ঢাকা ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:২৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩১, ২০২০
আবুল হোসেন রাজু, কুয়াকাটা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। নভেল করোনা ভাইরাসের প্রকোপে ক্রেতা সমাগম না থাকায় বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৫’শ হেক্টর জমিতে এবার তরমুজের চাষাবাদ হয়েছে । ইতোমধ্যে ক্ষেতের ফসল কোথাও পেকেছে , আবার অনেক ক্ষেতে পাকার উপক্রম হয়েছে। উপজেলার ধানখালী, চম্পাপুর, ধুলাসার, লতাচাপলী, বালিয়াতলী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে এর চাষাবাদ অন্যান্য এলাকার তুলনায় বেশী হয়েছে। নভেম্বর মাস থেকে ডিসেম্বরে এর চাষাবাদ শুরু করে কৃষক । গাছে ফলন ধরা থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ফল পরিপক্ক হয়। এ বছর প্রথম অবস্থায় ক্ষেত ঘূর্নিঝড় বুলবুলের আঘাতে লন্ডভন্ড হলে কোন কোন কৃষক জানুয়ারীর শেষের দিকে,আবার অনেকে ফেব্রƒয়ারীর প্রথম সপ্তাহে দ্বিতীয়বার চাষাবাদ শুরু করে । এ উপজেলায় বিভিন্ন প্রজাতির তরমুজের মধ্যে বিগফ্যামিলী, জাম্বু জাগুয়ার, ড্রাগন ও বøাকটাইগার প্রজাতির তরমুজের ফলন ভাল বিধায় এগুলোর চাষাবাদ বেশী করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এ এলাকায় শতকরা আশি ভাগ কৃষক বিগফ্যামিলী প্রজাতির তরমুজই বেশী চাষাবাদ করে থাকেন। বিগত বছরের তুলনায় এবছর ব্যাপক ফলন হয়েছে। এসব তরমুজ ঢাকা, রাজশাহী, চট্রগ্রাম, দিনাজপুর, রংপুর, বরিশাল সহ দেশের বিভিন্ন এলাকার আড়ৎদাড়রা ক্ষেত থেকে তরমুজ কিনে ট্রাক বোঝাই করে নেন এলাকায়। তরমুজ পাকতে শুরু করলে শতশত ট্রাক অপেক্ষমান থাকে উৎপাদিত এলাকায়। এবছর করোন ভাইরাসের ভয়ে আড়ৎদারও আসছে না তরমুজ ক্রয়ে। অপরদিকে, কৃষকরা আড়ৎদারদের কাছ থেকে নেয়া দাদনের বোঝাও বেড়ে চলেছে । তবে অনেকের ক্ষেতে তরমুজ পেকে ফেঁটে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে একাধিক কৃষক। এ ব্যাপারে চম্পাপুর ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের অধিবাসী প্রভাষক মো.শাহারুল ইসলাম জানান, তাদের ১০০ শতাংশ জমিতে তরমুজের চাষাবাদ করেছেন। ফলন খুবই ভাল হয়েছে । মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে তাদের ক্ষেতের তরমুজ বিক্রির উপযোগী হবে। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ না কমলে ক্রেতার অভাবে লোকসান গুনতে হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এদিকে,উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের চরধুলাসার গ্রামের কৃষক মো.মোকলেছুর রহমান জানান,তার এলাকায় বালুমাটি বিধায় ক্ষেতের ফসল আগে-ভাগেই পেকে গেছে। ক্রেতার অভাবে বিক্রি করতে পারছেন না বলে ক্ষেতেই ফেঁটে যাচ্ছে তরমুজ। ধানধালী ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামের তরমুজ চাষী রহমান মুন্সি জানান, ধান চাষের চেয়ে তরমুজ চাষে লাভ বেশী বিধায় এলাকার শতশত কৃষক তরমুজ চাষাবাদ করছেন। তাদের অনেকে ব্যাংক লোন কিংবা বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে বিনিয়োগ করে ফসল উঠার পর তা পরিশোধ করে দেন। এবছর করোনা ভাইরাস তাদের পিছিয়ে দিচ্ছে বলে বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মান্নান জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর ব্যাপক ফলন হলেও বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক। পাকা ফল সময় মত বিক্রি করতে না পারলেও তাতে পচঁন ধরার সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST