যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:৫৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২০

যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে বাংলাদেশ
আলোকিত সময় ডেস্কঃ আরেকটি দাপুটে পারফরম্যান্স, দুর্দান্ত জয় এবং অধরা স্বপ্নের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশের মাঠে নামা মানেই যেন এমন কিছুর পুনরাবৃত্তি। সেমিফাইনালে পাল্টাল না ফল। পচেফস্ট্রুমে যুবারা উড়িয়েছে বিজয়ের পতাকা। আর এবার ইতিহাসের পাতায় নিজেদের নাম তুলেছেন আকবর আলী, মাহমুদুল হাসান জয়, শরীফুল ইসলাম ও তৌহিদ হৃদয়রা। তাদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো উঠেছে যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে। জয়ের দিনে শুরু থেকেই সবকিছু ছিল বাংলাদেশের পক্ষে। ভাগ্যদেবীও ছিল বাংলাদেশের পাশে। টস জয়ের মধ্য দিয়ে ড্রেসিংরুমে উৎসব শুরু। বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। লক্ষ্য নাগালের বাইরে যেতে দেননি বোলাররা। ৮ উইকেটে নিউজিল্যান্ড তোলে ২১১ রান। সহজ এ লক্ষ্য হেসেখেলে ছুঁয়ে ফেলে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ৩৫ বল আগে ৬ উইকেটের বিশাল জয়ে বাংলাদেশ পৌঁছে যায় ফাইনালে। সেমিফাইনাল জয়ের ক্যানভাসে তুলির আঁচড় দিয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়। ডানহাতি ব্যাটসম্যান পেয়েছেন সেঞ্চুরি। স্বল্প রানের লক্ষ্যে দ্রুত উইকেট হারালে মাঠে আসেন জয়। ২২ গজকে বানিয়ে ফেলেন নিজের সাম্রাজ্য। সেখানে কড়া শাসন করেন কিউই বোলারদের। তাতে পেয়ে যান সেঞ্চুরি। সপ্তম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে জয় তুলে নেন বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি। তার মহাকাব্যে বাংলাদেশ পেল যুব ক্রিকেটে সবথেকে বড় সাফল্য। এর আগে ২০১৬ সালে ঘরের মাঠে মিরাজ-শান্তরা বাংলাদেশকে নিয়েছিল সেমিফাইনালে। শেষ চারে হারের পর তৃতীয় স্থান লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কাকে হারায় বাংলাদেশ। তাতে ঘরের মাঠে মেলে সান্তনা। কিন্তু এবার আকবর আলীরা দলকে ফাইনালে তোলার জেদ নিয়েই নামে বিশ্বকাপ মঞ্চে। সেই লড়াই জিতে আজ তারা শিরোপার থেকে মাত্র এক পা দূরে। লক্ষ্য তাড়ায় দুই বাঁহাতি ওপেনার সাজঘরের পথ ধরেন ৩২ রানের মধ্যে। সেখান থেকে জয় ও হৃদয়ের পাল্টা আক্রমণ। দুজন থিতু হওয়ার আগেই আগ্রাসন দেখান। তাতে স্কোরবোর্ড সচল থেকে গোটা সময়। হৃদয় স্ট্যাম্পড হয়ে ৪০ রানে ফিরে গেলেও জয় ছিলেন অনসং। ধ্রুপদী ব্যাটিংয়ে ডানহাতি ব্যাটসম্যান রাঙান পচেফস্ট্রুমের সবুজ গালিচা। ৭৭ বলে পেয়েছিলেন ফিফটি। পরের ৪৯ বলে জয় তুলে নেন সেঞ্চুরি। শতরানের ইনিংসটি কাটা পড়ে তিন অঙ্ক ছুঁয়েই। ততক্ষণে জয়ের থেকে মাত্র ১১ রান দূরে বাংলাদেশ। শাখাওয়াত ৪০ ও আকবর আলী ৫ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ম্যাচসেরা নির্বাচিত হওয়া জয় ১২৭ বলে ১৩ বাউন্ডারিতে সাজান নিজের ইনিংসটি। এর আগে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বোলাররা লক্ষ্য রেখেছিল নাগালে। ৪৭ ওভার পর্যন্ত সবকিছুই চলছিল ঠিকঠাক। শেষ ৩ ওভারে গড়বড় করে দলের রান নিউজিল্যান্ডের রান দুইশ ছাড়ায়। শেষ ৩ ওভারে ৩৭ রান তুলে নিউজিল্যান্ড। ৪৮তম ওভারে ৩ উইকেট পাওয়া শরীফুল ব্যয় করেন ১৩ রান। পরের ওভারে তানজিদ দেন ৫। শেষ ওভারে শরীফুল ছিলেন আরও বিবর্ণ। ইনিংসের সবথেকে বেশি ১৯ রান দিয়ে নিউজিল্যান্ডকে হাসিয়েছেন বাঁহাতি পেসার। নিউজিল্যান্ডের সেরা ব্যাটসম্যান বেকহ্যাম ৭৫ রানে অপরাজিত ছিলেন শেষ পর্যন্ত। কিন্তু শেষ হাসিটা আর হাসতে পারেননি। তার মান বাঁচানো ইনিংসটি আড়াল হয়ে যায় জয়ের মহাকাব্যে। শরীফুলের ৩ উইকেটের পাশাপাশি ২টি করে উইকেট নেন শামীম পাটোয়ারী ও হাসান মুরাদ। স্বপ্ন ছোঁয়ার পথে আরেকটা সিঁড়ি উঠতে হবে বাংলাদেশকে। ইতিহাস গড়ার হাতছানি বাংলাদেশের। আরেকটি জয় তাহলেই যুব বিশ্বকাপের দীর্ঘদিনের আক্ষেপ দূর হবে লাল-সবুজের বাংলাদেশের। রোববার এ মাঠেই বিশ্বকাপের ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত।

মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest