করোনাভাইরাসঃ লকডাউন আদেশে পর্যটক নেই কুয়াকাটায় ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা

প্রকাশিত: ৯:২৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৮, ২০২০

করোনাভাইরাসঃ লকডাউন আদেশে পর্যটক নেই কুয়াকাটায় ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা
আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা প্রতিনিধি : চেনাজানা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এখন যেন স্থানীয়দের কাছেই অচেনা লাগছে। এমন সমুদ্র সৈকত গত দুই/তিন দশকেও স্থানীয়রা দেখেনি। জনমানবহীন সৈকতের পুর্ব-পশ্চিমে শুধু মরুভূমির মতো বালু ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ছে না। নভেল করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে পর্যটকদের ভ্রমনে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা জারি করার কারনে পর্যটক শুন্য হয়ে গেছে কুয়াকাটার সৈকতে। দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতের বেলাভূমে দুই চারজন স্থানীয় মানুষ ছাড়া কোন পর্যটকের পদচারনা নেই। নেই স্থানীয় মানুষেরও কোলাহল। পর্যটনমুখী ব্যবসায়ীরা অলস সময় পার করছেন। ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীণ হয়েছে হোটেল মোটেল,ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সহ কুয়াকাটায় অবস্থানরত ট্যুর অপারেটররা। বেকার হয়ে পরেছে পর্যটনমুখী স্বল্প আয়ের মানুষগুলো। সন্ধ্যার পরে মানুষ শুন্য কুয়াকাটা সৈকতে নামলে গা ছম ছম করে। নেই আলোক সজ্জা,মরণব্যাধি, ঘাতক করোনা প্রতিরোধে সরকারের সর্বোচ্চ সতর্কতার কারণে কুয়াকাটার এমন দৃশ্য বিরাজ করছে।
ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নামায় পর্যটন নির্ভর হাজার হাজার ব্যসায়ীসহ সাধারণ মানুষ হতাশা ব্যক্ত করেছেন। দীর্ঘ সৈকত জুড়ে এখন বিরাজ করছে শুনশান নিরবতা। কোথাও নেই পর্যটকের কোলাহল। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮মার্চ (বুধবার) পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের নির্দেশে কুয়াকাটায় সৈকতে পর্যটদের চলাচল নিষিদ্ধ করেছে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আবাসিক হোটেল মোটেল সহ সকল বিনোদন কেন্দ্র গুলো। করোনা ভাইরাস থেকে সাবধান থাকার জন্য আগত পর্যটকদের স্ব স্ব বাড়ি ফিরে যাওয়াার জন্য মাইকিং করে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে। একই সঙ্গে সৈকতের সকল দোকানপাট সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পর থেকেই পর্যটক শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। পর্যটকদের ভ্রমনে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় হোটেল-মোটেলসহ খাবার রেষ্টুরেন্টগুলো বন্ধ রয়েছে। দু’একটি চায়ের দোকান খোলা থাকলেও ২৬ মার্চ থেকে সারা দেশের ন্যায় কুয়াকাটাকে লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে কুয়াকাটা সমুদ্র উপকুলের জেলেরাও পরেছে বিপাকে। সমুদ্রে মাছধরা নিষিদ্ধ না থাকলেও ক্রেতা সংকটের কারনে মাছের দাম কমে গেছে। বাজারজাত করতে পারছেন না আড়তদারা। যার কারনে কোন সরকারী নির্দেশনা ছাড়াই অধিকাংশ জেলেরা সমুদ্রে মাছ শিকার বন্ধ রেখেছে। বেকার হয়ে পরেছে এর সাথে জরিত শত শত শ্রমিক এবং জেলেরা। করোনা ভাইরাসের কারনে সারা দেশ লক ঢাউন হয়ে পরার কারনে সমুদ্র উপকুলে চুরি ডাকাতি শুরু হয়ে গেছে বলে মৎস্যজীবিরা জানান। আবাসিক হোটেল সৈকতের মালিক জিয়াউর রহমান শেখ বলেন, উপজেল প্রশাসনের নির্দশনার পর আমাদের হোটেল বন্ধ রাখা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বেশিরভাগ হোটেলের কর্মচারীদের ছুটি দেয়া হয়েছে। কুয়াকাটা ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, করোনা ভাইরাসের কারনে পর্যটনমুখী ব্যবসায়ীরা শত কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ট্যুরিষ্ট গাইড,পর্যটন নির্ভর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ট্যুর অপারেটররা সব থেকে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তিনি বলেন, ট্যুরিষ্টদের উপর নির্ভরশীল নিন্ম আয়ের মানুষ গুলোর কর্মহীন হয়ে পড়ায় সংসার চালাবেন কিভাবে এনিয়ে দূঃসচিন্তায় পরেছেন তারা। কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিষ্ট পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পরই আবাসিক হোটেল বন্ধ করে দিয়েছি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোনো পর্যটককে কুয়াকাটায় আবাসিক সুবিধা না দেওয়ার বিষয়েও জেলা প্রশাসনের নির্দেশ রয়েছে। এমন নির্দেশের বিষয়টি আমরা কুয়াকাটার শতাধিক আবাসিক হোটেলের মালিকদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি।

alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest