণ করা হয়। বিতরন শেষে তালিকায় থাকা বেশ কিছু দুঃ¯মহিলা চাল না পেয়ে পরিষদ ভবনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে, কবিরের স্থানীয় কিছু ব্যক্তি ওই মহিলাদের দেওয়া কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেইসবুক)আপলোড করলে ভিডিওগুলো ভাইরাল হয়ে যায়।
মানববন্ধনে ভাদুরিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য হারুনুর রশিদ অভিযোগ করে বলেন,‘ গতকাল বৃহস্পিতিবার পরিষদের দুঃ¯দের চাল বিতরণের সময় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। আমার ওয়ার্ডেই প্রায় ৩৫ জন ব্যক্তি চাল পায়নি। চালগুলো চেয়ারম্যান আসমান জামিল বিক্রি করে দিয়েছে।
শুধু আমার ওয়ার্ড নয়, তালিকায় নাম থাকার পর এবং টোকেন হাতে নিয়ে গ্রাম ভাদুরিয়া, সাকোপাড়া ,দীঘিরত্না, পাকুড়িয়া,বাজিদপুর,মহেশপুর,হলাইজানসহ বেশ কিছু গ্রামের প্রায় দুই শত ব্যাক্তি টোকেন হাতে নিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল না পাওয়ার এমন অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটায় ওই ভূক্তভোগী মহিলা ৭নং ওয়ার্ডের ঈদগাহ মাঠ এলাকায় সোনাউল্লাহ স্ত্রী কুলসুমা বেগম বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্যর দেয়া টোকেন নং নিয়ে পরিষদ ভবনে গেলেও সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত থাকার পরও চাল পাইনি।শেষে চেয়ারম্যান চাল দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে টোকেনটি ছিড়ে ফেলেদেয়।
নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রেফাতুল্লাহ বলেন,‘ ভাদুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যানকে ওই ইউনিয়নের দুঃ¯দের জন্য ১৫.৩৫ মেট্রিক টন চাল (ডিও) বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান সেই বরাদ্ধ কৃত চাল ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে বিতরণ করছেন। কেন এত জনব্যক্তি চাল পায়নি সেই বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে হবে।
তবে শুনেছি ইউপি সদস্যগণ চাহিদার চেয়ে বেশি টোকেন দিয়েছে। এর কারনেই এমন পরিস্থিতি হতে পারে বলে আমার ধারণা। চেয়ারম্যানকে মুঠোফোনে তাৎক্ষনিক ভাবে নিদের্শ দেওয়া হয়েছে চাল বঞ্চিত ব্যক্তিগণকে একদিন পর হলেও টোকেন নিয়ে আসলেই তাদেরকে যেন চাল প্রদান করা হয়।
তবে ইউনিয়নের বরাদ্ধকৃত সবার সাঝে চাল বিতরণ করা সম্ভব হয়নী বলে স্বীকার করেছেন চাল বিতরণের সময় উপস্থিত থাকা উপজেলা সহকারী প্রেকৌশলী জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন,আমার জানামতে প্রায় ১শ বা তার কিছু কম ব্যক্তিকে ওই সময় চাল বিতরণ করা সম্ভব হয়নী’।
জানতে চাইলে চাল বিতরণে অনিয়মের কথা অস্বীকার করে ভাদুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আসমান জামিন বলেন,‘ চাল বিতরণের ৫ জন মিলে একটি করে গ্রুপ করে বিতরণ করা হয়েছে। আমার নামে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সত্য নয়। কার্ড বা টোকেন বিহীন কিছু ব্যক্তি আসায় তাদেরকে চাল দিতে না পারায় অনেকের মাঝে তা ক্ষোভে সৃষ্টি হয়েছে ।
আমার মতে কিছু টোকেন কোন ইউপি সদস্য বা অন্য কেউ বেশী দিয়েছেন ,তারাই চাউল পায়নি। আমি সন্ধা পর্যন্ত থেকে না চাউল পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৪৫ জনকে চাউল বিতরণ করেছি।
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুনাহার বলেন,‘ আমরা বিষয়টি শুনেছি , সাথে সাথে চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছি ,যাতে কোন টোকেন ধারী ব্যক্তি চাউল নিতে এসে ফেরত না যায়। তবে কেন এত টোকেন ধারী ব্যক্তি চাউল পেল না তা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST